০১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ভূমিকম্পে হেলে পড়া ধামরাইয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙা শুরু

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া চারতলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি নিরাপত্তার স্বার্থে ভাঙার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। শুক্রবারের ভূমিকম্পে ভবনটি আরও কাত হয়ে পড়ায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।


ভূমিকম্পের পর সকাল থেকেই ভাঙার কাজ শুরু

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ চারতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে ভবনটি আংশিক হেলে পড়েছিল। শুক্রবারের ভূমিকম্পে সেটি আরও বেশি হেলে পড়ে।

শনিবার দুপুরে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা এলাকায় অবস্থিত ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পে জিয়াউদ্দিন নামের ব্যক্তির মালিকানাধীন ভবনটি ভাঙতে দেখা যায় শ্রমিকদের।


করিডরের মতো বর্ধিত ভবনটিই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ

ভবন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভিতরে পাশাপাশি দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়। দুই ভবনের মাঝের ১০ ফুট জায়গায় করিডরের মতো আরও একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। এই সঙ্কীর্ণ করিডর দিয়েই পেছনের মূল ভবনে ঢুকতে হতো। করিডরসদৃশ এই অংশটিই পাশের ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে।

ভবনটিতে ঢুকে দেখা যায়, করিডরের তৃতীয় তলার অংশ পাশের ভবনের ওপর হেলে রয়েছে। বারান্দার রেলিংয়ের গাঁথুনি ফেটে গেছে। তবে করিডরের অন্য অংশ বা মূল ভবনের ভেতরে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি চোখে পড়ে না।


জমি বিভাজন, বর্ধিত ভবন ও হেলে পড়ার ইতিহাস

মালিকপক্ষ জানায়, মূল প্লটে ছয়তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি ছিল। পরে সেটি দুটি ভাগে বিক্রি করা হয়। চার শতাংশ জমির এক ভাগে মো. রফিক তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। পেছনের দুই শতাংশ জমি কিনে জিয়াউদ্দিন চারতলা ভবন নির্মাণ করেন।

এ ছাড়া মাঝের সড়কসদৃশ ১০ ফুট চওড়া ও ৪২ ফুট লম্বা জমি কিনে করিডরের মতো বর্ধিত চারতলা ভবন নির্মাণ করেন তিনি। ২০২৪ সালে অংশটি প্রথম হেলে পড়ে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে সেটি পুরোপুরি কাত হয়ে যায়। প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে মালিকপক্ষ।


মালিকপক্ষের বক্তব্য: ‘আতঙ্কে দ্রুত ভাঙার সিদ্ধান্ত’

ভবনমালিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছেলে মোনায়েম বলেন,
‘আগেই এটি ভাঙার পরিকল্পনা ছিল। প্রশাসন যতটা ভাঙতে বলবে, আমরা সেটাই করতাম। তবে গতকাল ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, যেজন্য দ্রুত ভাঙার উদ্যোগ নিই। সকাল থেকে কাজ চলছে—অর্ধেকের বেশি ভাঙা হয়ে গেছে। খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে।’


প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা ও স্থানীয়দের স্বস্তি

ভবনটি হেলে পড়ার সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন ও ভবনমালিক দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন,
‘গতকাল ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর আমরা সেখানে লোক পাঠাই। পরিদর্শনের পর ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে আমরা অবশ্যই দায়িত্বশীল থাকব।’


#ধামরাই #ঢাকা #ভূমিকম্প #ঝুঁকিপূর্ণ_ভবন #ভাঙা #সাভার #বাংলাট্রিবিউন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভূমিকম্পে হেলে পড়া ধামরাইয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙা শুরু

১১:৪৮:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া চারতলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি নিরাপত্তার স্বার্থে ভাঙার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। শুক্রবারের ভূমিকম্পে ভবনটি আরও কাত হয়ে পড়ায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।


ভূমিকম্পের পর সকাল থেকেই ভাঙার কাজ শুরু

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ চারতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে ভবনটি আংশিক হেলে পড়েছিল। শুক্রবারের ভূমিকম্পে সেটি আরও বেশি হেলে পড়ে।

শনিবার দুপুরে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা এলাকায় অবস্থিত ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পে জিয়াউদ্দিন নামের ব্যক্তির মালিকানাধীন ভবনটি ভাঙতে দেখা যায় শ্রমিকদের।


করিডরের মতো বর্ধিত ভবনটিই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ

ভবন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভিতরে পাশাপাশি দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়। দুই ভবনের মাঝের ১০ ফুট জায়গায় করিডরের মতো আরও একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। এই সঙ্কীর্ণ করিডর দিয়েই পেছনের মূল ভবনে ঢুকতে হতো। করিডরসদৃশ এই অংশটিই পাশের ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে।

ভবনটিতে ঢুকে দেখা যায়, করিডরের তৃতীয় তলার অংশ পাশের ভবনের ওপর হেলে রয়েছে। বারান্দার রেলিংয়ের গাঁথুনি ফেটে গেছে। তবে করিডরের অন্য অংশ বা মূল ভবনের ভেতরে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি চোখে পড়ে না।


জমি বিভাজন, বর্ধিত ভবন ও হেলে পড়ার ইতিহাস

মালিকপক্ষ জানায়, মূল প্লটে ছয়তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি ছিল। পরে সেটি দুটি ভাগে বিক্রি করা হয়। চার শতাংশ জমির এক ভাগে মো. রফিক তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। পেছনের দুই শতাংশ জমি কিনে জিয়াউদ্দিন চারতলা ভবন নির্মাণ করেন।

এ ছাড়া মাঝের সড়কসদৃশ ১০ ফুট চওড়া ও ৪২ ফুট লম্বা জমি কিনে করিডরের মতো বর্ধিত চারতলা ভবন নির্মাণ করেন তিনি। ২০২৪ সালে অংশটি প্রথম হেলে পড়ে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে সেটি পুরোপুরি কাত হয়ে যায়। প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে মালিকপক্ষ।


মালিকপক্ষের বক্তব্য: ‘আতঙ্কে দ্রুত ভাঙার সিদ্ধান্ত’

ভবনমালিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছেলে মোনায়েম বলেন,
‘আগেই এটি ভাঙার পরিকল্পনা ছিল। প্রশাসন যতটা ভাঙতে বলবে, আমরা সেটাই করতাম। তবে গতকাল ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, যেজন্য দ্রুত ভাঙার উদ্যোগ নিই। সকাল থেকে কাজ চলছে—অর্ধেকের বেশি ভাঙা হয়ে গেছে। খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে।’


প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা ও স্থানীয়দের স্বস্তি

ভবনটি হেলে পড়ার সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন ও ভবনমালিক দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন,
‘গতকাল ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর আমরা সেখানে লোক পাঠাই। পরিদর্শনের পর ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে আমরা অবশ্যই দায়িত্বশীল থাকব।’


#ধামরাই #ঢাকা #ভূমিকম্প #ঝুঁকিপূর্ণ_ভবন #ভাঙা #সাভার #বাংলাট্রিবিউন