বাংলাদেশ সফররত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হয়। এ বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকের মূল আয়োজন
বৈঠকে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেন দলীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন এবং উপদেষ্টা মেজর (অব.) মো. মাহফুজুর রহমান।
আইআরআই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন সংস্থাটির বোর্ড সদস্য ক্রিস্টোফার ফাসনার এবং সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো লিসা কার্টিস।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আবাসিক প্রোগ্রাম পরিচালক স্টিভ সিমা, এনডিআই প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান, পরামর্শক জন ফ্লুহার্টি, ডারিন বিয়েলেকি, অমিতাভ ঘোষ ও সাইদা মুশরেফা জাহান।
আলোচনার বিষয়বস্তু
দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তরণ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন,
“বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠেছে। এই সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ সংকটে পড়েছে, বেকারত্ব বাড়ছে এবং যদি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হয়, তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ভেঙে যাবে। তার আশঙ্কা—“দুর্ভিক্ষ বা গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে।”
শামীম হায়দার পাটোয়ারীর পর্যবেক্ষণ
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন,
“২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের মাধ্যমে যে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা আজ ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের ৫৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র ২৫টি দলকে ঐকমত্য কমিশনে ডাকা হয়েছে। বাকি অর্ধেকেরও বেশি দলকে বাদ দিয়ে সরকার নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন,
“বর্তমান সংবিধানে গণভোটের কোনো বিধান নেই, তাই এখনই গণভোট আয়োজন অসাংবিধানিক হবে। তবে জাতীয় প্রয়োজনে যদি গণভোটের প্রয়োজন হয়, সংসদের অনুমোদন নিয়েই তা করা যেতে পারে।”
বৈঠকটি জাতীয় পার্টি ও আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র বিষয়ক সংস্থাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপ জোরদারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলটির পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে—নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে আগামীর নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।
#জাতীয়_পার্টি #আইআরআই #বাংলাদেশ_রাজনীতি #নির্বাচন #জিএম_কাদের #গণতন্ত্র