রাজধানী ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে দুজন নাগরিকের মৃত্যু গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানিয়েছে—চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে থানা হেফাজতসহ র্যাব, পিবিআই ও ডিবির হেফাজতে অন্তত ১৫ জন নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। সংস্থাটি বলছে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে এমন মৃত্যু এখন গুরুতর মানবাধিকার সংকটে পরিণত হয়েছে এবং প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত জরুরি।
হেফাজতে মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ আসকের
রাজধানী ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি এসব ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দুই নাগরিকের মৃত্যু—গণমাধ্যমের সূত্রে তথ্য
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে জানা গেছে যে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ডিবি পুলিশের হেফাজতে মুক্তার হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুই নাগরিকের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনায় আসক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
রাষ্ট্রীয় হেফাজতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা
আসক মনে করে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব ও সাংবিধানিক কর্তব্য। এ ধরনের মৃত্যু জাতীয় মানবাধিকার অঙ্গীকার, সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার প্রয়াসে নতুন করে আলোচনা ও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর প্রশ্ন
সংস্থাটি বলছে, রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকা কোনও ব্যক্তির মৃত্যু অত্যন্ত গুরুতর বিষয় এবং এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। একইসঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের মৌলিক নীতির পরিপন্থি, যেখানে হেফাজতে থাকা ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের আইনগত ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
এ বছরই হেফাজতে মৃত্যু ১৫ জন—আসকের তথ্য বিশ্লেষণ
আসকের তথ্য সংরক্ষণ অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা হেফাজতসহ র্যাব, পিবিআই ও ডিবির হেফাজতে অন্তত ১৫ জন নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। এই সংখ্যাটি শুধুই পরিসংখ্যান নয়—এটি দায়িত্বহীনতা, জবাবদিহিতার অভাব ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।
বিচার বিভাগীয় তদন্তই জরুরি: আসক
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্টদের দায় নিরূপণ করে আইনগত জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, যা উপেক্ষিত থাকতে পারে না। পাশাপাশি, ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচারের অধিকার এবং প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করাও অত্যাবশ্যক।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















