০১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
বিশ্বজুড়ে যৌন সহিংসতায় আক্রান্ত ৮৪ কোটি নারী: নিরাপত্তার প্রশ্নে ব্রাকের ভূমিকা দক্ষিণ চীন সাগরে ভেসে থেকেও বেঁচে ফিরলেন ইন্দোনেশীয় জেলে, দশ দিনের লড়াই শেষে সারাওয়াকে উদ্ধার যুদ্ধের মাঝেও জীবন বাঁচানোর লড়াই: সুদানের হাসপাতালের ভেতরের কঠিন বাস্তবতা বাংলাদেশী, পাকিস্তানীসহ ৪৯ জন আটক মালয়েশিয়ায় রোবটের হাতে সবুজ বিপ্লব, নগর কৃষিতে নতুন দিগন্ত লাগোসের নাচ থামেনি মন্দার মধ্যেও ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় কাঁপছে রাশিয়ার তেল সাম্রাজ্য, বিশ্ব জ্বালানি মানচিত্রে বড় পালাবদলের ইঙ্গিত বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেন বন্ধ করলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার? বিদেশের অফিসেও ভারতীয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয়: প্যারিসে কাজ করা যুবকের ভিডিও ঘিরে তুমুল বিতর্ক সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদি উৎসবে রক্তপাত, বাবা–ছেলের হামলায় নিহত ষোল

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ভোটের আগে আতঙ্ক জনমনে

সমকালের একটি শিরোনাম “৩ দিন পরও ধরা যায়নি প্রধান দুই অভিযুক্তকে”

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় প্রধান দুই সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর হোসেন ওরফে আলমগীর শেখ। তিন দিন কেটে গেলেও প্রধান দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ করে ফেরার পথে বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, হাদিকে গুলি করেন ফয়সাল। আর ঘটনার সময় ফয়সালকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল আলমগীর।

একটি সূত্র বলছে, গুলির ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে তারা। যদিও পুলিশের আনুষ্ঠানিক ভাষ্য, তাদের দেশ ছাড়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পৃথক অভিযানে ছয়জনকে আটকের কথা গতকাল রোববার জানিয়েছে পুলিশ ও র‍্যাব। এর মধ্যে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে আবদুল হান্নান নামের একজনকে র‌্যাব-২ গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রোববার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া মূল অভিযুক্ত ফয়সালের স্বাক্ষর করা কিছু চেকবই, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে র‍্যাব। তারা হলেন– ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম”আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ভোটের আগে আতঙ্ক জনমনে”

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজনৈতিক নেতারাসহ জুলাই যোদ্ধারা। সরকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন হাল। নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। পরিস্থিতি ঠিক করতে এখনই দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।

ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং নাশকতার আশঙ্কার মধ্যে এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে ভাব নেমে এসেছে। তফসিলের পর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তাও কমে গেছে।

সূত্র বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে মাঠপর্যায় থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। গত শনিবার পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে দেশের সব রেঞ্জের ডিআইজি ও মহানগর পুলিশের কমিশনারদের বৈঠকেও এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ এসেছে।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং কোনো প্রার্থী অনিরাপদ বোধ করলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই বৈঠকেও চোরাগোপ্তা হামলা ও জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে ওঠে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, যাতে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিকল্পনা আরও কার্যকর করা যায়। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে”

চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টোয়েন্টি ফুট ইকুইভ্যালেন্ট কনটেইনার (টিইইউ) হ্যান্ডলিং করছে। এ কনটেইনারের ৯৬ শতাংশ পরিবহন হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে। রেলপথ দিয়ে ৩ শতাংশ আর নৌপথ দিয়ে মাত্র ১ শতাংশ কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। দেশের কনটেইনার পরিবহনের প্রধান পথ হলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যথাযথ মানে নেই। চার লেন হলেও সড়কটিতে বর্তমানে সক্ষমতার চেয়ে বেশি যানবাহন চলছে। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে খানাখন্দ। ধীরগতির ও অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য নেই আলাদা লেন। সড়কের পাশে রয়েছে অসংখ্য হাটবাজার ও বাড়িঘর। যানবাহনের বাড়তি চাপ, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহনে সময় লাগছে বেশি। এর প্রভাবে বাড়ছে পণ্যের পরিবহন খরচ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, যানজটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহন ব্যয় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম গতিশীল রাখতে মহাসড়কটি অন্তত আট লেনে উন্নীত করা দরকার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিলেও তা সমীক্ষা পর্যায়েই আটকে আছে। অন্যদিকে ‘দায়িত্বের ‌শেষ সময়ে’ এসে এ মহাসড়ক উন্নয়নে বিনিয়োগের পক্ষপাতী নয় অন্তর্বর্তী সরকারও।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নে গত এক যুগে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ হয়েছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০১৭ সালে সড়কটি দুই থেকে চার লেনে উন্নীত করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নে যে বিনিয়োগ হয়েছে তা প্রয়োজনের চেয়ে কম। বিগত এক যুগে দেশের কম গুরুত্বপূর্ণ করিডোরগুলোতে বিনিয়োগ হয়েছে এর কয়েক গুণ বেশি অর্থ। এই সময়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। ৬ হাজার ১৬৮ কোটি টাকায় চার লেন করা হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে টাঙ্গাইল-রংপুর মহাসড়কে। আরো ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে ঢাকা-সিলেট সড়ক সম্প্রসারণে।

 

মানবজমিনের একটি শিরোন “পাখির চোখ ভোট, ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্বে জোর বিএনপি’র”

ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজের ভাবমূর্তি এবং অবস্থানে লক্ষণীয় পরিবর্তন আনছে বিএনপি। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দীর্ঘ দশকওয়াড়ি জোট ছিন্ন করে উদারতন্ত্রে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক পোশাকে তারা ভোটে যেতে চাইছে। আওয়ামী লীগের ভোটারদের সমর্থন জোগাড়ও তাদের লক্ষ্য।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, আওয়ামী লীগ প্রায় দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে যে ধর্মনিরপেক্ষ উদারতন্ত্রের ছবিটা অন্তত প্রকাশ্যে তুলে ধরেছিল, সেই রাজনৈতিক পরিসরটা বিএনপি নিতে চাইছে। আওয়ামী লীগের আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত নেই। কিন্তু এই দলের আদর্শের প্রতি দেশবাসীর একটি বড় অংশের পক্ষপাত এবং জোরালো সমর্থন রয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে আওয়ামী লীগের দুই প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং জামায়াতের আদর্শগত পার্থক্য বরাবরই প্রকাশ্যে। বিএনপি-র আন্তর্জাতিক নীতির কেন্দ্রে রয়েছে জাতীয়তাবাদ। জামায়াতের কাছে সেটি মুসলিম পরিচয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ কালপর্বে দুই দল একসঙ্গে দেশ শাসন করলেও এই মুহূর্তে বিএনপি-র সঙ্গে জামায়াতের বিভাজন সম্পূর্ণ।

আগামী ২৫ তারিখ ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ের আবেগ জাগিয়ে তুলেছেন দলীয় বৈঠকে। জামায়াতের নাম করেননি, কিন্তু বুঝিয়ে দিতে কসুর করেননি যে জামায়াতে ইসলামীই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। ভোটের জন্য ‘ধর্মকে ভুল ভাবে ব্যবহার করার’ কথা তুলে জামায়াতের সমালোচনাও করেছেন তারেক। বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ‘ধর্মের নামে দেশে বিভাজন’ ঘটানোর বিরোধিতা করেছেন। জোর দিয়ে জানিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য, গণতান্ত্রিক নীতি এবং একাত্তরের ভিতের উপরেই বিএনপি-র রাজনীতি তৈরি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্বজুড়ে যৌন সহিংসতায় আক্রান্ত ৮৪ কোটি নারী: নিরাপত্তার প্রশ্নে ব্রাকের ভূমিকা

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ভোটের আগে আতঙ্ক জনমনে

০৯:০০:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

সমকালের একটি শিরোনাম “৩ দিন পরও ধরা যায়নি প্রধান দুই অভিযুক্তকে”

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় প্রধান দুই সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর হোসেন ওরফে আলমগীর শেখ। তিন দিন কেটে গেলেও প্রধান দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় গণসংযোগ করে ফেরার পথে বেলা ২টা ২৪ মিনিটে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, হাদিকে গুলি করেন ফয়সাল। আর ঘটনার সময় ফয়সালকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল আলমগীর।

একটি সূত্র বলছে, গুলির ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে তারা। যদিও পুলিশের আনুষ্ঠানিক ভাষ্য, তাদের দেশ ছাড়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পৃথক অভিযানে ছয়জনকে আটকের কথা গতকাল রোববার জানিয়েছে পুলিশ ও র‍্যাব। এর মধ্যে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক হিসেবে আবদুল হান্নান নামের একজনকে র‌্যাব-২ গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রোববার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া মূল অভিযুক্ত ফয়সালের স্বাক্ষর করা কিছু চেকবই, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে র‍্যাব। তারা হলেন– ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম”আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ভোটের আগে আতঙ্ক জনমনে”

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজনৈতিক নেতারাসহ জুলাই যোদ্ধারা। সরকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন হাল। নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। পরিস্থিতি ঠিক করতে এখনই দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।

ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং নাশকতার আশঙ্কার মধ্যে এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে ভাব নেমে এসেছে। তফসিলের পর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তাও কমে গেছে।

সূত্র বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে মাঠপর্যায় থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। গত শনিবার পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে দেশের সব রেঞ্জের ডিআইজি ও মহানগর পুলিশের কমিশনারদের বৈঠকেও এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ এসেছে।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং কোনো প্রার্থী অনিরাপদ বোধ করলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই বৈঠকেও চোরাগোপ্তা হামলা ও জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে ওঠে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, যাতে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিকল্পনা আরও কার্যকর করা যায়। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে”

চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টোয়েন্টি ফুট ইকুইভ্যালেন্ট কনটেইনার (টিইইউ) হ্যান্ডলিং করছে। এ কনটেইনারের ৯৬ শতাংশ পরিবহন হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে। রেলপথ দিয়ে ৩ শতাংশ আর নৌপথ দিয়ে মাত্র ১ শতাংশ কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। দেশের কনটেইনার পরিবহনের প্রধান পথ হলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যথাযথ মানে নেই। চার লেন হলেও সড়কটিতে বর্তমানে সক্ষমতার চেয়ে বেশি যানবাহন চলছে। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে খানাখন্দ। ধীরগতির ও অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য নেই আলাদা লেন। সড়কের পাশে রয়েছে অসংখ্য হাটবাজার ও বাড়িঘর। যানবাহনের বাড়তি চাপ, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহনে সময় লাগছে বেশি। এর প্রভাবে বাড়ছে পণ্যের পরিবহন খরচ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, যানজটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহন ব্যয় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম গতিশীল রাখতে মহাসড়কটি অন্তত আট লেনে উন্নীত করা দরকার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিলেও তা সমীক্ষা পর্যায়েই আটকে আছে। অন্যদিকে ‘দায়িত্বের ‌শেষ সময়ে’ এসে এ মহাসড়ক উন্নয়নে বিনিয়োগের পক্ষপাতী নয় অন্তর্বর্তী সরকারও।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নে গত এক যুগে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ হয়েছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০১৭ সালে সড়কটি দুই থেকে চার লেনে উন্নীত করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নে যে বিনিয়োগ হয়েছে তা প্রয়োজনের চেয়ে কম। বিগত এক যুগে দেশের কম গুরুত্বপূর্ণ করিডোরগুলোতে বিনিয়োগ হয়েছে এর কয়েক গুণ বেশি অর্থ। এই সময়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। ৬ হাজার ১৬৮ কোটি টাকায় চার লেন করা হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে টাঙ্গাইল-রংপুর মহাসড়কে। আরো ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে ঢাকা-সিলেট সড়ক সম্প্রসারণে।

 

মানবজমিনের একটি শিরোন “পাখির চোখ ভোট, ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্বে জোর বিএনপি’র”

ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজের ভাবমূর্তি এবং অবস্থানে লক্ষণীয় পরিবর্তন আনছে বিএনপি। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দীর্ঘ দশকওয়াড়ি জোট ছিন্ন করে উদারতন্ত্রে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক পোশাকে তারা ভোটে যেতে চাইছে। আওয়ামী লীগের ভোটারদের সমর্থন জোগাড়ও তাদের লক্ষ্য।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, আওয়ামী লীগ প্রায় দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে যে ধর্মনিরপেক্ষ উদারতন্ত্রের ছবিটা অন্তত প্রকাশ্যে তুলে ধরেছিল, সেই রাজনৈতিক পরিসরটা বিএনপি নিতে চাইছে। আওয়ামী লীগের আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত নেই। কিন্তু এই দলের আদর্শের প্রতি দেশবাসীর একটি বড় অংশের পক্ষপাত এবং জোরালো সমর্থন রয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে আওয়ামী লীগের দুই প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং জামায়াতের আদর্শগত পার্থক্য বরাবরই প্রকাশ্যে। বিএনপি-র আন্তর্জাতিক নীতির কেন্দ্রে রয়েছে জাতীয়তাবাদ। জামায়াতের কাছে সেটি মুসলিম পরিচয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ কালপর্বে দুই দল একসঙ্গে দেশ শাসন করলেও এই মুহূর্তে বিএনপি-র সঙ্গে জামায়াতের বিভাজন সম্পূর্ণ।

আগামী ২৫ তারিখ ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ের আবেগ জাগিয়ে তুলেছেন দলীয় বৈঠকে। জামায়াতের নাম করেননি, কিন্তু বুঝিয়ে দিতে কসুর করেননি যে জামায়াতে ইসলামীই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। ভোটের জন্য ‘ধর্মকে ভুল ভাবে ব্যবহার করার’ কথা তুলে জামায়াতের সমালোচনাও করেছেন তারেক। বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ‘ধর্মের নামে দেশে বিভাজন’ ঘটানোর বিরোধিতা করেছেন। জোর দিয়ে জানিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য, গণতান্ত্রিক নীতি এবং একাত্তরের ভিতের উপরেই বিএনপি-র রাজনীতি তৈরি।