০৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
কানাডার সাবমেরিন ক্রয় : দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপের মধ্যে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ভারসাম্যের কঠিন নির্বাচনে কানাডা নিসানের নতুন ব্যাটারি— বৈদ্যুতিক যানবাহনে নতুন যুগের সূচনা চীনে বেইজিউ বাজারে নতুন মোড়—অর্থনৈতিক মন্দা ও কঠোরতা নীতিতে নিম্ন-অ্যালকোহল পানীয়ের দিকে ঝোঁক জাপানে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে এলো—ট্রাম্প ও তাকাইচির নীতি প্রভাব ফেলছে অর্থনীতিতে চিকিৎসকের চেম্বারে নিজের পক্ষেই কণ্ঠ তুলুন—নারীর স্বাস্থ্যে আত্মবিশ্বাস ও প্রস্তুতির গুরুত্ব স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব—বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বেঁচে থাকার নতুন আশা নারী বন্ধুত্ব কেবল বিপ্লব নয়, বিবর্তনের গল্প —সংগ্রাম, সমর্থন ও আত্মচেতনার সংযোগ বিজ্ঞান বলছে, এই সুগন্ধগুলো সবার মন জয় করবে ভারসাম্য, শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের বিজ্ঞান—হ্যান্ডস্ট্যান্ড আয়ত্ত করার কৌশল টেইলর সুইফটের ‘অ্যাকুস্টিক ভল্ট’: স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি, এখন সেটাই হবে অফিসিয়াল রিলিজ

বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের প্রত্যাবর্তন—দীর্ঘ সংগ্রামের পর শক্ত অবস্থানে বেইজিং

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের উত্তেজনা

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় সাক্ষাৎ করার কথা থাকলেও তা আদৌ হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, যোগাযোগ হচ্ছে খুব সীমিতভাবে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি প্রযুক্তি রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ও শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে; অন্যদিকে চীন পাল্টা দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা এবং বিরল মাটির উপাদান (রেয়ার আর্থ) রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে।

হোয়াইট হাউস মনে করছে, এই “সহনশীলতার লড়াই”-এ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শক্তিশালী। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, “চীন দুর্বল।” কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন এখন কার্যত এই বাণিজ্যযুদ্ধে এগিয়ে। দেশটি পাল্টা পদক্ষেপে দক্ষ হয়ে উঠেছে এবং নিজস্ব বাণিজ্য-নিয়ম প্রবর্তনের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিচ্ছে।

ট্রাম্পের ‘চাপ’ কৌশল ও চীনের পাল্টা অবস্থান

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প প্রশাসনের চীননীতি ছিল একধরনের দ্ব্যর্থক—সামরিকভাবে তাইওয়ান বা মিত্রদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কতটা প্রস্তুত, তা স্পষ্ট নয়। তবে বাণিজ্যে ট্রাম্পের অবস্থান ছিল কঠোর: নতুন শুল্ক, প্রযুক্তি বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ, ও নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার—সব মিলিয়ে চীনের উৎপাদনশক্তিকে দুর্বল করা এবং বাণিজ্যিক ছাড় আদায়ই ছিল লক্ষ্য।

Trump says Taiwan should pay the US for its defence as 'it doesn't give us  anything' | Taiwan | The Guardian

তবু ছয় মাস পর দেখা যাচ্ছে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তিতে। তিনটি কারণে—

(১) চীন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সহ্য করতে পারছে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় “এস্কেলেটরি ডমিন্যান্স” দেখাচ্ছে,

(২) নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য-নিয়ম তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, এবং

(৩) অভ্যন্তরীণভাবে শি জিনপিং ও কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।

“এস্কেলেটরি ডমিন্যান্স”-এর উদাহরণ

এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের “লিবারেশন ডে” শুল্ক আরোপের পর ওয়াল স্ট্রিট ধসে পড়লে তিনি বাধ্য হন তা প্রত্যাহার করতে। পরবর্তীতে চীন যখন বিরল মাটির রপ্তানি সীমিত করে, ট্রাম্প শতভাগ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন, কিন্তু সেখানেও পিছিয়ে আসেন। বাস্তবে চীনকে সম্পূর্ণ বয়কট করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও ক্ষতিকর।

চীনের শেয়ারবাজার এ বছর ডলারে ৩৪ শতাংশ বেড়েছে, যা এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচকের বৃদ্ধির দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে চীনা কনটেইনার জাহাজে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে, চীন পাল্টা তার নিজের বন্দরে মার্কিন পণ্যে ফি বাড়িয়েছে। এছাড়া ডু পন্ট, গুগল, এনভিডিয়া ও কোয়ালকমের মতো মার্কিন কোম্পানির ওপর প্রতিযোগিতাবিরোধী তদন্তের হুমকি দিয়েছে।

সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ ছিল আমেরিকান সয়াবিন কেনা বন্ধ করা—যা ২০২৪ সালে ছিল ১২ বিলিয়ন ডলারের বাজার। এতে মধ্য-পশ্চিমের কৃষক ভোটব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ট্রাম্পের জন্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

South-East Asia is being swamped with Chinese goods

চীনের নতুন বাণিজ্য-নিয়ম: এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার আভাস

বাণিজ্যযুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপে চীন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন এক বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা গড়ে তুলছে। একদিকে এটি ট্রাম্পের “শুল্ক সাম্রাজ্য”-এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, অন্যদিকে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর জন্য নতুন দিকনির্দেশ।

চীনের পণ্যের রপ্তানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ২৭ শতাংশ কমেছে। বিরল মাটির রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে চীন শুধু পশ্চিমা সরবরাহ শৃঙ্খলকে আতঙ্কিত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং বিশ্বে এক ধরনের “গ্লোবাল লাইসেন্সিং সিস্টেম” চালুর দিকেও এগোচ্ছে। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর নিয়ন্ত্রণনীতির একটি আরও কঠোর সংস্করণ।

এখন চীন ৭০টিরও বেশি দেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। তাই তারা যখন নিয়ম পাল্টায়, তা বৈশ্বিক অর্থনীতির কাঠামোতেও প্রভাব ফেলে।

অভ্যন্তরীণভাবে শি জিনপিংয়ের শক্তি বৃদ্ধি

চীনের সম্পত্তি খাতের সংকট, দুর্বল ভোক্তা ব্যয়, ও বিনিয়োগের ভারসাম্যহীনতা থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্পের “চাপনীতি” আসলে শি জিনপিংয়ের ১২ বছরের “টেকনো-ন্যাশনালিস্ট” প্রকল্পকে আরও বৈধতা দিয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এখন নতুন পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় এই প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পনীতিকেই আরও জোরদার করতে যাচ্ছে।

Trump Xi meeting: An A-Z of the big issues - BBC News

সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকি

তবে সবকিছু চীনের অনুকূলে নয়। যুক্তরাষ্ট্র এড়াতে রপ্তানির দিক বদল করলে নতুন বাজারগুলোও পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে। তাছাড়া বৈশ্বিক লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া নিজেই এক প্রশাসনিক জট তৈরি করতে পারে। অর্থনৈতিক শক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি দুই দিকেই, কারণ এতে অন্যান্য দেশগুলো বিকল্প খুঁজতে ও উদ্ভাবনে উৎসাহিত হয়।

সম্ভাব্য সমঝোতা ও ভবিষ্যৎ চিত্র

যদি দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প ও শি অবশেষে সাক্ষাৎ করেন, তবে তা হবে প্রতীকী এক ‘শান্তির নাটক’। হয়তো কিছু সময়ের জন্য শুল্ক আরোপ ও বিরল মাটি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখা হতে পারে, সঙ্গে যুক্ত হতে পারে কিছু সয়াবিন ক্রয় ও টিকটক বিক্রির অনুমোদন।

তবে বৃহত্তর ছবিটা স্পষ্ট—দুই পরাশক্তির এই অর্থনৈতিক সংঘাত কোনো সহযোগিতার দিকে নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্যের অস্ত্রায়নের দিকেই এগোচ্ছে। চীন হয়তো এখন বাণিজ্যযুদ্ধে এগিয়ে। কিন্তু উন্মুক্ত বাণিজ্য থেকে সরে আসা শেষ পর্যন্ত সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কানাডার সাবমেরিন ক্রয় : দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপের মধ্যে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ভারসাম্যের কঠিন নির্বাচনে কানাডা

বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের প্রত্যাবর্তন—দীর্ঘ সংগ্রামের পর শক্ত অবস্থানে বেইজিং

০২:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের উত্তেজনা

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিং আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় সাক্ষাৎ করার কথা থাকলেও তা আদৌ হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, যোগাযোগ হচ্ছে খুব সীমিতভাবে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি প্রযুক্তি রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ও শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে; অন্যদিকে চীন পাল্টা দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা এবং বিরল মাটির উপাদান (রেয়ার আর্থ) রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে।

হোয়াইট হাউস মনে করছে, এই “সহনশীলতার লড়াই”-এ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শক্তিশালী। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেছেন, “চীন দুর্বল।” কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন এখন কার্যত এই বাণিজ্যযুদ্ধে এগিয়ে। দেশটি পাল্টা পদক্ষেপে দক্ষ হয়ে উঠেছে এবং নিজস্ব বাণিজ্য-নিয়ম প্রবর্তনের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিচ্ছে।

ট্রাম্পের ‘চাপ’ কৌশল ও চীনের পাল্টা অবস্থান

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প প্রশাসনের চীননীতি ছিল একধরনের দ্ব্যর্থক—সামরিকভাবে তাইওয়ান বা মিত্রদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কতটা প্রস্তুত, তা স্পষ্ট নয়। তবে বাণিজ্যে ট্রাম্পের অবস্থান ছিল কঠোর: নতুন শুল্ক, প্রযুক্তি বাণিজ্যে নিয়ন্ত্রণ, ও নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার—সব মিলিয়ে চীনের উৎপাদনশক্তিকে দুর্বল করা এবং বাণিজ্যিক ছাড় আদায়ই ছিল লক্ষ্য।

Trump says Taiwan should pay the US for its defence as 'it doesn't give us  anything' | Taiwan | The Guardian

তবু ছয় মাস পর দেখা যাচ্ছে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তিতে। তিনটি কারণে—

(১) চীন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সহ্য করতে পারছে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় “এস্কেলেটরি ডমিন্যান্স” দেখাচ্ছে,

(২) নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য-নিয়ম তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, এবং

(৩) অভ্যন্তরীণভাবে শি জিনপিং ও কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে।

“এস্কেলেটরি ডমিন্যান্স”-এর উদাহরণ

এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের “লিবারেশন ডে” শুল্ক আরোপের পর ওয়াল স্ট্রিট ধসে পড়লে তিনি বাধ্য হন তা প্রত্যাহার করতে। পরবর্তীতে চীন যখন বিরল মাটির রপ্তানি সীমিত করে, ট্রাম্প শতভাগ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন, কিন্তু সেখানেও পিছিয়ে আসেন। বাস্তবে চীনকে সম্পূর্ণ বয়কট করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও ক্ষতিকর।

চীনের শেয়ারবাজার এ বছর ডলারে ৩৪ শতাংশ বেড়েছে, যা এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচকের বৃদ্ধির দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে চীনা কনটেইনার জাহাজে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে, চীন পাল্টা তার নিজের বন্দরে মার্কিন পণ্যে ফি বাড়িয়েছে। এছাড়া ডু পন্ট, গুগল, এনভিডিয়া ও কোয়ালকমের মতো মার্কিন কোম্পানির ওপর প্রতিযোগিতাবিরোধী তদন্তের হুমকি দিয়েছে।

সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ ছিল আমেরিকান সয়াবিন কেনা বন্ধ করা—যা ২০২৪ সালে ছিল ১২ বিলিয়ন ডলারের বাজার। এতে মধ্য-পশ্চিমের কৃষক ভোটব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ট্রাম্পের জন্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

South-East Asia is being swamped with Chinese goods

চীনের নতুন বাণিজ্য-নিয়ম: এক নতুন বিশ্বব্যবস্থার আভাস

বাণিজ্যযুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপে চীন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন এক বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা গড়ে তুলছে। একদিকে এটি ট্রাম্পের “শুল্ক সাম্রাজ্য”-এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, অন্যদিকে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর জন্য নতুন দিকনির্দেশ।

চীনের পণ্যের রপ্তানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ২৭ শতাংশ কমেছে। বিরল মাটির রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে চীন শুধু পশ্চিমা সরবরাহ শৃঙ্খলকে আতঙ্কিত করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং বিশ্বে এক ধরনের “গ্লোবাল লাইসেন্সিং সিস্টেম” চালুর দিকেও এগোচ্ছে। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর নিয়ন্ত্রণনীতির একটি আরও কঠোর সংস্করণ।

এখন চীন ৭০টিরও বেশি দেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। তাই তারা যখন নিয়ম পাল্টায়, তা বৈশ্বিক অর্থনীতির কাঠামোতেও প্রভাব ফেলে।

অভ্যন্তরীণভাবে শি জিনপিংয়ের শক্তি বৃদ্ধি

চীনের সম্পত্তি খাতের সংকট, দুর্বল ভোক্তা ব্যয়, ও বিনিয়োগের ভারসাম্যহীনতা থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্পের “চাপনীতি” আসলে শি জিনপিংয়ের ১২ বছরের “টেকনো-ন্যাশনালিস্ট” প্রকল্পকে আরও বৈধতা দিয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এখন নতুন পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় এই প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পনীতিকেই আরও জোরদার করতে যাচ্ছে।

Trump Xi meeting: An A-Z of the big issues - BBC News

সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকি

তবে সবকিছু চীনের অনুকূলে নয়। যুক্তরাষ্ট্র এড়াতে রপ্তানির দিক বদল করলে নতুন বাজারগুলোও পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে। তাছাড়া বৈশ্বিক লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া নিজেই এক প্রশাসনিক জট তৈরি করতে পারে। অর্থনৈতিক শক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি দুই দিকেই, কারণ এতে অন্যান্য দেশগুলো বিকল্প খুঁজতে ও উদ্ভাবনে উৎসাহিত হয়।

সম্ভাব্য সমঝোতা ও ভবিষ্যৎ চিত্র

যদি দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প ও শি অবশেষে সাক্ষাৎ করেন, তবে তা হবে প্রতীকী এক ‘শান্তির নাটক’। হয়তো কিছু সময়ের জন্য শুল্ক আরোপ ও বিরল মাটি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখা হতে পারে, সঙ্গে যুক্ত হতে পারে কিছু সয়াবিন ক্রয় ও টিকটক বিক্রির অনুমোদন।

তবে বৃহত্তর ছবিটা স্পষ্ট—দুই পরাশক্তির এই অর্থনৈতিক সংঘাত কোনো সহযোগিতার দিকে নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্যের অস্ত্রায়নের দিকেই এগোচ্ছে। চীন হয়তো এখন বাণিজ্যযুদ্ধে এগিয়ে। কিন্তু উন্মুক্ত বাণিজ্য থেকে সরে আসা শেষ পর্যন্ত সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।