বাজারের সারসংক্ষেপ
মঙ্গলবার বৈশ্বিক তেলের বাজারে দাম সামান্য কমেছে। ওপেকের (OPEC) উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আলোচনার আশাবাদকে ছাপিয়ে গেছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়েও ভাবছেন।
ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ সেন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫.৫৯ ডলার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম ৫ সেন্ট কমে ৬১.২৬ ডলার হয়েছে।
ওপেকের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা
ওপেক এবং রাশিয়াসহ তাদের মিত্র দেশগুলো ডিসেম্বর মাসে আরও এক ধাপ উৎপাদন বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে বলে জানা গেছে। সংগঠনের ঘনিষ্ঠ চারটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে বাজার স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদন সীমিত রাখার পর গত এপ্রিলে তারা ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়ানোর পথে এগোতে শুরু করেছে।

এই সম্ভাব্য পদক্ষেপ বাজারে তেলের দামে চাপ সৃষ্টি করছে।
যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আলোচনার প্রভাব
বিশ্বের দুই বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন বাণিজ্য চুক্তির আশা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, ওয়াশিংটন যদি “উচ্চ পর্যায়ের পারস্পরিক যোগাযোগের প্রস্তুতির জন্য” মাঝপথে এগিয়ে আসে, তবে তা দুই দেশের জন্যই ইতিবাচক হবে।
রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ওপর ইউক্রেন যুদ্ধসংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। লক্ষ্যবস্তুতে ছিল রাশিয়ার বৃহৎ তেল কোম্পানি লুকওইল (Lukoil) ও রসনেফট (Rosneft)।
এর পরদিনই লুকওইল ঘোষণা দেয়, তারা তাদের আন্তর্জাতিক সম্পদ বিক্রি করবে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রুশ কোনো কোম্পানির এটিই সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (IEA) নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিইরোল বলেন, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তেলের দাম কিছুটা বাড়াতে পারে, তবে অতিরিক্ত মজুত ও সরবরাহ সক্ষমতার কারণে এর প্রভাব সীমিত থাকবে।

চীনা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হাইতং সিকিউরিটিজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূলত স্বল্পমেয়াদে দেখা যাবে। মধ্যম বা দীর্ঘ মেয়াদে সরবরাহ ঘাটতির সম্ভাবনা খুবই কম, বরং অতিরিক্ত সরবরাহ তেলের দামে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
সার্বিকভাবে, বাজারে যুক্তরাষ্ট্র–চীন আলোচনার আশাবাদ থাকলেও ওপেকের উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব একে ভারসাম্যে রেখেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন, আগামী ডিসেম্বরের ওপেক+ বৈঠকে উৎপাদন নীতিতে কী পরিবর্তন আসে এবং তা বৈশ্বিক তেলের দামে কতটা প্রভাব ফেলে।
# তেলবাজার, #ওপেক,#রাশিয়া,# যুক্তরাষ্ট্র–চীন, #বাণিজ্য,# নিষেধাজ্ঞা, #আন্তর্জাতিক জ্বালানি,# সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















