১১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
ফরাসি নাগরিকত্বে ক্লুনি পরিবার: গোপনীয়তার নিশ্চয়তায় নতুন ঠিকানা দীর্ঘ পরিকল্পনার ফলেই বিরল খনিজে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য স্কোরলাইনের বাইরে যে ছবিগুলো লিখে দিল ক্রীড়াবর্ষের ইতিহাস রাঙামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু গুলিতে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে চিরকুট, আতঙ্কে ছাত্রনেতা সায়মন জিয়নের পরিবার তারেক রহমান ও জামায়াত আমিরের চেয়েও বেশি নাহিদ ইসলামের বার্ষিক আয় সৌদি হামলায় ফাটল স্পষ্ট: ইয়েমেনে অস্ত্র চালান ঘিরে সৌদি–আমিরাত উত্তেজনা জলবায়ু সাংবাদিকতায় এক অনন্য কণ্ঠের বিদায়: তাতিয়ানা শ্লসবার্গের মৃত্যুতে নীরব হলো পরিবেশের গল্প রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় খালেদা জিয়ার শেষযাত্রা, ভুটানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের শ্রদ্ধা সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে মার্কিন বাহিনীর বড় সাফল্য, নিহত সাত জঙ্গি, আটক আরও বহু

মধ্যবিত্তের নিজস্ব সুপার শপ স্বপ্ন – সাব্বির হাসান নাসির

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • 147

–  ইব্রাহিম নোমান

 

সাব্বির হাসান নাসির। গানের কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংগীতাঙ্গনে সাব্বির নাসির নামে বেশ জনপ্রিয় তিনি। সংগীত রয়েছে পারিবারিকভাবে তাঁর রক্তে। পড়েছেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে । আবার ক্যারিয়ারকে বদলে নিতে আইবিএতেও পড়াশোনা করেছেন। তিনি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সুপারশপ ব্র্যান্ড ‘স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক ।

 

কেনকোটায় ব্যস্ত ক্রেতা 

‘সারাক্ষণের’ সঙ্গে সরাসরি আলাপচারিতায় বলেছেন শুরু থেকে স্বপ্ন’র পথচলার এবং এখন দেশের নাম্বার ওয়ান সুপারশপ হয়ে ওঠার পেছনের গল্প। কীভাবে স্বপ্ন – সুপারশপ মানেই দাম বেশি, এ ধারণা ভেঙে দিয়েছে ।  তার জন্য ক্রেতাদের স্বস্তি ও কৃষকদের ন্যায্য দাম পাওয়ার পথ তৈরি করতে  স্বপ্ন সরাসরি প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে পণ্যের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হয়। কৃষকেরাও খুশি হন। ধীরে ধীরে স্বপ্ন’র বাজার বড় হতে থাকে। বর্তমানে সুপারশপের মধ্যে স্বপ্ন’র পণ্য বিক্রির পরিমাণ ও শাখা সবচেয়ে বেশি। স্বপ্ন’র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানিয়েছেন সাব্বির নাসির।

তার বিস্তারিত সাক্ষাৎকার-

 

কয়েক বছর ধরে স্বপ্ন দেশের নাম্বার ওয়ান চেইন সুপার শপ । এর পথচলা সম্পর্কে জানতে চাই-

 

সাব্বির নাসির: এসিআই গ্রুপ ২০০৮ সালে চিন্তা করলেন তাঁদের যে এগ্রো বিজনেস ইউনিট আছে যার মাধ্যমে কৃষকদের কাছে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান পৌঁছে দেন যেমন- বীজ, সার, ফীড ইত্যাদি, সরাসরি সেই কৃষকদের সাথে যুক্ত হয়ে, তাঁদের থেকে পণ্য  কিনে যদি সাধারণ ভোক্তা থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় তাহলে কেমন হয়। এই ভাবনা থেকেই স্বপ্ন’র পথচলা শুরু। ‘ফ্রেশ এন নিয়ার’ নামে প্রথমে একটি চেইন হিসেবে শুরু হলেও পরে নাম পরিবর্তন করে ‘স্বপ্ন’ নামে ভোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের সঙ্গী হয়।

২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত এক ধরনের লার্নিং কার্ভ পর্যায়ের প্রাথমিক ধাক্কার মধ্য দিয়ে স্বপ্ন চলতে থাকে। এই সময়ে পরপর ৩ জন প্রধান নির্বাহী বদল হয়। তখন শপের সংখ্যা ছিল ৭৩টি। আমি ২০১২ তে দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব শপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ইফেকটিভ (কার্যকরী) ছিল না তার সংখ্যা অনেক কমাই, মানে বন্ধ করে দিই। এক পর্যায়ে শপের সংখ্যা ৩৭ এ  নেমে আসে। স্বপ্নকে সুপারশপ হিসেবে সার্বজনীন বা সবার জন্য কিভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায় সেজন্য কাজ শুরু করি। সেখানে আমরা কৃষকদের সাথে যেমন যোগাযোগ করি তেমনি উৎপাদক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা যাঁরা তাঁদের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরি করি। যার কারণে বাজার থেকে অনেক কম দামে আমরা ভোক্তাদের কাছে পণ্য  পোঁছাতে পারি। এর জন্য আমার টিমের সবাই এক সাথে কাজ করি। অনেক ইনোভেটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা কখনো ভাবেনি যে তারা সুপারশপে বাজার করবে, আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। মধ্যবিত্ত  শ্রেণীর মধ্যে আগে ধারনা ছিল সুপারশপ হচ্ছে উচ্চবিত্তদের জায়গা ।  স্বপ্ন  মধ্যবিত্তের এই ধারনা বদলে দিতে পেরেছে। তাঁরা এখন নিশ্চিন্তে স্বপ্নে বাজার করতে পারেন। এটা আমাদের দেশে আগে কখনো ছিল না।

কারণ সুপারশপ হিসেবে ২০০১- ২০০২ সালের দিকে আগোরা, মিনা বাজার সহ অন্যরা শুরু করলেও মধ্যবিত্তের জন্য সুপারশপ হিসেবে সামনে এসেছে স্বপ্ন। যখন আমরা ক্রেতাদের থেকে খুব গ্রহণযোগ্য সাড়া পাই তখন আমরা আমাদের আউটলেটের সংখ্যা যেমন বাড়াই তেমনি আমাদের স্টোর ডিজাইনেও পরিবর্তন আনি। যেমন- ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে গুলশান-১ , ধানমন্ডি ২৭, ওয়ারী, উত্তরা ৩, উত্তরা ১১, কুমিল্লা, জিন্দাবাজার ইত্যাদি  আউটলেটের ডিজাইন হয় ভিন্ন ধরণের। একই সাথে সার্ভিস সিস্টেমেও আমরা পরিবর্তন আনি। এই দুইয়ের সমন্বয়ে স্বপ্ন এগিয়ে যেতে থাকে ভোক্তাদের সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো- কাস্টমারদের সন্তুষ্টিকে কেন্দ্রে রেখে স্বপ্নকে এগিয়ে নেয়া। তার জন্যই স্বপ্ন আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছে। বড় ব্র্যান্ড হতে পেরেছে।

 

সুপারশপ ব্র্যান্ড ‘স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির

 

স্বপ্নের ফ্রাঞ্চাইজির সাথে কারা যুক্ত আছে?

সাব্বির নাসির : স্বপ্নের ফ্রাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত আছে বলতে যারা ইনভেস্ট করে তারা বিভিন্ন জন। যেমন,  কেউ আছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। কেউ আছেন যারা অন্য ব্যবসা করতেন, কিন্তু তাদের ব্যবসা ভালো চলছিল না, এমন ব্যক্তিরাও স্বপ্নে ইনভেস্ট করেছেন। আবার অনেকের ভাই বা পরিবারের আত্মীয় বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে, তারা সেই টাকা ব্যবসায় ইনভেস্ট করতে চাচ্ছে এমন ব্যক্তিরাও রয়েছেন। চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন, ব্যবসায়ী এবং ফরেন রেমিটেন্স এসেছে মূলত এই তিন শ্রেণীর সমন্বয়ে ইনভেস্ট রয়েছে স্বপ্নে ।

স্বপ্ন এক্সপ্রেস আউটলেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই –

সাব্বির নাসির : স্বপ্ন এক্সপ্রেস শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো বিশ্বে একটি নতুন উদ্ভাবনী সংযোজন। কারণ এটি ঠিক ফ্রাঞ্চাইজি মডেল বলা যাবে না। এটি এমন একটি মডেল সেখানে  যুক্ত আছেন ক্ষুদ্র এবং মাঝারি সাইজের উদ্যোক্তা বা ইনভেস্টর। যারা হয়তো শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করতেন বা হয়তো অন্য কোথাও ইনভেস্ট করেছিলেন, তারা স্বপ্নতে ইনভেসমেন্ট পার্টনার হিসেবে যুক্ত আছেন। অন্য সব জায়গায় কিন্তু ওয়ার্কিং পার্টনার হিসেবে ফ্রাঞ্চাইজি মডেল চলে। কিন্তু এখানে, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল স্বপ্নের, যেমন- স্টক পুরোপুরি স্বপ্ন’র। সব কিছু স্বপ্ন’র তত্ত্বাবধানে চলে।

ইনভেস্টররা শুধু ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ইনভেস্ট করেন। এটি সম্পূর্ণ ইউনিক মডেল। বিশ্বের কোথাও সুপারশপের ফ্রাঞ্চাইজিতে এমন মডেল বা সিস্টেম নেই। এই মডেলে যে গ্রস প্রফিট হয়, আমরা সেটা পার্টনারের সাথে শেয়ার করি।

 

ক্রেতা তাঁর সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন’তে

স্বপ্নে সব সময় ডিসকাউন্টে পণ্য কেনা যায়, কিভাবে এর মান বজায় রাখেন ?

সাব্বির নাসির : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এফএমসিজি প্রোডাক্টে ছাড় দেয়া হয়। আমরা সরাসরি যাঁরা উৎপাদক বা আমদানীকারক, তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে আসি। যেমন- ইউনিলিভার, নেসলে, কোকাকোলা, আইডিসিইত্যাদি-এ ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য  নিয়ে আসি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের পণ্যের প্রচারের জন্য  বা বেশি বিক্রির জন্য আমাদেরকে ছাড় দেয়। আমরা সেটাই ভোক্তাদের মাঝে ডিসকাউন্ট বা ছাড়ে বিক্রি করি।

অন্য সুপারশপের চেয়ে সবচেয়ে বেশি বেশি ছাড় বা ডিসকাউন্ট আপনারা কিভাবে দেন?

সাব্বির নাসির : প্রতিদিন স্বপ্ন’তে প্রায় ১ লাখ ভোক্তা শপিং বা বাজার করে। এত ভোক্তা বা কাস্টমার আর কোনো সুপারশপের নেই। তাই সব ম্যানুফ্যাকচাররা একসাথে এত ভোক্তাদের মন জয় করতে নিজেরাই ছাড় বা ডিসকাউন্ট আমাদের দেয়। আর সেই ছাড় বা ডিসকাউন্ট আমরা সরাসরি ভোক্তাদের দিই।

স্বপ্ন কৃষকের সাথে কিভাবে কাজ করছে?

সাব্বির নাসির : সারাদেশে প্রায় ১৮টি লোকেশন থেকে ১ হাজার ১৯২ জন কৃষকের কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিনি। যাঁরা মাছ চাষী তাদের থেকে আমরা সরাসরি কিনি ৭৪% মাছ। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি আসে প্রায় ৮১% । এছাড়া আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকি, কখন কৃষকদের বিপদে তাদের পাশে থাকা যায়। কৃষকরা যখন বাইরে দাম পায় না, তখন আমরা সঠিক দামে তাদের কাছ থেকে পণ্য বিক্রি করে থাকি। যেমন- কয়েকদিন আগে যখন শসা চাষিরা দাম পাচ্ছিল না, তখন আমরা এগিয়ে যাই । শসা আমরা কৃষকদের থেকে প্রতি কেজি ৫ টাকায় কিনি । অথচ কৃষকরা দাম পাচ্ছিল মাত্র দেড় টাকা। আমরা স্বপ্ন’তে তা বিক্রি করি ১২ -১৫ টাকা কেজিতে। আর বাইরে বাজারে তখন দাম ছিল প্রতি কেজি শসা ৫০- ৬০ টাকা। এভাবেই আমরা কৃষকদের কষ্ট দূর করা থেকে শুরু করে সাধারণ ভোক্তা বা কাস্টমারদের কাছে কম দামে পণ্য বিক্রি করে থাকি।

আমারা মধ্যসত্বভোগীদের হাত থেকে কৃষক এবং সাধারণ গ্রাহকদের রক্ষা করি। কারণ মধ্যসত্বভোগীদের কারণেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়।  আমাদের ওপর আরোপিত (সুপারশপে) ৫% ভ্যাট যদি মওকুফ করে দেয়া হয় তাহলে আমরা আরো অনেক ব্যাপক পরিসরে কৃষকদের ভাগ্য  পরিবর্তনে কাজ করতে পারবো।  আরও বড় পরিবসরে ভোক্তাদেরও আরো কম দামে পণ্য দিতে পারবো। এজন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার।

 

স্বপ্ন’তে কেনাকাটায় ক্রেতা 

স্বপ্ন’র মোট কতটি আউটলেট এখন চলছে?

সাব্বির নাসির : ৬২ জেলায় ৪৭২টি আউটলেট আছে স্বপ্ন’র।

সাম্প্রতিক সময়ে স্বপ্নের বিশেষ অর্জন কি কি ?

সাব্বির নাসির : সুপারশপ ক্যাটাগরিতে টানা ৮ বছর ধরে শীর্ষে রয়েছে স্বপ্ন। পুরো বাংলাদেশের মধ্যে সবধরনের ব্র্যান্ড ক্যাটাগরিতে ৬ নম্বর ব্র্যান্ড হচ্ছে স্বপ্ন। ২০২০ সালে এশিয়ার সেরা মার্কেটিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। ১৮টি দেশের প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করে আমরা এশিয়ার সেরা মার্কেটিয়ার হয়েছি। এছাড়া  রিটেইলার হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে স্বপ্নই শুধু ‘গ্লোবাল গ্যাপ’ স্বীকৃতি  অর্জন করেছে।

আমাদের দেশের নারীরা নিরাপদে,সম্মানজনকভাবে সুশৃঙ্খল পরিবেশে স্বপ্ন’তে বাজার করতে পারেন। তাঁদের জন্য রয়েছে চমৎকার পরিবেশ। ১০ থেকে ১৫ লাখ পরিবার তাঁদের সাধ্যের মধ্যে বাজার করতে পারছেন।  এটাই আমাদের অর্জন। এছাড়া ৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে যাঁরা স্বপ্নে কর্মী হিসেবে রয়েছেন। তাঁরা এখানে কাজের সাথে সাথে পড়াশোনাও করছে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের সাথী হচ্ছে স্বপ্ন। অটিজম বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ, তাঁদের জন্য আমাদের ১০% কোটা রয়েছে। তাঁদেরও কাজের সুযোগ তৈরি করেছে স্বপ্ন। এসব কিছুকেই আমি স্বপ্ন’র অর্জন মনে করি।

স্বপ্নের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি কি ?

সাব্বির নাসির : স্বপ্নের ভবিষ্যত পরিকল্পনা-আরো আউটলেট বাড়ানো। গ্রাহক যেন আরো বেশি স্বাচ্ছন্দে বাজার করতে পারে সেজন্য কাজ করা। সারাদেশে ২-৩ হাজার আউটলেট যেন থাকে স্বপ্নের। মধ্যবিত্ত যেন তাদের সাধ্যের মধ্যে বাজেটের মধ্যে সব বাজার করতে পারেন। কৃষক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি  উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সাথে আরো বেশি সংযোগ তৈরি করতে চাই। কারণ আমাদের পরিকল্পনার মূলই হলো সাধারণ ক্রেতার সাথে প্রান্তিক কৃষক ও উৎপাদকের সাথে সংযোগ তৈরী করা।  এমন একটি ইনক্লুসিভ মডেল তৈরি করতে চাই যেন সেখানে সব শ্রেণী- পেশার, সব ধরণের মানুষ স্বপ্নে কাজ করতে পারে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরাসি নাগরিকত্বে ক্লুনি পরিবার: গোপনীয়তার নিশ্চয়তায় নতুন ঠিকানা

মধ্যবিত্তের নিজস্ব সুপার শপ স্বপ্ন – সাব্বির হাসান নাসির

০৫:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

–  ইব্রাহিম নোমান

 

সাব্বির হাসান নাসির। গানের কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংগীতাঙ্গনে সাব্বির নাসির নামে বেশ জনপ্রিয় তিনি। সংগীত রয়েছে পারিবারিকভাবে তাঁর রক্তে। পড়েছেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে । আবার ক্যারিয়ারকে বদলে নিতে আইবিএতেও পড়াশোনা করেছেন। তিনি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সুপারশপ ব্র্যান্ড ‘স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক ।

 

কেনকোটায় ব্যস্ত ক্রেতা 

‘সারাক্ষণের’ সঙ্গে সরাসরি আলাপচারিতায় বলেছেন শুরু থেকে স্বপ্ন’র পথচলার এবং এখন দেশের নাম্বার ওয়ান সুপারশপ হয়ে ওঠার পেছনের গল্প। কীভাবে স্বপ্ন – সুপারশপ মানেই দাম বেশি, এ ধারণা ভেঙে দিয়েছে ।  তার জন্য ক্রেতাদের স্বস্তি ও কৃষকদের ন্যায্য দাম পাওয়ার পথ তৈরি করতে  স্বপ্ন সরাসরি প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে পণ্যের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হয়। কৃষকেরাও খুশি হন। ধীরে ধীরে স্বপ্ন’র বাজার বড় হতে থাকে। বর্তমানে সুপারশপের মধ্যে স্বপ্ন’র পণ্য বিক্রির পরিমাণ ও শাখা সবচেয়ে বেশি। স্বপ্ন’র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানিয়েছেন সাব্বির নাসির।

তার বিস্তারিত সাক্ষাৎকার-

 

কয়েক বছর ধরে স্বপ্ন দেশের নাম্বার ওয়ান চেইন সুপার শপ । এর পথচলা সম্পর্কে জানতে চাই-

 

সাব্বির নাসির: এসিআই গ্রুপ ২০০৮ সালে চিন্তা করলেন তাঁদের যে এগ্রো বিজনেস ইউনিট আছে যার মাধ্যমে কৃষকদের কাছে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান পৌঁছে দেন যেমন- বীজ, সার, ফীড ইত্যাদি, সরাসরি সেই কৃষকদের সাথে যুক্ত হয়ে, তাঁদের থেকে পণ্য  কিনে যদি সাধারণ ভোক্তা থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় তাহলে কেমন হয়। এই ভাবনা থেকেই স্বপ্ন’র পথচলা শুরু। ‘ফ্রেশ এন নিয়ার’ নামে প্রথমে একটি চেইন হিসেবে শুরু হলেও পরে নাম পরিবর্তন করে ‘স্বপ্ন’ নামে ভোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের সঙ্গী হয়।

২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত এক ধরনের লার্নিং কার্ভ পর্যায়ের প্রাথমিক ধাক্কার মধ্য দিয়ে স্বপ্ন চলতে থাকে। এই সময়ে পরপর ৩ জন প্রধান নির্বাহী বদল হয়। তখন শপের সংখ্যা ছিল ৭৩টি। আমি ২০১২ তে দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব শপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ইফেকটিভ (কার্যকরী) ছিল না তার সংখ্যা অনেক কমাই, মানে বন্ধ করে দিই। এক পর্যায়ে শপের সংখ্যা ৩৭ এ  নেমে আসে। স্বপ্নকে সুপারশপ হিসেবে সার্বজনীন বা সবার জন্য কিভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায় সেজন্য কাজ শুরু করি। সেখানে আমরা কৃষকদের সাথে যেমন যোগাযোগ করি তেমনি উৎপাদক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা যাঁরা তাঁদের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরি করি। যার কারণে বাজার থেকে অনেক কম দামে আমরা ভোক্তাদের কাছে পণ্য  পোঁছাতে পারি। এর জন্য আমার টিমের সবাই এক সাথে কাজ করি। অনেক ইনোভেটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা কখনো ভাবেনি যে তারা সুপারশপে বাজার করবে, আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। মধ্যবিত্ত  শ্রেণীর মধ্যে আগে ধারনা ছিল সুপারশপ হচ্ছে উচ্চবিত্তদের জায়গা ।  স্বপ্ন  মধ্যবিত্তের এই ধারনা বদলে দিতে পেরেছে। তাঁরা এখন নিশ্চিন্তে স্বপ্নে বাজার করতে পারেন। এটা আমাদের দেশে আগে কখনো ছিল না।

কারণ সুপারশপ হিসেবে ২০০১- ২০০২ সালের দিকে আগোরা, মিনা বাজার সহ অন্যরা শুরু করলেও মধ্যবিত্তের জন্য সুপারশপ হিসেবে সামনে এসেছে স্বপ্ন। যখন আমরা ক্রেতাদের থেকে খুব গ্রহণযোগ্য সাড়া পাই তখন আমরা আমাদের আউটলেটের সংখ্যা যেমন বাড়াই তেমনি আমাদের স্টোর ডিজাইনেও পরিবর্তন আনি। যেমন- ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে গুলশান-১ , ধানমন্ডি ২৭, ওয়ারী, উত্তরা ৩, উত্তরা ১১, কুমিল্লা, জিন্দাবাজার ইত্যাদি  আউটলেটের ডিজাইন হয় ভিন্ন ধরণের। একই সাথে সার্ভিস সিস্টেমেও আমরা পরিবর্তন আনি। এই দুইয়ের সমন্বয়ে স্বপ্ন এগিয়ে যেতে থাকে ভোক্তাদের সন্তুষ্টির কথা মাথায় রেখে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো- কাস্টমারদের সন্তুষ্টিকে কেন্দ্রে রেখে স্বপ্নকে এগিয়ে নেয়া। তার জন্যই স্বপ্ন আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছে। বড় ব্র্যান্ড হতে পেরেছে।

 

সুপারশপ ব্র্যান্ড ‘স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির

 

স্বপ্নের ফ্রাঞ্চাইজির সাথে কারা যুক্ত আছে?

সাব্বির নাসির : স্বপ্নের ফ্রাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত আছে বলতে যারা ইনভেস্ট করে তারা বিভিন্ন জন। যেমন,  কেউ আছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। কেউ আছেন যারা অন্য ব্যবসা করতেন, কিন্তু তাদের ব্যবসা ভালো চলছিল না, এমন ব্যক্তিরাও স্বপ্নে ইনভেস্ট করেছেন। আবার অনেকের ভাই বা পরিবারের আত্মীয় বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছে, তারা সেই টাকা ব্যবসায় ইনভেস্ট করতে চাচ্ছে এমন ব্যক্তিরাও রয়েছেন। চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন, ব্যবসায়ী এবং ফরেন রেমিটেন্স এসেছে মূলত এই তিন শ্রেণীর সমন্বয়ে ইনভেস্ট রয়েছে স্বপ্নে ।

স্বপ্ন এক্সপ্রেস আউটলেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই –

সাব্বির নাসির : স্বপ্ন এক্সপ্রেস শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো বিশ্বে একটি নতুন উদ্ভাবনী সংযোজন। কারণ এটি ঠিক ফ্রাঞ্চাইজি মডেল বলা যাবে না। এটি এমন একটি মডেল সেখানে  যুক্ত আছেন ক্ষুদ্র এবং মাঝারি সাইজের উদ্যোক্তা বা ইনভেস্টর। যারা হয়তো শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করতেন বা হয়তো অন্য কোথাও ইনভেস্ট করেছিলেন, তারা স্বপ্নতে ইনভেসমেন্ট পার্টনার হিসেবে যুক্ত আছেন। অন্য সব জায়গায় কিন্তু ওয়ার্কিং পার্টনার হিসেবে ফ্রাঞ্চাইজি মডেল চলে। কিন্তু এখানে, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল স্বপ্নের, যেমন- স্টক পুরোপুরি স্বপ্ন’র। সব কিছু স্বপ্ন’র তত্ত্বাবধানে চলে।

ইনভেস্টররা শুধু ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ইনভেস্ট করেন। এটি সম্পূর্ণ ইউনিক মডেল। বিশ্বের কোথাও সুপারশপের ফ্রাঞ্চাইজিতে এমন মডেল বা সিস্টেম নেই। এই মডেলে যে গ্রস প্রফিট হয়, আমরা সেটা পার্টনারের সাথে শেয়ার করি।

 

ক্রেতা তাঁর সন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন’তে

স্বপ্নে সব সময় ডিসকাউন্টে পণ্য কেনা যায়, কিভাবে এর মান বজায় রাখেন ?

সাব্বির নাসির : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এফএমসিজি প্রোডাক্টে ছাড় দেয়া হয়। আমরা সরাসরি যাঁরা উৎপাদক বা আমদানীকারক, তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে আসি। যেমন- ইউনিলিভার, নেসলে, কোকাকোলা, আইডিসিইত্যাদি-এ ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য  নিয়ে আসি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের পণ্যের প্রচারের জন্য  বা বেশি বিক্রির জন্য আমাদেরকে ছাড় দেয়। আমরা সেটাই ভোক্তাদের মাঝে ডিসকাউন্ট বা ছাড়ে বিক্রি করি।

অন্য সুপারশপের চেয়ে সবচেয়ে বেশি বেশি ছাড় বা ডিসকাউন্ট আপনারা কিভাবে দেন?

সাব্বির নাসির : প্রতিদিন স্বপ্ন’তে প্রায় ১ লাখ ভোক্তা শপিং বা বাজার করে। এত ভোক্তা বা কাস্টমার আর কোনো সুপারশপের নেই। তাই সব ম্যানুফ্যাকচাররা একসাথে এত ভোক্তাদের মন জয় করতে নিজেরাই ছাড় বা ডিসকাউন্ট আমাদের দেয়। আর সেই ছাড় বা ডিসকাউন্ট আমরা সরাসরি ভোক্তাদের দিই।

স্বপ্ন কৃষকের সাথে কিভাবে কাজ করছে?

সাব্বির নাসির : সারাদেশে প্রায় ১৮টি লোকেশন থেকে ১ হাজার ১৯২ জন কৃষকের কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিনি। যাঁরা মাছ চাষী তাদের থেকে আমরা সরাসরি কিনি ৭৪% মাছ। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি আসে প্রায় ৮১% । এছাড়া আমরা সবসময় সচেষ্ট থাকি, কখন কৃষকদের বিপদে তাদের পাশে থাকা যায়। কৃষকরা যখন বাইরে দাম পায় না, তখন আমরা সঠিক দামে তাদের কাছ থেকে পণ্য বিক্রি করে থাকি। যেমন- কয়েকদিন আগে যখন শসা চাষিরা দাম পাচ্ছিল না, তখন আমরা এগিয়ে যাই । শসা আমরা কৃষকদের থেকে প্রতি কেজি ৫ টাকায় কিনি । অথচ কৃষকরা দাম পাচ্ছিল মাত্র দেড় টাকা। আমরা স্বপ্ন’তে তা বিক্রি করি ১২ -১৫ টাকা কেজিতে। আর বাইরে বাজারে তখন দাম ছিল প্রতি কেজি শসা ৫০- ৬০ টাকা। এভাবেই আমরা কৃষকদের কষ্ট দূর করা থেকে শুরু করে সাধারণ ভোক্তা বা কাস্টমারদের কাছে কম দামে পণ্য বিক্রি করে থাকি।

আমারা মধ্যসত্বভোগীদের হাত থেকে কৃষক এবং সাধারণ গ্রাহকদের রক্ষা করি। কারণ মধ্যসত্বভোগীদের কারণেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়।  আমাদের ওপর আরোপিত (সুপারশপে) ৫% ভ্যাট যদি মওকুফ করে দেয়া হয় তাহলে আমরা আরো অনেক ব্যাপক পরিসরে কৃষকদের ভাগ্য  পরিবর্তনে কাজ করতে পারবো।  আরও বড় পরিবসরে ভোক্তাদেরও আরো কম দামে পণ্য দিতে পারবো। এজন্য সরকারের সহযোগিতা দরকার।

 

স্বপ্ন’তে কেনাকাটায় ক্রেতা 

স্বপ্ন’র মোট কতটি আউটলেট এখন চলছে?

সাব্বির নাসির : ৬২ জেলায় ৪৭২টি আউটলেট আছে স্বপ্ন’র।

সাম্প্রতিক সময়ে স্বপ্নের বিশেষ অর্জন কি কি ?

সাব্বির নাসির : সুপারশপ ক্যাটাগরিতে টানা ৮ বছর ধরে শীর্ষে রয়েছে স্বপ্ন। পুরো বাংলাদেশের মধ্যে সবধরনের ব্র্যান্ড ক্যাটাগরিতে ৬ নম্বর ব্র্যান্ড হচ্ছে স্বপ্ন। ২০২০ সালে এশিয়ার সেরা মার্কেটিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। ১৮টি দেশের প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করে আমরা এশিয়ার সেরা মার্কেটিয়ার হয়েছি। এছাড়া  রিটেইলার হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে স্বপ্নই শুধু ‘গ্লোবাল গ্যাপ’ স্বীকৃতি  অর্জন করেছে।

আমাদের দেশের নারীরা নিরাপদে,সম্মানজনকভাবে সুশৃঙ্খল পরিবেশে স্বপ্ন’তে বাজার করতে পারেন। তাঁদের জন্য রয়েছে চমৎকার পরিবেশ। ১০ থেকে ১৫ লাখ পরিবার তাঁদের সাধ্যের মধ্যে বাজার করতে পারছেন।  এটাই আমাদের অর্জন। এছাড়া ৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে যাঁরা স্বপ্নে কর্মী হিসেবে রয়েছেন। তাঁরা এখানে কাজের সাথে সাথে পড়াশোনাও করছে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের সাথী হচ্ছে স্বপ্ন। অটিজম বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ, তাঁদের জন্য আমাদের ১০% কোটা রয়েছে। তাঁদেরও কাজের সুযোগ তৈরি করেছে স্বপ্ন। এসব কিছুকেই আমি স্বপ্ন’র অর্জন মনে করি।

স্বপ্নের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি কি ?

সাব্বির নাসির : স্বপ্নের ভবিষ্যত পরিকল্পনা-আরো আউটলেট বাড়ানো। গ্রাহক যেন আরো বেশি স্বাচ্ছন্দে বাজার করতে পারে সেজন্য কাজ করা। সারাদেশে ২-৩ হাজার আউটলেট যেন থাকে স্বপ্নের। মধ্যবিত্ত যেন তাদের সাধ্যের মধ্যে বাজেটের মধ্যে সব বাজার করতে পারেন। কৃষক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি  উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সাথে আরো বেশি সংযোগ তৈরি করতে চাই। কারণ আমাদের পরিকল্পনার মূলই হলো সাধারণ ক্রেতার সাথে প্রান্তিক কৃষক ও উৎপাদকের সাথে সংযোগ তৈরী করা।  এমন একটি ইনক্লুসিভ মডেল তৈরি করতে চাই যেন সেখানে সব শ্রেণী- পেশার, সব ধরণের মানুষ স্বপ্নে কাজ করতে পারে।