ঘূর্ণিঝড় দিত্বাহ শ্রীলঙ্কায় যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে, তাতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। প্রাণহানি, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও জীবিকা হারানোর যন্ত্রণায় আক্রান্ত মানুষদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এই দুর্যোগের মধ্যেও শ্রীলঙ্কার জনগণের দৃঢ়তা ও সরকারের দ্রুত জীবনরক্ষামূলক পদক্ষেপ এবং পুনরুদ্ধার উদ্যোগের প্রশংসা করেছে সংস্থাটি।
জরুরি সহায়তায় অর্থ বরাদ্দ
সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংক চলমান বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ পুনর্বিন্যাস করে সর্বোচ্চ ১২ কোটি মার্কিন ডলার জরুরি সহায়তা দিচ্ছে। এই অর্থ ব্যবহার করা হবে ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর পুনরুদ্ধারে এবং স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ, শিক্ষা, কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ জরুরি অবকাঠামো পুনরস্থাপনে।
বেসরকারি খাতে সহায়তা ও কর্মসংস্থান
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বেসরকারি খাতবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন কৃষি, উৎপাদন ও পরিবহনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরামর্শ ও কৌশলগত বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করাই এর মূল লক্ষ্য।

ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে দ্রুত মূল্যায়ন
পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে বৈশ্বিক দ্রুত দুর্যোগ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক বৈশ্বিক উদ্যোগের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত এই মূল্যায়নের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য হিসাব পাওয়া যাবে, যা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সহায়তা কার্যক্রম সঠিকভাবে লক্ষ্যভিত্তিক করতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে সরকার ঘোষিত পুনর্গঠন তহবিল এবং পরবর্তী পর্যায়ের প্রয়োজন নিরূপণ কার্যক্রমেও বিশ্বব্যাংক সহযোগিতা করছে।
মানবিক সংহতির বার্তা
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বিষয়ক কান্ট্রি ম্যানেজার জেভর্গ সার্গসিয়ান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি শ্রীলঙ্কাবাসীর প্রতি তাদের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে। কঠিন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের পারস্পরিক সহযোগিতা অনুপ্রেরণার উদাহরণ। তিনি জানান, জীবিকা পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক গতি ফিরিয়ে আনা এবং আরও নিরাপদ ও সহনশীল সমাজ গঠনে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ শ্রীলঙ্কার পাশে থাকবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও স্বচ্ছতা
আগামী দিনে ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নের ফল অনুযায়ী অতিরিক্ত অর্থায়ন ও সহায়তা জোগাড়ে সরকারকে সহযোগিতা করবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ কর্মসূচিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে, যাতে এই সংকটের প্রভাব মোকাবিলা করা যায়। সংস্থাটি নিশ্চিত করতে চায়, সহায়তা যেন দ্রুত, স্বচ্ছ ও কার্যকরভাবে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। এ লক্ষ্যে বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কঠোর নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে শ্রীলঙ্কার পুনর্গঠন আরও টেকসই হয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















