লালমনিরহাট জেলায় আমন মৌসুমে ব্যাপক পোকামাকড়ের আক্রমণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। নানা কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না তারা, ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে এবং হতাশা বাড়ছে।
পোকামাকড়ের আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে ফসল
জেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধানের জমিতে পাতামোচড়, কারেন্ট ও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই মৌসুমে জেলায় ৮৬ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি। কিন্তু ধানের শীষ ধরার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় ফলন নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও পরিস্থিতি
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর উপজেলার হারাটি ও গোকুন্ডা ইউনিয়নে, এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলার সারপুকুর, সপ্তিবাড়ি ও ভেলাবাড়ি ইউনিয়নেও ব্যাপক আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন, পোকার হাত থেকে রক্ষা পেতে একাধিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে, যার ফলে প্রতি বিঘায় তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।
দিশেহারা কৃষক ও পরামর্শের অভাব
বীজ, সার ও শ্রমের উচ্চমূল্যের পাশাপাশি এই অতিরিক্ত ব্যয় অনেক কৃষককে দিশেহারা করে তুলেছে। তারা অভিযোগ করেছেন, কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সময়মতো কার্যকর পরামর্শ না পাওয়ায় আন্দাজে ও ট্রায়াল-অ্যান্ড-এরর পদ্ধতিতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। এতে খরচ যেমন বাড়ছে, ফলাফলও আশানুরূপ হচ্ছে না।
কৃষি বিভাগের দাবি
অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) দাবি করেছে, এ বছর জেলায় বড় ধরনের কোনো পোকার আক্রমণ হয়নি। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং কীটনাশক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রমও তদারকির আওতায় আছে।
কৃষকদের দাবি
তবুও কৃষকরা বলছেন, সঠিক ও সময়মতো নির্দেশনা না পেলে তাদের ফসল ও জীবিকা ঝুঁকিতে পড়বে। তারা দাবি করেছেন, কীটনাশক কোম্পানিগুলোর ওপর আরও কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নিন্মমানের বা অকার্যকর পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়।
#
লালমনিরহাট, আমন ধান, পোকামাকড়, কৃষি সমস্যা, কৃষকদের দাবি, সারাক্ষণ রিপোর্ট