০২:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

একাকীত্বের বিস্তার ও ‘রেন্টাল ফ্যামিলি’: সংযোগ খোঁজার লড়াই

জাপানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত “রেন্টাল পারসন” বা “রেন্টাল ফ্যামিলি”—অর্থাৎ ভাড়া করা বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের মতো সঙ্গী—ধারণাটি বহু মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। এটি যদিও একটি লেনদেনভিত্তিক সেবা, তবুও এর ভেতরে লুকিয়ে থাকে মানুষের গভীর মানসিক চাহিদা: নিঃসঙ্গতা থেকে সাময়িক মুক্তি, কঠিন সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া বা শুধুই এমন একজনকে পাওয়া যে সময় মতো হাজির হবে। এই মানবিক টানাপোড়েনই নতুন আলোকে তুলে ধরেছে চলচ্চিত্র রেন্টাল ফ্যামিলি


চলচ্চিত্রের সারাংশ
বিখ্যাত পরিচালক হিকারি নির্মিত এবং অস্কারজয়ী অভিনেতা ব্রেন্ডান ফ্রেজার অভিনীত ‘রেন্টাল ফ্যামিলি’ প্রথম প্রদর্শিত হয় টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। এরপর এটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার এবং জাপানে মুক্তি পাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

চলচ্চিত্রে ফ্রেজার অভিনয় করেছেন ফিলিপ নামের এক সংগ্রামী আমেরিকান অভিনেতার চরিত্রে, যিনি টোকিওতে এসে “রেন্টাল ফ্যামিলি” নামে এজেন্সিতে চাকরি নেন। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, তার অভিনয় আর বাস্তবতার সীমা কোথায় ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, যখন তিনি ক্লায়েন্টদের জীবনের ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করেন।


মারি ইয়ামামোতো: চরিত্রের গভীরে যাত্রা
ফিল্মে ফিলিপের সহকর্মী আইকো চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাপানি অভিনেত্রী ও লেখক মারি ইয়ামামোতো। ৩৯ বছর বয়সী ইয়ামামোতো বলেন, তিনি এমন চরিত্র পছন্দ করেন যারা মানুষের প্রতি গভীর মমতা দেখায় এবং বাড়তি পথ হাঁটতে রাজি থাকে। তার নিজের জীবনের এক কঠিন সময়ে এই চরিত্রটি তার কাছে আসে—তিনি তখন ব্যক্তিগত শোক সামলাচ্ছিলেন।

তার ভাষায়, “স্ক্রিপ্টটা এত সুন্দর ছিল যে আমার ভিতরটা নাড়িয়ে দিয়েছিল। আমি তখন খুব কাছের একজনকে হারিয়েছিলাম। গল্পটা আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে—আশা আছে, মানুষ আছে যারা সত্যিই তোমাকে ভালোবাসতে পারে।”

অভিনয়ে আসার আগে তিনি টোকিওতে সাংবাদিক ছিলেন। তাই চরিত্র নির্মাণে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা তাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় গড়তে সাহায্য করে।


চরিত্র নির্মাণ: বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি
আইকোকে বাস্তবধর্মী করতে ইয়ামামোতো সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, মানুষজনের অভিজ্ঞতা শুনেছেন এবং সহ-অভিনেতা তাকেহিরো হিরার সাথে একটি বাস্তব রেন্টাল ফ্যামিলি ধরনের প্রতিষ্ঠানেও যান। সেখানে কর্মপদ্ধতি দেখে তারা চলচ্চিত্রের চরিত্র ও দৃশ্যগুলো আরও জীবন্তভাবে ধরতে সক্ষম হন।

শুটিংয়ের পথে তিনি একটি খবর পড়েন যা তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। ছবির এক দৃশ্যে ফিলিপকে ভুয়া বিয়েতে বর সেজে অংশ নিতে হয়—এক তরুণীর সমকামী সম্পর্ক লুকাতে পরিবারের চাপ এড়ানোর জন্য। ঠিক সেদিন তিনি দেখেন, কানাডা দুই জাপানি নারীকে আশ্রয় দিয়েছে, কারণ তারা দেশে সমকামী পরিচয়ের কারণে পরিবার ও চাকরি হারিয়েছিলেন। ইয়ামামোতো বলেন, “খবরটা পড়ে আমি ভীষণ ভেঙে পড়ি। তখনই বুঝলাম কেন এই গল্প আমাদের বলা জরুরি।”


জাপানে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা ও নিঃসঙ্গতার বিস্তার
চলচ্চিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে—মানুষ থেরাপিস্টের কাছে না গিয়ে কেন রেন্টাল ফ্যামিলির কাছে যায়? কোম্পানির বস জানায়, “অনেকেই পারে না। জাপানে এখনো মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিয়ে বড় ধরনের কলঙ্ক রয়ে গেছে।”

ইয়ামামোতোও মনে করেন, জাপানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রগতি হলেও এখনো অনেকে সাহায্য নিতে ভয় পান। “যারা সত্যিই যত্নের প্রয়োজন, তাদের জন্য সহায়তা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়,” তিনি বলেন।

জাপানে একাকীত্ব দ্রুত বাড়ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান গবেষণা সংস্থার মতে—
২০২০ সালে একক ব্যক্তির পরিবার ছিল ৩৮%
২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৪.৩%

সরকারি জরিপে দেখা গেছে, ৩৯% মানুষ মাঝে মাঝে একাকীত্ব অনুভব করেন। এই প্রেক্ষাপটে রেন্টাল ফ্যামিলি সেবা অনেকের জন্য তাত্ক্ষণিক মানবিক সমর্থনের উৎস হয়ে উঠেছে।

ইয়ামামোতো বলেন, “অনেকে এই সেবাকে ঘৃণা করে। কিন্তু আমি ভাবি—একাকীত্বে মানুষ হারিয়ে যাওয়ার চেয়ে এমন একটি জায়গা থাকা ভালো, যেখানে তারা অন্তত কাউকে খুঁজে পাবে। একাকীত্ব সর্বত্র রয়েছে; কেউই পুরোপুরি মুক্ত নয়।”


সংস্কৃতির দ্বন্দ্ব ও নিজের পরিচয় খোঁজা
চলচ্চিত্রে বহিরাগত হওয়া ও একাকীত্বের যে থিম আছে, তা ইয়ামামোটোর ব্যক্তিগত জীবনেও মিলে যায়। তিনি বড় হয়েছেন জাপান ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে—এক সংস্কৃতি থেকে আরেকটিতে যাতায়াত করতে গিয়ে তিনি নিজেকে বহিরাগত মনে করতেন।

তিনি বলেন, “জাপানে বড় হয়েছি, কিন্তু বিদেশে থাকায় আমি বদলে গিয়েছিলাম—আমি বেশি কথা বলতাম, সমালোচনামুখর ছিলাম, যা জাপানের নিয়মমাফিক সমাজে মানানসই নয়। ফলে শিশুকালে খুব মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়েছে।”

যে সময়ে তিনি ভাবতেন পশ্চিমা দেশগুলো সব সমস্যার সমাধান জানে, পরে আমেরিকায় দশ বছর থাকার অভিজ্ঞতা তা ভেঙে দেয়। “প্রতিটি সংস্কৃতির ভালো-মন্দ আছে। কোনো সমস্যার একটাই সমাধান নেই,” তিনি বলেন।


‘রেন্টাল ফ্যামিলি’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়—এটি নিঃসঙ্গতার বিস্তার, মানুষের ভেতরের শূন্যতা এবং সংযোগের তীব্র প্রয়োজনকে তুলে ধরে। সমাজে শ্রুতিহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো কীভাবে বাস্তবতার ভেতর খুব প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে, এই সিনেমা তারই গভীর বার্তা বহন করে।


#রেন্টাল_ফ্যামিলি #জাপান_একাকীত্ব #মারি_ইয়ামামোতো #মানসিক_স্বাস্থ্য #জাপানের_সমাজ

জনপ্রিয় সংবাদ

একাকীত্বের বিস্তার ও ‘রেন্টাল ফ্যামিলি’: সংযোগ খোঁজার লড়াই

১২:২৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

জাপানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত “রেন্টাল পারসন” বা “রেন্টাল ফ্যামিলি”—অর্থাৎ ভাড়া করা বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের মতো সঙ্গী—ধারণাটি বহু মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। এটি যদিও একটি লেনদেনভিত্তিক সেবা, তবুও এর ভেতরে লুকিয়ে থাকে মানুষের গভীর মানসিক চাহিদা: নিঃসঙ্গতা থেকে সাময়িক মুক্তি, কঠিন সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া বা শুধুই এমন একজনকে পাওয়া যে সময় মতো হাজির হবে। এই মানবিক টানাপোড়েনই নতুন আলোকে তুলে ধরেছে চলচ্চিত্র রেন্টাল ফ্যামিলি


চলচ্চিত্রের সারাংশ
বিখ্যাত পরিচালক হিকারি নির্মিত এবং অস্কারজয়ী অভিনেতা ব্রেন্ডান ফ্রেজার অভিনীত ‘রেন্টাল ফ্যামিলি’ প্রথম প্রদর্শিত হয় টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। এরপর এটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার এবং জাপানে মুক্তি পাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

চলচ্চিত্রে ফ্রেজার অভিনয় করেছেন ফিলিপ নামের এক সংগ্রামী আমেরিকান অভিনেতার চরিত্রে, যিনি টোকিওতে এসে “রেন্টাল ফ্যামিলি” নামে এজেন্সিতে চাকরি নেন। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, তার অভিনয় আর বাস্তবতার সীমা কোথায় ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, যখন তিনি ক্লায়েন্টদের জীবনের ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করেন।


মারি ইয়ামামোতো: চরিত্রের গভীরে যাত্রা
ফিল্মে ফিলিপের সহকর্মী আইকো চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাপানি অভিনেত্রী ও লেখক মারি ইয়ামামোতো। ৩৯ বছর বয়সী ইয়ামামোতো বলেন, তিনি এমন চরিত্র পছন্দ করেন যারা মানুষের প্রতি গভীর মমতা দেখায় এবং বাড়তি পথ হাঁটতে রাজি থাকে। তার নিজের জীবনের এক কঠিন সময়ে এই চরিত্রটি তার কাছে আসে—তিনি তখন ব্যক্তিগত শোক সামলাচ্ছিলেন।

তার ভাষায়, “স্ক্রিপ্টটা এত সুন্দর ছিল যে আমার ভিতরটা নাড়িয়ে দিয়েছিল। আমি তখন খুব কাছের একজনকে হারিয়েছিলাম। গল্পটা আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে—আশা আছে, মানুষ আছে যারা সত্যিই তোমাকে ভালোবাসতে পারে।”

অভিনয়ে আসার আগে তিনি টোকিওতে সাংবাদিক ছিলেন। তাই চরিত্র নির্মাণে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা তাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় গড়তে সাহায্য করে।


চরিত্র নির্মাণ: বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি
আইকোকে বাস্তবধর্মী করতে ইয়ামামোতো সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, মানুষজনের অভিজ্ঞতা শুনেছেন এবং সহ-অভিনেতা তাকেহিরো হিরার সাথে একটি বাস্তব রেন্টাল ফ্যামিলি ধরনের প্রতিষ্ঠানেও যান। সেখানে কর্মপদ্ধতি দেখে তারা চলচ্চিত্রের চরিত্র ও দৃশ্যগুলো আরও জীবন্তভাবে ধরতে সক্ষম হন।

শুটিংয়ের পথে তিনি একটি খবর পড়েন যা তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। ছবির এক দৃশ্যে ফিলিপকে ভুয়া বিয়েতে বর সেজে অংশ নিতে হয়—এক তরুণীর সমকামী সম্পর্ক লুকাতে পরিবারের চাপ এড়ানোর জন্য। ঠিক সেদিন তিনি দেখেন, কানাডা দুই জাপানি নারীকে আশ্রয় দিয়েছে, কারণ তারা দেশে সমকামী পরিচয়ের কারণে পরিবার ও চাকরি হারিয়েছিলেন। ইয়ামামোতো বলেন, “খবরটা পড়ে আমি ভীষণ ভেঙে পড়ি। তখনই বুঝলাম কেন এই গল্প আমাদের বলা জরুরি।”


জাপানে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা ও নিঃসঙ্গতার বিস্তার
চলচ্চিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে—মানুষ থেরাপিস্টের কাছে না গিয়ে কেন রেন্টাল ফ্যামিলির কাছে যায়? কোম্পানির বস জানায়, “অনেকেই পারে না। জাপানে এখনো মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিয়ে বড় ধরনের কলঙ্ক রয়ে গেছে।”

ইয়ামামোতোও মনে করেন, জাপানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রগতি হলেও এখনো অনেকে সাহায্য নিতে ভয় পান। “যারা সত্যিই যত্নের প্রয়োজন, তাদের জন্য সহায়তা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়,” তিনি বলেন।

জাপানে একাকীত্ব দ্রুত বাড়ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান গবেষণা সংস্থার মতে—
২০২০ সালে একক ব্যক্তির পরিবার ছিল ৩৮%
২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৪.৩%

সরকারি জরিপে দেখা গেছে, ৩৯% মানুষ মাঝে মাঝে একাকীত্ব অনুভব করেন। এই প্রেক্ষাপটে রেন্টাল ফ্যামিলি সেবা অনেকের জন্য তাত্ক্ষণিক মানবিক সমর্থনের উৎস হয়ে উঠেছে।

ইয়ামামোতো বলেন, “অনেকে এই সেবাকে ঘৃণা করে। কিন্তু আমি ভাবি—একাকীত্বে মানুষ হারিয়ে যাওয়ার চেয়ে এমন একটি জায়গা থাকা ভালো, যেখানে তারা অন্তত কাউকে খুঁজে পাবে। একাকীত্ব সর্বত্র রয়েছে; কেউই পুরোপুরি মুক্ত নয়।”


সংস্কৃতির দ্বন্দ্ব ও নিজের পরিচয় খোঁজা
চলচ্চিত্রে বহিরাগত হওয়া ও একাকীত্বের যে থিম আছে, তা ইয়ামামোটোর ব্যক্তিগত জীবনেও মিলে যায়। তিনি বড় হয়েছেন জাপান ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে—এক সংস্কৃতি থেকে আরেকটিতে যাতায়াত করতে গিয়ে তিনি নিজেকে বহিরাগত মনে করতেন।

তিনি বলেন, “জাপানে বড় হয়েছি, কিন্তু বিদেশে থাকায় আমি বদলে গিয়েছিলাম—আমি বেশি কথা বলতাম, সমালোচনামুখর ছিলাম, যা জাপানের নিয়মমাফিক সমাজে মানানসই নয়। ফলে শিশুকালে খুব মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়েছে।”

যে সময়ে তিনি ভাবতেন পশ্চিমা দেশগুলো সব সমস্যার সমাধান জানে, পরে আমেরিকায় দশ বছর থাকার অভিজ্ঞতা তা ভেঙে দেয়। “প্রতিটি সংস্কৃতির ভালো-মন্দ আছে। কোনো সমস্যার একটাই সমাধান নেই,” তিনি বলেন।


‘রেন্টাল ফ্যামিলি’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়—এটি নিঃসঙ্গতার বিস্তার, মানুষের ভেতরের শূন্যতা এবং সংযোগের তীব্র প্রয়োজনকে তুলে ধরে। সমাজে শ্রুতিহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো কীভাবে বাস্তবতার ভেতর খুব প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে, এই সিনেমা তারই গভীর বার্তা বহন করে।


#রেন্টাল_ফ্যামিলি #জাপান_একাকীত্ব #মারি_ইয়ামামোতো #মানসিক_স্বাস্থ্য #জাপানের_সমাজ