সিলিকন ভ্যালির অন্দরমহলে ভোরের আগে যে আঘাত নেমে এসেছিল, সেটিই শেষ পর্যন্ত ইন্টেলের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য ক্ষোভ আর সন্দেহের মুখে পড়ে ইন্টেলের প্রধান নির্বাহী লিপ-বু তান মাত্র চল্লিশ মিনিটের বৈঠকে বদলে দেন কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা। সেই বৈঠক থেকে জন্ম নেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বড় বিনিয়োগ, শেয়ার মালিকানা এবং ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ’ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা।
হঠাৎ আক্রমণ থেকে হোয়াইট হাউসের দরজা
চীনে বিনিয়োগের অতীত ইতিহাসকে ঘিরে ট্রাম্পের সন্দেহ তানের জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এর আগে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করলেও ইন্টেলের প্রধান সেই তালিকায় ছিলেন না। প্রকাশ্য আক্রমণের পর দ্রুত যোগাযোগ গড়ে তোলা হয়, ভরসা হিসেবে সামনে আনা হয় ব্যক্তিগত গল্প, দেশপ্রেমের অবস্থান এবং ইন্টেলকে ঘুরে দাঁড় করানোর রূপরেখা।
চল্লিশ মিনিটে বদলে যাওয়া হিসাব
হোয়াইট হাউসের বৈঠকে প্রস্তাব আসে সরকারি সহায়তার বদলে শেয়ার নেওয়ার। তান এতে সম্মতি দেন। এর ফল হিসেবে ইন্টেল পায় বিপুল নগদ সহায়তা এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার হয়ে ওঠে বড় শেয়ারধারক। বাজারে ছড়িয়ে পড়ে বার্তা, ইন্টেল আর সাধারণ কোনো চিপ নির্মাতা নয়, এটি এখন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান।
বিনিয়োগে গতি, অংশীদারিতে নতুন দরজা
সরকারি আস্থার পরপরই ইন্টেলের শেয়ারে দেখা যায় বড় উত্থান। কিছুদিনের মধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শীর্ষ চিপ নির্মাতার সঙ্গে বড় বিনিয়োগ চুক্তি হয়। এই অংশীদারিত্ব ইন্টেলকে আবার আলোচনার কেন্দ্রে আনে এবং ভবিষ্যৎ উৎপাদন সহযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি করে।
দরকষাকষির দক্ষতা বনাম প্রযুক্তিগত প্রশ্ন
লিপ-বু তান পরিচিত একজন সফল বিনিয়োগকারী ও দরকষাকষির মানুষ হিসেবে। তবে ইন্টেলের ভেতরে ও বাইরে প্রশ্ন উঠেছে, উন্নত চিপ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় গভীর প্রকৌশল দক্ষতা তিনি কতটা দিতে পারবেন। তবুও ব্যবস্থাপনা কাঠামো বদল, ব্যয় সংকোচন এবং প্রকৌশলভিত্তিক সিদ্ধান্তে সরাসরি যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তিনি নিজের অবস্থান শক্ত করছেন।
ইন্টেলের জন্য লাইফলাইন
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারি বিনিয়োগ না এলে ইন্টেল আরও বড় সংকটে পড়তে পারত। নতুন এই সমর্থন কোম্পানিটিকে সময় ও সুযোগ দিয়েছে নিজস্ব উৎপাদন প্রযুক্তি উন্নত করার এবং বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















