১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
বিএনপি, জামায়াতের চোখে বিতর্কিত উপদেষ্টা কারা মোহাম্মদপুরে ভয় ও অনিশ্চয়তার ছায়া—এক বছরে বেড়েছে বোমা বিস্ফোরণ, গ্যাং সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধানের শীষে ভোট দিন’ -তালিমুদ্দিন মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় বিএনপি নেতা কাজী গনি চৌধুরীর বক্তব্য দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিতের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জরুরি—জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ জুলাই সনদকে নির্বাহী আদেশে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান—সালাহউদ্দিনের বক্তব্যে আইনি প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর মেধাভিত্তিক ইনক্রিমেন্ট ফের চালু—যোগ্য কর্মকর্তাদের প্রণোদনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের স্পিন ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিধ্বস্ত—২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল টাইগাররা ভক্তদের জন্য চমক — স্ট্রে কিডসের নতুন অ্যালবাম ‘ডু ইট’ প্রকাশ নভেম্বরেই বাবর আজমের ওপর শেষ আশা, দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনে টালমাটাল পাকিস্তান

বিজ্ঞানীদের সামনে অ্যালঝেইমার প্রতিরোধের নতুন দিগন্ত

৭৬ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক ডগ হুইটনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে এক বিস্ময়। তাঁর শরীরে এমন একটি বিরল জিন মিউটেশন রয়েছে, যা সাধারণত অ্যালঝেইমার রোগকে নিশ্চিত করে দেয়; কিন্তু তিনি এই রোগে আক্রান্ত না হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে আছেন প্রায় ২৫ বছর অতিরিক্ত সময় ধরে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁর শরীরই হয়তো ভবিষ্যতে অ্যালঝেইমার প্রতিরোধের রহস্য ধারণ করছে।

পারিবারিক অভিশাপের বাইরে এক ব্যতিক্রম

ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের পোর্ট অরচার্ডে বসবাসকারী ডগ হুইটনির পরিবারে অ্যালঝেইমার এক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অভিশাপ। তাঁর মা এবং ১৩ ভাইবোনের মধ্যে ৯ জনই এই রোগে মারা গেছেন। বড় ভাইয়েরও একই পরিণতি হয়েছিল। চিকিৎসা নথিতে দেখা যায়, এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরল ‘প্রেসেনিলিন ২’ নামের জিন মিউটেশন বহুলভাবে বিদ্যমান।

এই মিউটেশন ১৮ শতকের জার্মান অভিবাসীদের মাধ্যমে রাশিয়ার ভলগা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। সাধারণত এই জিনের বাহকরা ৪৪ থেকে ৫৩ বছর বয়সে স্মৃতিশক্তি হারাতে শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন।

কিন্তু ডগ হুইটনির ক্ষেত্রে সেটি ঘটেনি। ৫০ বছর পার হলেও তাঁর কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। ৫৫ বছর বয়সে, যখন তাঁর মা ও ভাই মারা গিয়েছিলেন, তখনও তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। পরিবার ভেবেছিল, হয়তো তিনি ভাগ্যবান। কিন্তু ৬২ বছর বয়সে জিন পরীক্ষায় জানা গেল, তাঁর শরীরেও রয়েছে সেই একই ‘মারণ জিন’।

“আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম,” বলেন হুইটনি। “আমার অনেক আগেই অসুস্থ হওয়ার কথা ছিল।”

গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু: এক ‘অ্যালঝেইমার এস্কেপি’

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের নিউরোলজিস্ট ড. র‌্যান্ডাল বেটম্যান এবং তাঁর গবেষণা দল ১৪ বছর ধরে হুইটনির ওপর নিবিড় গবেষণা চালাচ্ছেন। তাঁরা হুইটনিকে বলছেন “অ্যালঝেইমার এস্কেপি”—অর্থাৎ, এমন ব্যক্তি যিনি জিনগতভাবে রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনকভাবে তা এড়িয়ে গেছেন।

বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এমন মাত্র তিনজন মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা এইভাবে ‘জেনেটিক ডেস্টিনি’ থেকে পালাতে পেরেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন কলম্বিয়ার একটি বৃহৎ পরিবারের সদস্য ছিলেন, যাঁদের শরীরে ছিল ‘প্রেসেনিলিন ১’ মিউটেশন।

এই তিনজনের মস্তিষ্কে এক অদ্ভুত মিল পাওয়া গেছে—তাঁদের মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড প্রোটিন প্রচুর জমেছে, কিন্তু টাউ প্রোটিন, যা স্মৃতিভ্রংশ ঘটায়, সেটি খুবই কম।

অ্যালঝেইমারের রহস্য: অ্যামাইলয়েড বনাম টাউ

অ্যালঝেইমার রোগ সাধারণত দুই প্রোটিনের অস্বাভাবিক জমাট বাঁধার কারণে হয়—অ্যামাইলয়েড এবং টাউ। প্রথমটি মস্তিষ্কে ২০ বছর আগেই জমা হতে শুরু করে—আর দ্বিতীয়টি সরাসরি স্মৃতিশক্তি নষ্টের সঙ্গে যুক্ত।

গবেষণায় দেখা গেছে, হুইটনির মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, কিন্তু টাউ জমেছে অতি সামান্য। এ কারণেই হয়তো তিনি এখনো মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। তাঁর মস্তিষ্কে টাউ জমেছে শুধু একটিমাত্র অঞ্চলে—বাম অক্সিপিটাল লোবে, যা দৃষ্টিজনিত কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই “অ্যামাইলয়েড-টাউ বিচ্ছিন্নতা” বোঝা গেলে অ্যালঝেইমারের চিকিৎসায় নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে।

জিন, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও তাপপ্রতিরোধের আশ্চর্য সমন্বয়

হুইটনির শরীরে এমন কিছু জিন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, যা তাঁর আক্রান্ত আত্মীয়দের শরীরে অনুপস্থিত ছিল। বিশেষ করে তিনটি মিউটেশন নিউরো-ইনফ্ল্যামেশন বা টাউ প্রোটিনের গঠন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তাঁর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্যদের তুলনায় অনেক স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা মনে করছেন, অতিরিক্ত প্রদাহ না হওয়ার কারণেই তাঁর মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড জমা থাকলেও তা ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে না, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হলো—তাঁর শরীরে ‘হিট শক প্রোটিন’-এর মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এই প্রোটিনগুলো অন্যান্য প্রোটিনকে ভুলভাবে ভাঁজ বা বিকৃত হওয়া থেকে রক্ষা করে, যা সাধারণত স্নায়ুরোগের সঙ্গে যুক্ত।

A portrait of Mr. and Mrs. Whitney, posing at a large window, with Mrs. Whitney wearing a purple blouse and Mr. Whitney and blue shirt.

নৌবাহিনীতে এক দশক কাজ করার সময় হুইটনি প্রায়ই ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার ইঞ্জিন রুমে দায়িত্ব পালন করতেন। গবেষকরা মনে করছেন, সেই তীব্র তাপমাত্রার পরিবেশ হয়তো তাঁর শরীরে এই প্রোটিন উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছিল, যা পরবর্তীতে তাঁকে সুরক্ষা দিয়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের সামনে এক নতুন সম্ভাবনা

ড. বেটম্যান বলেন, “আমরা এখনো জানি না ঠিক কীভাবে ডগ হুইটনি এই রোগ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে তাঁর শরীরের এই রহস্য উদঘাটন করা গেলে তা কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।”

এই গবেষণাকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন “একটি বৈজ্ঞানিক আহ্বান”—যাতে বিশ্বজুড়ে গবেষকেরা একত্র হয়ে হুইটনির মতো বিরল ক্ষেত্রে আরও গভীর অনুসন্ধান চালান।

অ্যালঝেইমারের পেছনের এই জিনগত ধাঁধা সমাধান হলে ভবিষ্যতে প্রতিষেধক ও জিন থেরাপি উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে—যা হয়তো একদিন এই রোগের অবসান ঘটাবে।

ডগ হুইটনি এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ। প্রতিদিন গাড়ি চালান, বই পড়েন এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর শরীর যেন এক জীবন্ত গবেষণাগার — যেখানে অ্যালঝেইমারের অন্ধকার থেকে মুক্তির সম্ভাব্য উত্তর লুকিয়ে আছে।

#অ্যালঝেইমার,# জিনগত গবেষণা,# স্নায়ুরোগ,# যুক্তরাষ্ট্র,# চিকিৎসা উদ্ভাবন, #সারাক্ষণ রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি, জামায়াতের চোখে বিতর্কিত উপদেষ্টা কারা

বিজ্ঞানীদের সামনে অ্যালঝেইমার প্রতিরোধের নতুন দিগন্ত

০৫:৩১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

৭৬ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক ডগ হুইটনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে এক বিস্ময়। তাঁর শরীরে এমন একটি বিরল জিন মিউটেশন রয়েছে, যা সাধারণত অ্যালঝেইমার রোগকে নিশ্চিত করে দেয়; কিন্তু তিনি এই রোগে আক্রান্ত না হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে আছেন প্রায় ২৫ বছর অতিরিক্ত সময় ধরে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁর শরীরই হয়তো ভবিষ্যতে অ্যালঝেইমার প্রতিরোধের রহস্য ধারণ করছে।

পারিবারিক অভিশাপের বাইরে এক ব্যতিক্রম

ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের পোর্ট অরচার্ডে বসবাসকারী ডগ হুইটনির পরিবারে অ্যালঝেইমার এক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অভিশাপ। তাঁর মা এবং ১৩ ভাইবোনের মধ্যে ৯ জনই এই রোগে মারা গেছেন। বড় ভাইয়েরও একই পরিণতি হয়েছিল। চিকিৎসা নথিতে দেখা যায়, এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরল ‘প্রেসেনিলিন ২’ নামের জিন মিউটেশন বহুলভাবে বিদ্যমান।

এই মিউটেশন ১৮ শতকের জার্মান অভিবাসীদের মাধ্যমে রাশিয়ার ভলগা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। সাধারণত এই জিনের বাহকরা ৪৪ থেকে ৫৩ বছর বয়সে স্মৃতিশক্তি হারাতে শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন।

কিন্তু ডগ হুইটনির ক্ষেত্রে সেটি ঘটেনি। ৫০ বছর পার হলেও তাঁর কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। ৫৫ বছর বয়সে, যখন তাঁর মা ও ভাই মারা গিয়েছিলেন, তখনও তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। পরিবার ভেবেছিল, হয়তো তিনি ভাগ্যবান। কিন্তু ৬২ বছর বয়সে জিন পরীক্ষায় জানা গেল, তাঁর শরীরেও রয়েছে সেই একই ‘মারণ জিন’।

“আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম,” বলেন হুইটনি। “আমার অনেক আগেই অসুস্থ হওয়ার কথা ছিল।”

গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু: এক ‘অ্যালঝেইমার এস্কেপি’

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের নিউরোলজিস্ট ড. র‌্যান্ডাল বেটম্যান এবং তাঁর গবেষণা দল ১৪ বছর ধরে হুইটনির ওপর নিবিড় গবেষণা চালাচ্ছেন। তাঁরা হুইটনিকে বলছেন “অ্যালঝেইমার এস্কেপি”—অর্থাৎ, এমন ব্যক্তি যিনি জিনগতভাবে রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনকভাবে তা এড়িয়ে গেছেন।

বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এমন মাত্র তিনজন মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা এইভাবে ‘জেনেটিক ডেস্টিনি’ থেকে পালাতে পেরেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন কলম্বিয়ার একটি বৃহৎ পরিবারের সদস্য ছিলেন, যাঁদের শরীরে ছিল ‘প্রেসেনিলিন ১’ মিউটেশন।

এই তিনজনের মস্তিষ্কে এক অদ্ভুত মিল পাওয়া গেছে—তাঁদের মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড প্রোটিন প্রচুর জমেছে, কিন্তু টাউ প্রোটিন, যা স্মৃতিভ্রংশ ঘটায়, সেটি খুবই কম।

অ্যালঝেইমারের রহস্য: অ্যামাইলয়েড বনাম টাউ

অ্যালঝেইমার রোগ সাধারণত দুই প্রোটিনের অস্বাভাবিক জমাট বাঁধার কারণে হয়—অ্যামাইলয়েড এবং টাউ। প্রথমটি মস্তিষ্কে ২০ বছর আগেই জমা হতে শুরু করে—আর দ্বিতীয়টি সরাসরি স্মৃতিশক্তি নষ্টের সঙ্গে যুক্ত।

গবেষণায় দেখা গেছে, হুইটনির মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, কিন্তু টাউ জমেছে অতি সামান্য। এ কারণেই হয়তো তিনি এখনো মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। তাঁর মস্তিষ্কে টাউ জমেছে শুধু একটিমাত্র অঞ্চলে—বাম অক্সিপিটাল লোবে, যা দৃষ্টিজনিত কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই “অ্যামাইলয়েড-টাউ বিচ্ছিন্নতা” বোঝা গেলে অ্যালঝেইমারের চিকিৎসায় নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে।

জিন, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও তাপপ্রতিরোধের আশ্চর্য সমন্বয়

হুইটনির শরীরে এমন কিছু জিন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, যা তাঁর আক্রান্ত আত্মীয়দের শরীরে অনুপস্থিত ছিল। বিশেষ করে তিনটি মিউটেশন নিউরো-ইনফ্ল্যামেশন বা টাউ প্রোটিনের গঠন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তাঁর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্যদের তুলনায় অনেক স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা মনে করছেন, অতিরিক্ত প্রদাহ না হওয়ার কারণেই তাঁর মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড জমা থাকলেও তা ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে না, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হলো—তাঁর শরীরে ‘হিট শক প্রোটিন’-এর মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এই প্রোটিনগুলো অন্যান্য প্রোটিনকে ভুলভাবে ভাঁজ বা বিকৃত হওয়া থেকে রক্ষা করে, যা সাধারণত স্নায়ুরোগের সঙ্গে যুক্ত।

A portrait of Mr. and Mrs. Whitney, posing at a large window, with Mrs. Whitney wearing a purple blouse and Mr. Whitney and blue shirt.

নৌবাহিনীতে এক দশক কাজ করার সময় হুইটনি প্রায়ই ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার ইঞ্জিন রুমে দায়িত্ব পালন করতেন। গবেষকরা মনে করছেন, সেই তীব্র তাপমাত্রার পরিবেশ হয়তো তাঁর শরীরে এই প্রোটিন উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছিল, যা পরবর্তীতে তাঁকে সুরক্ষা দিয়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের সামনে এক নতুন সম্ভাবনা

ড. বেটম্যান বলেন, “আমরা এখনো জানি না ঠিক কীভাবে ডগ হুইটনি এই রোগ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে তাঁর শরীরের এই রহস্য উদঘাটন করা গেলে তা কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।”

এই গবেষণাকে তিনি আখ্যা দিয়েছেন “একটি বৈজ্ঞানিক আহ্বান”—যাতে বিশ্বজুড়ে গবেষকেরা একত্র হয়ে হুইটনির মতো বিরল ক্ষেত্রে আরও গভীর অনুসন্ধান চালান।

অ্যালঝেইমারের পেছনের এই জিনগত ধাঁধা সমাধান হলে ভবিষ্যতে প্রতিষেধক ও জিন থেরাপি উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে—যা হয়তো একদিন এই রোগের অবসান ঘটাবে।

ডগ হুইটনি এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ। প্রতিদিন গাড়ি চালান, বই পড়েন এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর শরীর যেন এক জীবন্ত গবেষণাগার — যেখানে অ্যালঝেইমারের অন্ধকার থেকে মুক্তির সম্ভাব্য উত্তর লুকিয়ে আছে।

#অ্যালঝেইমার,# জিনগত গবেষণা,# স্নায়ুরোগ,# যুক্তরাষ্ট্র,# চিকিৎসা উদ্ভাবন, #সারাক্ষণ রিপোর্ট