০৫:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
সিনেমা নির্মাতা মা মীরা নায়ার আর মামদানির বাংলা সংযোগ বাংলাদেশের পোশাক খাতে গভীর সংকট: রপ্তানি হ্রাস, কারখানা বন্ধ ও কর্মসংস্থানে বড় ধাক্কা নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি কে? এক বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ কৃষি বাণিজ্যে নতুন গতি ফাইজার বনাম নোভো: স্থূলতা-বিরোধী ওষুধের বাজারে আধিপত্যের লড়াই আদালতে গিয়ে গড়াল ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে সুপ্রিম কোর্টের বাধা নেই: সরকার জানাল ‘মেনে নিতে হবে’ ইসরায়েলকে সমর্থন অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা অসম্ভব: খামেনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোরে পালান্টিয়ারের রাজস্ব পূর্বাভাস: বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা ছাড়াল সিএনএন জরিপে ডেমোক্র্যাটদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, ট্রাম্পের অনুমোদন রেটিং সর্বনিম্ন পর্যায়ে গাজার যুদ্ধের বেদনাকে ছবিতে বন্দি করা মোটাজ আজায়িজা, এখন যুক্তরাষ্ট্রে মানবতার আলো খুঁজছেন

এলিজাবেথ টেলরের ১৯৬৬ সালের টিভি বিস্ফোরণ: ভালোবাসা, ক্রোধ ও খ্যাতির এক গল্প

ঝলমলে জুটির বাস্তব জীবনের নাটক

রিচার্ড বার্টন ও এলিজাবেথ টেলরের প্রেম ও বিবাহ ছিল এক বাস্তব জীবনের নাটক, যা সারা বিশ্বে আলোচিত হয়েছিল। ওয়েলশ বংশোদ্ভূত রিচার্ড বার্টনের জন্মের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে এই মাসে। তিনি ছিলেন এক অসাধারণ মেধাবী অভিনেতা, যিনি প্রায়ই নিজের প্রতিভা মদ্যপান ও খারাপ সিদ্ধান্তের আড়ালে ঢেকে ফেলতেন। ১৯৬৬ সালে বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে বার্টনের পক্ষে রুখে দাঁড়িয়ে টেলর এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত সৃষ্টি করেন।

অক্সফোর্ডে ‘ডক্টর ফস্টাস’ ও বিবিসি সাক্ষাৎকারের বিতর্ক

১৯৬৬ সালে তারা দুজনেই সিনেমা থেকে বিরতি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক নাটক “ক্রিস্টোফার মার্লোর ‘ডক্টর ফস্টাস’”-এ অভিনয় করেন। এই নাটক এক ব্যক্তির গল্প, যিনি নিজের আত্মা শয়তানের কাছে বিক্রি করেন। বিবিসির সাক্ষাৎকারে বার্টনকে প্রশ্ন করা হয়—তিনি কি নিজের প্রতিভা “হলিউডের টাকার লোভে বিক্রি করেছেন”?

বার্টন উত্তর দেওয়ার আগেই ক্ষুব্ধ এলিজাবেথ টেলর বলে ওঠেন,
“এটা সম্পূর্ণ বাজে কথা! রিচার্ড মঞ্চ ছেড়ে যাননি, তিনি এখনো অভিনয় করেন!”

বার্টন শান্ত করতে বললেও টেলর থামেননি। তার আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সবাইকে স্তম্ভিত করে দেয়।

সাংবাদিককে টেলরের তীব্র প্রতিক্রিয়া

It offends me to my soul': The story behind Elizabeth Taylor's 1966 TV meltdown

সাক্ষাৎকারটি পরিচালনা করছিলেন ডেইলি মেলের সমালোচক ডেভিড লিউইন, যিনি বিষয়টি আরও খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করেন—সিনেমা কি মঞ্চের চেয়ে কম সৃষ্টিশীল?
এবার টেলর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “আপনি ‘sold out’ শব্দটা বলবেন জানতাম, আর এই কথাটা আমার আত্মাকে আহত করে!”

বার্টন শান্তভাবে বলেন, “আমি কে কী ভাবছে তা নিয়ে মাথা ঘামাই না।”

দরিদ্রতা থেকে তারকাখ্যাতি

রিচার্ড বার্টনের জীবনের গল্প প্রায় এক রূপকথা। ১৯২৫ সালের ১০ নভেম্বর ওয়েলসের দরিদ্র খনি গ্রামের ছেলে রিচার্ড ওয়াল্টার জেনকিনস, জন্ম নেন। বারো ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বাদশ। দুই বছর বয়সে মা মারা যান, আর বাবা প্রায় অনুপস্থিত ছিলেন। বড় বোনের তত্ত্বাবধানে বড় হওয়া এই ছেলেটির প্রতিভা প্রথম চিনতে পারেন শিক্ষক ফিলিপ বার্টন, যিনি পরে তার অভিভাবক হন।

রিচার্ড তাঁর নাম পরিবর্তন করে রিচার্ড বার্টন রাখেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার কিংবদন্তি। ১৯৫১ সালে তিনি শেক্সপিয়ারের নাটকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন, আর ১৯৫২ সালে ‘মাই কাজিন র‍্যাচেল,’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রথম অস্কার মনোনয়ন পান।

ক্লিওপেট্রা ও এক ঝড়ো প্রেম

১৯৬১ সালে ‘ক্লিওপেট্রা’ সিনেমার শুটিং সেটে বার্টনের সঙ্গে দেখা হয় এলিজাবেথ টেলরের। তখন দুজনেই অন্য সম্পর্কে ছিলেন, কিন্তু রোমে শুটিং চলাকালীন তাদের সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক কেলেঙ্কারি ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ভ্যাটিকানও টেলরকে “নৈতিকভাবে বিপথগামী” বলে সমালোচনা করে।

বার্টন পরে বলেন, “আমার জীবন এলিজাবেথ টেলর নামের এক নারীর কারণে বদলে গেছে।”

It offends me to my soul': The story behind Elizabeth Taylor's 1966 TV meltdown

বিলাসবহুল ভালোবাসা ও জনদৃষ্টি

১৯৬৪ সালে তারা বিয়ে করেন। প্রাইভেট জেট, ইয়ট, দামি গয়না—সব মিলিয়ে তারা হয়ে ওঠেন বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত দম্পতি। কেউ কেউ বলেছিলেন, এই বিলাসবহুল জীবন বার্টনের প্রতিভাকে ঢেকে ফেলেছে। বার্টন নিজেই স্বীকার করেছিলেন, “লন্ডনের মঞ্চ ছেড়ে আসার পর আমার শিল্পজীবনের সেই সময়টা খুব আকর্ষণীয় ছিল না।”

তবুও তিনি বলেন, “আমি অভিনয় করি কারণ আমি খ্যাতি পছন্দ করি। কেউ আমার কাজ না দেখলে আমি থেমে যাব।”

এলিজাবেথের কাছ থেকে শেখা চলচ্চিত্রের অভিনয়

বার্টন বিশ্বাস করতেন সিনেমাও এক গভীর শিল্প। টেলরের কাছ থেকেই তিনি শেখেন, পর্দায় মুখ যখন ‘৩৮ ফুট বড় হয়ে দেখা যায়’, তখন সংযম ও সূক্ষ্মতার প্রয়োজন। তিনি বলেন, “এলিজাবেথই বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।”

এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের ঝড়

অক্সফোর্ডের সেই সাক্ষাৎকারের পর দিনলিপিতে বার্টন লিখেছিলেন, সাংবাদিকটি ‘বোকা ও লজ্জাজনক’ আচরণ করেছেন, কিন্তু এলিজাবেথ তাকে সরাসরি মুখে ঝাড়ি দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “এলিজাবেথ তাকে টিভিতেই ধ্বংস করেছিল। তখন আমি ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু পরে সবাই তার সেই ‘বাঘিনীর মতো প্রতিরক্ষা’ দেখে মুগ্ধ হয়েছিল।”

Richard Burton Made Fun of This Part of Elizabeth Taylor's Life: Claim

ভালোবাসা, বিচ্ছেদ ও পুনর্মিলন

বার্টন বলেন, “আমরা দুজনেই প্রবল মেজাজের মানুষ, একে অপর ছাড়া বেশি দিন থাকতে পারি না।” তবুও ১৯৭৪ সালে তারা বিচ্ছেদ করেন। এক বছর পরে আবার বিয়ে করেন, কিন্তু মাত্র চার মাসের মধ্যেই দ্বিতীয়বার বিচ্ছেদ ঘটে।

পরবর্তীতে দুজনেই অন্যজনকে বিয়ে করেন, আবার ১৯৮২ সালে নিজেদের নতুন জীবন শুরু করেন ব্রডওয়েতে ‘প্রাইভেট লাইভস’ নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করে।

সমাপ্তি: এক কিংবদন্তির শেষ অধ্যায়

নাটক শেষ হওয়ার পর বার্টন তাঁর চতুর্থ স্ত্রী স্যালি হে-কে নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ফিরে যান। ১৯৮৪ সালের ৪ আগস্ট রাতে মাথা ব্যথার কথা বলে ঘুমোতে যান এবং আর জাগেননি। বয়স হয়েছিল ৫৮।

এলিজাবেথ টেলর পরবর্তীতে আরও একবার বিয়ে করেন এবং ২০১২ সালে ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

তাদের সম্পর্ক ছিল ভালোবাসা, গর্ব, ক্রোধ ও খ্যাতির এক অগ্নিস্রোত—যা আজও হলিউড ইতিহাসের অন্যতম বিস্ময়কর অধ্যায় হয়ে আছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সিনেমা নির্মাতা মা মীরা নায়ার আর মামদানির বাংলা সংযোগ

এলিজাবেথ টেলরের ১৯৬৬ সালের টিভি বিস্ফোরণ: ভালোবাসা, ক্রোধ ও খ্যাতির এক গল্প

০৩:৫৬:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

ঝলমলে জুটির বাস্তব জীবনের নাটক

রিচার্ড বার্টন ও এলিজাবেথ টেলরের প্রেম ও বিবাহ ছিল এক বাস্তব জীবনের নাটক, যা সারা বিশ্বে আলোচিত হয়েছিল। ওয়েলশ বংশোদ্ভূত রিচার্ড বার্টনের জন্মের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে এই মাসে। তিনি ছিলেন এক অসাধারণ মেধাবী অভিনেতা, যিনি প্রায়ই নিজের প্রতিভা মদ্যপান ও খারাপ সিদ্ধান্তের আড়ালে ঢেকে ফেলতেন। ১৯৬৬ সালে বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে বার্টনের পক্ষে রুখে দাঁড়িয়ে টেলর এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত সৃষ্টি করেন।

অক্সফোর্ডে ‘ডক্টর ফস্টাস’ ও বিবিসি সাক্ষাৎকারের বিতর্ক

১৯৬৬ সালে তারা দুজনেই সিনেমা থেকে বিরতি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এক নাটক “ক্রিস্টোফার মার্লোর ‘ডক্টর ফস্টাস’”-এ অভিনয় করেন। এই নাটক এক ব্যক্তির গল্প, যিনি নিজের আত্মা শয়তানের কাছে বিক্রি করেন। বিবিসির সাক্ষাৎকারে বার্টনকে প্রশ্ন করা হয়—তিনি কি নিজের প্রতিভা “হলিউডের টাকার লোভে বিক্রি করেছেন”?

বার্টন উত্তর দেওয়ার আগেই ক্ষুব্ধ এলিজাবেথ টেলর বলে ওঠেন,
“এটা সম্পূর্ণ বাজে কথা! রিচার্ড মঞ্চ ছেড়ে যাননি, তিনি এখনো অভিনয় করেন!”

বার্টন শান্ত করতে বললেও টেলর থামেননি। তার আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সবাইকে স্তম্ভিত করে দেয়।

সাংবাদিককে টেলরের তীব্র প্রতিক্রিয়া

It offends me to my soul': The story behind Elizabeth Taylor's 1966 TV meltdown

সাক্ষাৎকারটি পরিচালনা করছিলেন ডেইলি মেলের সমালোচক ডেভিড লিউইন, যিনি বিষয়টি আরও খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করেন—সিনেমা কি মঞ্চের চেয়ে কম সৃষ্টিশীল?
এবার টেলর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “আপনি ‘sold out’ শব্দটা বলবেন জানতাম, আর এই কথাটা আমার আত্মাকে আহত করে!”

বার্টন শান্তভাবে বলেন, “আমি কে কী ভাবছে তা নিয়ে মাথা ঘামাই না।”

দরিদ্রতা থেকে তারকাখ্যাতি

রিচার্ড বার্টনের জীবনের গল্প প্রায় এক রূপকথা। ১৯২৫ সালের ১০ নভেম্বর ওয়েলসের দরিদ্র খনি গ্রামের ছেলে রিচার্ড ওয়াল্টার জেনকিনস, জন্ম নেন। বারো ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বাদশ। দুই বছর বয়সে মা মারা যান, আর বাবা প্রায় অনুপস্থিত ছিলেন। বড় বোনের তত্ত্বাবধানে বড় হওয়া এই ছেলেটির প্রতিভা প্রথম চিনতে পারেন শিক্ষক ফিলিপ বার্টন, যিনি পরে তার অভিভাবক হন।

রিচার্ড তাঁর নাম পরিবর্তন করে রিচার্ড বার্টন রাখেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকেই শুরু হয় তার কিংবদন্তি। ১৯৫১ সালে তিনি শেক্সপিয়ারের নাটকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন, আর ১৯৫২ সালে ‘মাই কাজিন র‍্যাচেল,’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রথম অস্কার মনোনয়ন পান।

ক্লিওপেট্রা ও এক ঝড়ো প্রেম

১৯৬১ সালে ‘ক্লিওপেট্রা’ সিনেমার শুটিং সেটে বার্টনের সঙ্গে দেখা হয় এলিজাবেথ টেলরের। তখন দুজনেই অন্য সম্পর্কে ছিলেন, কিন্তু রোমে শুটিং চলাকালীন তাদের সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক কেলেঙ্কারি ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ভ্যাটিকানও টেলরকে “নৈতিকভাবে বিপথগামী” বলে সমালোচনা করে।

বার্টন পরে বলেন, “আমার জীবন এলিজাবেথ টেলর নামের এক নারীর কারণে বদলে গেছে।”

It offends me to my soul': The story behind Elizabeth Taylor's 1966 TV meltdown

বিলাসবহুল ভালোবাসা ও জনদৃষ্টি

১৯৬৪ সালে তারা বিয়ে করেন। প্রাইভেট জেট, ইয়ট, দামি গয়না—সব মিলিয়ে তারা হয়ে ওঠেন বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত দম্পতি। কেউ কেউ বলেছিলেন, এই বিলাসবহুল জীবন বার্টনের প্রতিভাকে ঢেকে ফেলেছে। বার্টন নিজেই স্বীকার করেছিলেন, “লন্ডনের মঞ্চ ছেড়ে আসার পর আমার শিল্পজীবনের সেই সময়টা খুব আকর্ষণীয় ছিল না।”

তবুও তিনি বলেন, “আমি অভিনয় করি কারণ আমি খ্যাতি পছন্দ করি। কেউ আমার কাজ না দেখলে আমি থেমে যাব।”

এলিজাবেথের কাছ থেকে শেখা চলচ্চিত্রের অভিনয়

বার্টন বিশ্বাস করতেন সিনেমাও এক গভীর শিল্প। টেলরের কাছ থেকেই তিনি শেখেন, পর্দায় মুখ যখন ‘৩৮ ফুট বড় হয়ে দেখা যায়’, তখন সংযম ও সূক্ষ্মতার প্রয়োজন। তিনি বলেন, “এলিজাবেথই বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।”

এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের ঝড়

অক্সফোর্ডের সেই সাক্ষাৎকারের পর দিনলিপিতে বার্টন লিখেছিলেন, সাংবাদিকটি ‘বোকা ও লজ্জাজনক’ আচরণ করেছেন, কিন্তু এলিজাবেথ তাকে সরাসরি মুখে ঝাড়ি দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “এলিজাবেথ তাকে টিভিতেই ধ্বংস করেছিল। তখন আমি ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু পরে সবাই তার সেই ‘বাঘিনীর মতো প্রতিরক্ষা’ দেখে মুগ্ধ হয়েছিল।”

Richard Burton Made Fun of This Part of Elizabeth Taylor's Life: Claim

ভালোবাসা, বিচ্ছেদ ও পুনর্মিলন

বার্টন বলেন, “আমরা দুজনেই প্রবল মেজাজের মানুষ, একে অপর ছাড়া বেশি দিন থাকতে পারি না।” তবুও ১৯৭৪ সালে তারা বিচ্ছেদ করেন। এক বছর পরে আবার বিয়ে করেন, কিন্তু মাত্র চার মাসের মধ্যেই দ্বিতীয়বার বিচ্ছেদ ঘটে।

পরবর্তীতে দুজনেই অন্যজনকে বিয়ে করেন, আবার ১৯৮২ সালে নিজেদের নতুন জীবন শুরু করেন ব্রডওয়েতে ‘প্রাইভেট লাইভস’ নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করে।

সমাপ্তি: এক কিংবদন্তির শেষ অধ্যায়

নাটক শেষ হওয়ার পর বার্টন তাঁর চতুর্থ স্ত্রী স্যালি হে-কে নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ফিরে যান। ১৯৮৪ সালের ৪ আগস্ট রাতে মাথা ব্যথার কথা বলে ঘুমোতে যান এবং আর জাগেননি। বয়স হয়েছিল ৫৮।

এলিজাবেথ টেলর পরবর্তীতে আরও একবার বিয়ে করেন এবং ২০১২ সালে ৭৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

তাদের সম্পর্ক ছিল ভালোবাসা, গর্ব, ক্রোধ ও খ্যাতির এক অগ্নিস্রোত—যা আজও হলিউড ইতিহাসের অন্যতম বিস্ময়কর অধ্যায় হয়ে আছে।