বন্ধুত্ব ও ব্যক্তিগত সংযোগ
স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট নাতাশা পির্চ মুসার যখন তাঁর দেশে কনিষ্ঠ মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে খোলামেলা স্মৃতিচারণ করেন, তখন মুখে হাসি ছড়িয়ে ওঠে — “মেলানিয়া এখনও আমার ই-মেইল খোলেই সাড়া দেয়,” তিনি জানান।
তিনি মেলানিয়া ট্রাম্পের আইনজীবী ছিলেন, নয় এখন; বর্তমানে তিনি স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান এবং দুই বছর দায়িত্বকালের প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু এমন বন্ধুত্ব এখনও অটুট। মেলানিয়া ট্রাম্পের বুদ্ধি ও সৌম্যভাবকে তিনি ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’কে কিছুটা নরম করার সক্ষমতা হিসেবে দেখে থাকেন।
স্লোভেনিয়া ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল
স্লোভেনিয়া, ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো’তে যুক্ত হয়। তবে জটিল বাল্কান প্রভাব ও ইতালির উত্তর-পূর্ব প্রান্তিক অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মাধ্যমে দেশটি বেশিরভাগ সময় চোখে পড়ে না। জনসংখ্যা মাত্র দুই মিলিয়নেরও কিছু বেশি — যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন শহরের তুলনায় ছোট।
রাশিয়ার সঙ্গে পূর্ববর্তী দেশগুলোর মতো সুগভীর ইতিহাস নেই বললেই চলে, তাই স্লোভেনিয়ায় সন্ত্রাস কিংবা সামরিক অভ্যন্তরীণ হুমকি তুলনামূলকভাবে কম।

যুক্তরাষ্ট্র-বিশ্বাস ও আন্তর্জাতিক আইন
পির্চ মুসার মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র আর পূর্বের মতো মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আন্তর্জাতিক আইনের রক্ষক নেই। তিনি বলেন — “সত্যিকারের বন্ধু একে অপরকে ভুল করলে সমালোচনা করতে পারে।” আইন ও নিয়মবহির্ভূত অবস্থার দিকে ধাবিত হলে ভালো কিছু ঘটে না।
উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের বিচারক বেটি হোহলারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে তিনি একটি বৃহৎ বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।
ইউরোপীয় ঐক্যহীনতা ও দুর্বলতা
পির্চ মুসার বলছেন— “২৭টি সদস্যের সঙ্গে আমরা যে ঐক্যহীনতা দেখাচ্ছি, তা অনেক সমস্যার কারণ হচ্ছে… এর ফলে ইউরোপ দুর্বল হয়ে পড়ছে।” ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মনোবল কমছে, মানবাধিকার বিষয়টি “অ্যাজেন্ডা থেকে সরে যাচ্ছে।”
প্রতিরক্ষা ও ন্যাটো
স্লোভেনিয়া এখনও জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয় পূরণ করেনি, তবে চলতি বছরে তা অর্জন করতে যাচ্ছে। ভয়ঙ্কর সীমান্ত অঞ্চলে না হলেও, দেশটি হাইব্রিড হুমকির মুখোমুখি — সাইবার হামলা, তথ্যপ্রচারণা ও অনিয়মিত অনুপ্রবেশের মতো চ্যালেঞ্জে।
পির্চ মুসার স্পষ্টভাবে জানান— “আমি মন থেকে শান্তিবাদী। আমি চাই রাজনীতিবিদরা বন্দুক নয়, কথা ব্যবহার করুক।”

সিদ্ধান্ত
নাতাশা পির্চ মুসার একদিকে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব ও আন্তর্জাতিক সংযোগের গল্প বলছেন, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় নীতি ও মূল্যবোধ নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর মতে, এক দেশই যদি আইন ও নীতি উপেক্ষা করে, তবে দ্রুত বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে — এবং ইউরোপ আজ সেই সংকটের মুখে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















