মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্ত একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দের চেষ্টা চালালেও প্রয়োজনীয় শক্তি ও বিশেষায়িত দল না থাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালাতে পারছে না। একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে ধাওয়া চললেও অতিরিক্ত বাহিনী না পৌঁছানো পর্যন্ত জাহাজটিতে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।
জাহাজ জব্দে অপেক্ষা কেন
মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বেলা ওয়ান’ নামে পরিচিত জাহাজটি উপকূলরক্ষীর বোর্ডিং প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ ইউনিট নয়, বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রতিক্রিয়া দলের প্রয়োজন হয়, যারা হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে জাহাজে নামতে সক্ষম। কিন্তু এই দলগুলোর সংখ্যা খুবই সীমিত। ফলে বাহিনী না আসা পর্যন্ত অভিযান স্থগিত রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অবস্থান
চলতি মাসের শুরুতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়াতে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত সব তেলবাহী জাহাজের চলাচল ঠেকানোর নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ কার্যত এক ধরনের অবরোধের ইঙ্গিত দেয়। এর আগে উপকূলরক্ষী বাহিনী ভেনেজুয়েলার কাছে দুটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছিল, যার একটি অভিযানের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
নৌবাহিনী থাকলেও উপকূলরক্ষীর সীমাবদ্ধতা
ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সামরিক উপস্থিতি থাকলেও আইন প্রয়োগের ক্ষমতা মূলত উপকূলরক্ষীর হাতেই। নৌবাহিনী যুদ্ধ সক্ষম হলেও সরাসরি জাহাজ জব্দের আইনি ক্ষমতা তাদের নেই। অথচ উপকূলরক্ষীর হাতে প্রয়োজনীয় জাহাজ, বিমান ও প্রশিক্ষিত জনবল তুলনামূলকভাবে কম।
দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি সংকট
উপকূলরক্ষী বাহিনী বহুদিন ধরেই জনবল ও সরঞ্জামের ঘাটতির কথা বলে আসছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার, মাদকবিরোধী অভিযানসহ বাড়তে থাকা দায়িত্ব সামলাতে তাদের প্রস্তুতি দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্ব। সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে উপকূলরক্ষী কমান্ডার জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম বাহিনী এতটা অপ্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে।
অর্থায়ন বাড়লেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে
আগামী অর্থবছরের জন্য উপকূলরক্ষী বাহিনী বড় অঙ্কের বাজেট চেয়েছে এবং অতিরিক্ত অর্থায়নের আশ্বাসও মিলেছে। তবুও তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষায়িত অভিযান পরিচালনার মতো সক্ষমতা গড়ে তুলতে সময় লাগবে। ফলে ভেনেজুয়েলা-সংযুক্ত এই জাহাজ জব্দের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















