০২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
মার্টি সুপ্রিমে ঝুঁকি আর স্বপ্নের উল্লম্ফন, টেবিল টেনিসের মাঠে নায়কোচিত উত্থান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন শান্তির খুব কাছে, ডনবাস নিয়ে অমীমাংসিত প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন শান্তি চুক্তির আরও কাছাকাছি, তবু ডনবাসে রয়ে গেল জটিলতা জেজু এয়ার দুর্ঘটনার বর্ষপূর্তিতে সত্য উন্মোচনের অঙ্গীকার, নিহতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা রাষ্ট্রপতির ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর বৈঠক আজ, গাজা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে বাড়ছে কূটনৈতিক চাপ মিয়ানমারে ব্যালটের নীরবতা, ভোট হলেও আস্থা নেই থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক ধীরগতির ছায়ায় বিদেশমুখী ক্রুঙ্গসরি ব্যাংক আলোর দিকে হেঁটে যাওয়া, বন্ধুত্বের ছায়ায় ফাটল নিউইয়র্কে টারটুফের নতুন পাঠ, মলিয়েরের ব্যঙ্গ আজকের রাজনীতির আয়নায় নীরব পর্দায় অর্গানের জাদু: শতবর্ষ পেরিয়েও কেন সিনেমা হলে ফিরে আসছে জীবন্ত সুর

নিউইয়র্কে নতুন অধ্যায়: জোহরান মামদানি যুগের শুরু

নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। বছরের শুরুতেই সিটি হলের শপথ মঞ্চে কোরআন শরীফে হাত রেখে দায়িত্ব নেবেন জোহরান মামদানি। ইতিহাসের হিসাব অনুযায়ী তিনি শহরের একশ বারোতম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যদিও নিউইয়র্কের প্রাচীন নথিপত্রে মেয়রদের ক্রম নিয়ে এখনও কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তবু এতে মামদানির গুরুত্ব কমে না। বরং তিনি হচ্ছেন শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং প্রথম মেয়র যার পারিবারিক শিকড় এশিয়ায় প্রোথিত।

দ্রুত উত্থান ও ব্যতিক্রমী পরিচয়
নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে জরিপে প্রায় অদৃশ্য থাকা মামদানি অভাবনীয় গতিতে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছেছেন। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। নিউইয়র্ক আগেও তরুণ, আদর্শবাদী, সেলিব্রিটি কিংবা অভিবাসী মেয়র দেখেছে, কিন্তু মামদানির মতো এত দ্রুত উত্থান শহরের স্মৃতিতে বিরল।

ক্ষমতায় যাওয়ার প্রস্তুতি ও জনসংযোগ
নির্বাচনের পর থেকেই তিনি শাসনের কঠিন বাস্তবতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রশাসনিক নিয়োগ, রাজনৈতিক সমঝোতা এবং নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি তিনি প্রচারণার সময় গড়ে তোলা জনসংযোগের ধারা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি তিনি টানা বারো ঘণ্টা ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করে শোনেন তাদের কথা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মেয়র হলেও তিনি মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন।

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র কে এই মামদানি

সমালোচনা মোকাবিলা ও রাজনৈতিক ভারসাম্য
প্রচারণা চলাকালে তৎকালীন মেয়রের তীব্র সমালোচনা কিংবা ভয় ছড়ানোর প্রচেষ্টায় তিনি প্রতিক্রিয়াশীল হননি। বরং শৃঙ্খলিত অবস্থান বজায় রেখেছেন। ক্ষমতার রদবদলের পর তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ধনবান মহলের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। এমনকি পুলিশ কমিশনারকে পদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে শহরের ক্ষমতাকেন্দ্রে স্বস্তির বার্তা পাঠিয়েছেন।

শাসনের কঠিন চ্যালেঞ্জ
নিউইয়র্ককে কার্যকরভাবে শাসন করা ইতিহাস জুড়ে কঠিন কাজ হিসেবে পরিচিত। বাজেট, بيرোক্রেসি, নিরাপত্তা, অভিবাসন অভিযান, প্রভাবশালী ধনকুবেরদের চাপ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবই মামদানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একটি বড় তুষার ঝড় ও তার উচ্চাভিলাষী কর্মসূচিকে দীর্ঘদিনের জন্য থামিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিশ্রুতি ও নীতিগত লক্ষ্য
নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। সার্বজনীন শিশু পরিচর্যা ব্যবস্থা তার সবচেয়ে জটিল হলেও সম্ভাবনাময় পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাস ভাড়া সম্পূর্ণ বাতিল করা তুলনামূলক সহজ হলেও বাস্তবায়নে নানা প্রশাসনিক বাধা রয়েছে। আর ভাড়া স্থগিতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলেও শহরের সামগ্রিক আবাসন সংকট সমাধান করা তার জন্য বড় পরীক্ষা হবে।

নতুন আশার বার্তা
বিদায়ী প্রশাসনের বিশৃঙ্খল সময়ের পর নিউইয়র্কে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা প্রবল। বিজয় ভাষণে মামদানি বলেছিলেন, রাজনৈতিক অন্ধকারের এই সময়ে নিউইয়র্ক হবে আলো। শতাব্দী পেরিয়ে শহরটি যেভাবে নিজস্ব ভবিষ্যৎ নির্মাণ করেছে, মামদানি যুগে সেই ইতিহাসের নতুন অধ্যায় লেখা হবে কি না, সেটাই এখন সবার প্রশ্ন

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্টি সুপ্রিমে ঝুঁকি আর স্বপ্নের উল্লম্ফন, টেবিল টেনিসের মাঠে নায়কোচিত উত্থান

নিউইয়র্কে নতুন অধ্যায়: জোহরান মামদানি যুগের শুরু

১২:১৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। বছরের শুরুতেই সিটি হলের শপথ মঞ্চে কোরআন শরীফে হাত রেখে দায়িত্ব নেবেন জোহরান মামদানি। ইতিহাসের হিসাব অনুযায়ী তিনি শহরের একশ বারোতম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, যদিও নিউইয়র্কের প্রাচীন নথিপত্রে মেয়রদের ক্রম নিয়ে এখনও কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তবু এতে মামদানির গুরুত্ব কমে না। বরং তিনি হচ্ছেন শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং প্রথম মেয়র যার পারিবারিক শিকড় এশিয়ায় প্রোথিত।

দ্রুত উত্থান ও ব্যতিক্রমী পরিচয়
নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে জরিপে প্রায় অদৃশ্য থাকা মামদানি অভাবনীয় গতিতে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছেছেন। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। নিউইয়র্ক আগেও তরুণ, আদর্শবাদী, সেলিব্রিটি কিংবা অভিবাসী মেয়র দেখেছে, কিন্তু মামদানির মতো এত দ্রুত উত্থান শহরের স্মৃতিতে বিরল।

ক্ষমতায় যাওয়ার প্রস্তুতি ও জনসংযোগ
নির্বাচনের পর থেকেই তিনি শাসনের কঠিন বাস্তবতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রশাসনিক নিয়োগ, রাজনৈতিক সমঝোতা এবং নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি তিনি প্রচারণার সময় গড়ে তোলা জনসংযোগের ধারা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি তিনি টানা বারো ঘণ্টা ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করে শোনেন তাদের কথা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মেয়র হলেও তিনি মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন।

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র কে এই মামদানি

সমালোচনা মোকাবিলা ও রাজনৈতিক ভারসাম্য
প্রচারণা চলাকালে তৎকালীন মেয়রের তীব্র সমালোচনা কিংবা ভয় ছড়ানোর প্রচেষ্টায় তিনি প্রতিক্রিয়াশীল হননি। বরং শৃঙ্খলিত অবস্থান বজায় রেখেছেন। ক্ষমতার রদবদলের পর তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ধনবান মহলের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। এমনকি পুলিশ কমিশনারকে পদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দিয়ে শহরের ক্ষমতাকেন্দ্রে স্বস্তির বার্তা পাঠিয়েছেন।

শাসনের কঠিন চ্যালেঞ্জ
নিউইয়র্ককে কার্যকরভাবে শাসন করা ইতিহাস জুড়ে কঠিন কাজ হিসেবে পরিচিত। বাজেট, بيرোক্রেসি, নিরাপত্তা, অভিবাসন অভিযান, প্রভাবশালী ধনকুবেরদের চাপ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবই মামদানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একটি বড় তুষার ঝড় ও তার উচ্চাভিলাষী কর্মসূচিকে দীর্ঘদিনের জন্য থামিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিশ্রুতি ও নীতিগত লক্ষ্য
নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। সার্বজনীন শিশু পরিচর্যা ব্যবস্থা তার সবচেয়ে জটিল হলেও সম্ভাবনাময় পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাস ভাড়া সম্পূর্ণ বাতিল করা তুলনামূলক সহজ হলেও বাস্তবায়নে নানা প্রশাসনিক বাধা রয়েছে। আর ভাড়া স্থগিতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলেও শহরের সামগ্রিক আবাসন সংকট সমাধান করা তার জন্য বড় পরীক্ষা হবে।

নতুন আশার বার্তা
বিদায়ী প্রশাসনের বিশৃঙ্খল সময়ের পর নিউইয়র্কে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা প্রবল। বিজয় ভাষণে মামদানি বলেছিলেন, রাজনৈতিক অন্ধকারের এই সময়ে নিউইয়র্ক হবে আলো। শতাব্দী পেরিয়ে শহরটি যেভাবে নিজস্ব ভবিষ্যৎ নির্মাণ করেছে, মামদানি যুগে সেই ইতিহাসের নতুন অধ্যায় লেখা হবে কি না, সেটাই এখন সবার প্রশ্ন