টোকিও জানিয়েছে, চীন–রাশিয়ার সাম্প্রতিক যৌথ সামরিক মহড়ার পরপরই জাপানি যুদ্ধবিমান ও মার্কিন পারমাণবিক সক্ষম বি–৫২ বোমারু একসঙ্গে জাপান সাগরের আকাশে টহল দিয়েছে। এ ঘটনাকে দুই মিত্র দেশের কৌশলগত শক্তি প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বার্তা
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দুই দেশ যে কোনো প্রকার বলপ্রয়োগে সীমান্ত বা পরিস্থিতি বদলের প্রচেষ্টা প্রতিরোধে দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। জেএসডিএফ এবং মার্কিন বাহিনী নিজেদের প্রস্তুতি ও সমন্বিত অবস্থানও নিশ্চিত করেছে।
চীন–রাশিয়ার মহড়ার পর প্রথম বড় প্রতিক্রিয়া
দুই মার্কিন বি–৫২ বোমারুর সঙ্গে তিনটি জাপানি এফ–৩৫ এবং তিনটি এফ–১৫ যুদ্ধবিমান উড়ে শক্তি প্রদর্শন করে। গত সপ্তাহে চীনের আঞ্চলিক মহড়া ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ বোমারু উড়ানের পর এটিই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সামরিক উপস্থিতি।
তবে ওয়াশিংটনের এক কর্মকর্তার দাবি, এই উড়ান আগেই নির্ধারিত ছিল। গত মাসেও একই ধরনের যৌথ টহল হয়েছিল, যেখানে মার্কিন বি–১বি বোমারু অংশ নেয়।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া
হোয়াইট হাউস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক বজায় রাখলেও জাপানের সঙ্গে জোট সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই দিকেই স্থিতি বজায় রাখতে চান।
টোকিও–বেইজিং উত্তেজনা
চীন–রাশিয়ার যৌথ বিমান মহড়া এবং আলাদা চীনা বিমানবাহী রণতরীর মহড়ায় জাপান যুদ্ধবিমান পাঠালে টোকিও অভিযোগ করে তাদের বিমানে রাডার লক করা হয়েছিল। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রেরও সমালোচনা কুড়ায়, যদিও ট্রাম্প পূর্ব এশিয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি চান না।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী টাকাইচির বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আগেই উত্তেজনা বেড়েছিল। তিনি বলেছিলেন, তাইওয়ানে চীনা আক্রমণ হলে জাপান সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। তাইওয়ান জাপানের খুব কাছেই হওয়ায় টোকিও এটিকে নিজেদের নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দেখে।
চীনের প্রতিক্রিয়া
বেইজিং বলছে, জাপান অযথা বিষয়টিকে বড় করছে। চীন দাবি করেছে, জাপানের যুদ্ধবিমানই তাদের বিমান চলাচল ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিল। তারা বলছে মহড়াগুলো ছিল বার্ষিক পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা।

দক্ষিণ কোরিয়ায়ও তৎপরতা
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, চীন ও রাশিয়ার বিমান তাদের সনাক্তকরণ এলাকায় ঢুকলে তারাও যুদ্ধবিমান পাঠাতে বাধ্য হয়।
তাইওয়ানের চারপাশে নতুন চাপ
তাইওয়ান দ্বিতীয় দিনের মতো চীনা সামরিক তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা বলছে, ২৭টি চীনা বিমান, যার মধ্যে পারমাণবিক সক্ষম এইচ–৬কে বোমারুও ছিল, যৌথ যুদ্ধ প্রস্তুতি টহলে অংশ নেয়। এ ছাড়া যুদ্ধজাহাজও দ্বীপটির চারপাশে চলাচল করে।
জাপানের নিরাপত্তা উদ্বেগ
জাপানের যৌথ বাহিনীর প্রধান জেনারেল হিরোয়াকি উচিকুরা বলেছেন, চীন–রাশিয়ার উড়ান স্পষ্টভাবেই জাপানের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন। এটি তাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমিও ন্যাটো প্রধানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জাপানের সঙ্গে ফোনালাপে চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড, জাপানের প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দ্বীপাঞ্চলে প্রশিক্ষণ মহড়া নিয়ে আলোচনা করেন।
#যুক্তরাষ্ট্রজাপানউড়ান #জাপানসাগরউত্তেজনা #চীনরাশিয়ামহড়া #তাইওয়ানচাপ #টোকিওওয়াশিংটন #আঞ্চলিকনিরাপত্তা #সামরিকটহল #এশিয়াপ্যাসিফিক #জিওপলিটিক্স #সারাক্ষণ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















