১১:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র যে প্রভাব দেখা গেছে

  • Sarakhon Report
  • ১১:২৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • 22

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র।

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় ছিল ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ। এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দুই রাজ্যের একাধিক অঞ্চলে পড়লেও পশ্চিমবঙ্গে তেমন তাণ্ডব দেখা যায়নি। ওড়িশাতে তুলনামূলকভাবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলেও হতাহতের ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার রাতে আনুমানিক সাড়ে এগারোটার সময়ে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামরার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। এই প্রক্রিয়া চলেছে গোটা রাত। শুক্রবার সকালে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’ অর্থাৎ শেষ অংশ।

‘ল্যান্ডফল’ চলাকালীন ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর গতি কিছুটা কমেছে। পরে উপকূল এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার ছিল বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চল বিশেষত ভদ্রক জেলার ধামরা এবং পার্শ্ববর্তী অংশে এর তাণ্ডবের প্রভাব পড়েছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। দুর্যোগের ফলে কাঁচা বাড়ি ভেঙ্গে গিয়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে, উপড়ে গিয়েছে গাছও।

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, এগরা-১, খেজুরিসহ একাধিক এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গিয়েছে। প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী অংশেও।

পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দুই রাজ্যেরই উপকূলবর্তী অঞ্চলে যেখানে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি সেখান থেকে বাসিন্দাদের কাছাকাছি ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়। মোতায়েন করা হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশাল দল। শুক্রবার উপদ্রুত অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণের কাজ চালাচ্ছে। তবে আশঙ্কা থাকলেও তেমন বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির কথা এখনও জানা যায়নি।

আবহাওয়া দফতরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ওড়িশায় ল্যান্ডফলের কারণে সেই রাজ্যেই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। সে কথা মাথায় রেখেই বাসিন্দাদের নিকটবর্তী আশ্রয় শিবিরে পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছিল। আনুমানিক দশ লক্ষ মানুষকে স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন বলে ওড়িশা প্রশাসন জানিয়েছিল।

‘দানার’ প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শুক্রবার রাতেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। বৃষ্টির ফলে ইতোমধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন অংশ।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টিতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভুবনেশ্বরে মৌসম ভবনের আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, ওড়িশার ভদ্রক, ময়ূরভঞ্জ এবং বালেশ্বরে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ওড়িশায় ঝড়ের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলতে তৎপর বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন।

তবে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন জীবনহানির ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। মোহন চরণ মাঝি বলেছেন, “প্রশাসন এবং প্রস্তুতির কারণে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সরকারের শূন্য হতাহতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ছয় লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছয় হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে ইতোমধ্যে ১৬০০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে হাওড়ার নবান্ন ভবনস্থ রাজ্যের সচিবালয়ে গোটা রাত উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।

রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা যারা গোটা রাত কাজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা নিচু উপকূলবর্তী নিচু অংশ থেকে দুই লক্ষ ১৬ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করেছি।”

বড়সড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি সে কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত একজনেরই মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তিনি নিজের বাড়িতে কেবলের কাজ করছিলেন। খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র ল্যান্ডফলের কারণে ওড়িশাতেই বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল।

‘দানা’র ল্যান্ডফল

ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, রাত দেড়টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রীয় অংশ স্থলভাগ অতিক্রম করেছে। পরে শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজের’ অংশও স্থলভাগে ঢুকে পড়ে এবং পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে।

সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের গতি কিছুটা কমেছে। ক্রমে তার গতিপথ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়।

আবহাওয়া দফতরের তরফে বলা হয়েছে, “প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে উত্তর উপকূলীয় ওড়িশার উপর দিয়ে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।”

“সকাল সাড়ে আটটায় ভদ্রক থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং ধামারা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের চারপাশে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।”

“এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর ওড়িশা বরাবর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর পারে এবং পরবর্তী ছয় ঘণ্টার মধ্যে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।”

এর আগে, ‘দানা’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা গিয়েছে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে। ওইদিন থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, ঝোড়ো হাওয়াও বয়েছে উপকূলবর্তী অংশে। পরে রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে, সঙ্গে দমকা হাওয়ার দাপটও।

ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক এবং বালেশ্বর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই আশঙ্কায় উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে আগেই বাসিন্দাদের কাজ শুরু করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। দেখা যায় ঝড়ের দাপটও যা রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে।

ওড়িশার মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ ওই অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “বাতাসের তীব্র গতিবেগ আপাতত হ্রাস পেয়েছে। তবে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই আমরা বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনর্বহালের কাজ শুরু করব।”

“প্রাথমিক ভাবে আমরা ভেবেছিলাম যে আমাদের ভদ্রকের ৪০ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করতে হবে। কিন্তু গত (বৃহস্পতিবার) রাতে এই সংখ্যা এক লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছয় কারণ বহু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গিয়েছেন।”

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভদ্রক,জগৎসিংহপুরে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভদ্রক জেলার এডিএম শান্তনু মোহান্তি বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা সাইক্লোন শেল্টারে রয়েছেন। দমকল, ওডিআরএফ এবং এনডিআরএফ-এর কর্মীরা কাজ করছেন।”

“ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় ভদ্রকে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষকে বাইরে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছি।”

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উত্তাল দীঘার সমুদ্র।

পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা

এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন লাগোয়া অঞ্চল, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলীসহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। মধ্যরাতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে দীঘার সমুদ্রে।

মধ্যরাত থেকেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলসহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশেও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কলকাতাতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভোর থেকে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দিনভর এই বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে। অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায়।

‘দানা’র ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আশঙ্কায় ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এর অন্যতম কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি এবং সুন্দরবনসহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী অংশে বাঁধের অবস্থা। তবে আশঙ্কা থাকলেও তেমন ধ্বংসাত্মক রূপ দেখা যায়নি পশ্চিমবঙ্গে।

যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরসহ একাধিক জেলায় বহু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষের জমিও। বিস্তীর্ণ এলাকা ইতোমধ্যে জলমগ্ন। সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির দেখা গিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে। চাষের ক্ষতিও হয়েছিল। ‘দানার’প্রভাবে সেই পরিস্থিতি আরও বিরূপ হয়েছে।

নিচু এলাকা থেকে সাড়ে তিন লক্ষরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সম্মতিক্রমে দেড় লক্ষের বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে। সাড়ে ৮০০র বেশি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলবর্তী অংশ থেকে বহু মানুষ ইতোমধ্যে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ঘূর্ণিঝড় দানা’র কারণে বাতিল করা হয়েছিল বহু ট্রেন ৷ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে বহু দূরপাল্পা এবং লোকাল ট্রেন বাতিলের কথা আগাম জানানো হয়েছিল। পূর্ব রেলের তরফেও বাতিল করা হয়েছিল দূরপাল্লার ট্রেন। পরে শুক্রবার বেলার দিকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার চলাচল ধীরে ধীরে শুরু হয়।

অন্যদিকে, ঝড়ের তাণ্ডবের কথা মাথায় রেখে কলকাতা বিমানবন্দর এবং ওড়িশার বিজু পট্টনায়ক চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে। শুক্রবার সকালে বিমান পরিষেবা চালু হয়।

শুক্রবার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

শুক্রবার দুপুরে নবান্নে জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

ঘূর্ণিঝড়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরসহ যে যে অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে, জলমগ্ন রয়েছে বা চাষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই সমস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করে স্থানীয় প্রশাসনকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন মিজ ব্যানার্জী।

বিবিসি নিউজ বাংলা

ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র যে প্রভাব দেখা গেছে

১১:২৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় ছিল ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ। এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দুই রাজ্যের একাধিক অঞ্চলে পড়লেও পশ্চিমবঙ্গে তেমন তাণ্ডব দেখা যায়নি। ওড়িশাতে তুলনামূলকভাবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলেও হতাহতের ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার রাতে আনুমানিক সাড়ে এগারোটার সময়ে ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামরার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। এই প্রক্রিয়া চলেছে গোটা রাত। শুক্রবার সকালে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’ অর্থাৎ শেষ অংশ।

‘ল্যান্ডফল’ চলাকালীন ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর গতি কিছুটা কমেছে। পরে উপকূল এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার ছিল বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চল বিশেষত ভদ্রক জেলার ধামরা এবং পার্শ্ববর্তী অংশে এর তাণ্ডবের প্রভাব পড়েছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। দুর্যোগের ফলে কাঁচা বাড়ি ভেঙ্গে গিয়েছে, বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে, উপড়ে গিয়েছে গাছও।

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, এগরা-১, খেজুরিসহ একাধিক এলাকায় এই ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গিয়েছে। প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী অংশেও।

পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দুই রাজ্যেরই উপকূলবর্তী অঞ্চলে যেখানে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি সেখান থেকে বাসিন্দাদের কাছাকাছি ত্রাণ শিবিরে সরানো হয়। মোতায়েন করা হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশাল দল। শুক্রবার উপদ্রুত অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণের কাজ চালাচ্ছে। তবে আশঙ্কা থাকলেও তেমন বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির কথা এখনও জানা যায়নি।

আবহাওয়া দফতরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ওড়িশায় ল্যান্ডফলের কারণে সেই রাজ্যেই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। সে কথা মাথায় রেখেই বাসিন্দাদের নিকটবর্তী আশ্রয় শিবিরে পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছিল। আনুমানিক দশ লক্ষ মানুষকে স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন বলে ওড়িশা প্রশাসন জানিয়েছিল।

‘দানার’ প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শুক্রবার রাতেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। বৃষ্টির ফলে ইতোমধ্যে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন অংশ।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টিতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভুবনেশ্বরে মৌসম ভবনের আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, ওড়িশার ভদ্রক, ময়ূরভঞ্জ এবং বালেশ্বরে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ওড়িশায় ঝড়ের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলতে তৎপর বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন।

তবে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন জীবনহানির ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। মোহন চরণ মাঝি বলেছেন, “প্রশাসন এবং প্রস্তুতির কারণে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সরকারের শূন্য হতাহতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ছয় লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছয় হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে ইতোমধ্যে ১৬০০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে হাওড়ার নবান্ন ভবনস্থ রাজ্যের সচিবালয়ে গোটা রাত উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।

রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা যারা গোটা রাত কাজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা নিচু উপকূলবর্তী নিচু অংশ থেকে দুই লক্ষ ১৬ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করেছি।”

বড়সড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি সে কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত একজনেরই মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তিনি নিজের বাড়িতে কেবলের কাজ করছিলেন। খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র ল্যান্ডফলের কারণে ওড়িশাতেই বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল।

‘দানা’র ল্যান্ডফল

ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, রাত দেড়টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রীয় অংশ স্থলভাগ অতিক্রম করেছে। পরে শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজের’ অংশও স্থলভাগে ঢুকে পড়ে এবং পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে।

সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের গতি কিছুটা কমেছে। ক্রমে তার গতিপথ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়।

আবহাওয়া দফতরের তরফে বলা হয়েছে, “প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে উত্তর উপকূলীয় ওড়িশার উপর দিয়ে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।”

“সকাল সাড়ে আটটায় ভদ্রক থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং ধামারা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের চারপাশে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।”

“এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর ওড়িশা বরাবর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর পারে এবং পরবর্তী ছয় ঘণ্টার মধ্যে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।”

এর আগে, ‘দানা’র প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখা গিয়েছে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে। ওইদিন থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, ঝোড়ো হাওয়াও বয়েছে উপকূলবর্তী অংশে। পরে রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে, সঙ্গে দমকা হাওয়ার দাপটও।

ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক এবং বালেশ্বর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই আশঙ্কায় উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে আগেই বাসিন্দাদের কাজ শুরু করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। দেখা যায় ঝড়ের দাপটও যা রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে।

ওড়িশার মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ ওই অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “বাতাসের তীব্র গতিবেগ আপাতত হ্রাস পেয়েছে। তবে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই আমরা বিদ্যুৎ পরিষেবা পুনর্বহালের কাজ শুরু করব।”

“প্রাথমিক ভাবে আমরা ভেবেছিলাম যে আমাদের ভদ্রকের ৪০ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করতে হবে। কিন্তু গত (বৃহস্পতিবার) রাতে এই সংখ্যা এক লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছয় কারণ বহু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গিয়েছেন।”

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভদ্রক,জগৎসিংহপুরে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভদ্রক জেলার এডিএম শান্তনু মোহান্তি বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা সাইক্লোন শেল্টারে রয়েছেন। দমকল, ওডিআরএফ এবং এনডিআরএফ-এর কর্মীরা কাজ করছেন।”

“ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় ভদ্রকে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষকে বাইরে না যাওয়ার বার্তা দিয়েছি।”

ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উত্তাল দীঘার সমুদ্র।

পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা

এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন লাগোয়া অঞ্চল, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলীসহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। মধ্যরাতে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে দীঘার সমুদ্রে।

মধ্যরাত থেকেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলসহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশেও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কলকাতাতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভোর থেকে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দিনভর এই বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে। অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায়।

‘দানা’র ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আশঙ্কায় ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এর অন্যতম কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি এবং সুন্দরবনসহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী অংশে বাঁধের অবস্থা। তবে আশঙ্কা থাকলেও তেমন ধ্বংসাত্মক রূপ দেখা যায়নি পশ্চিমবঙ্গে।

যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরসহ একাধিক জেলায় বহু কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষের জমিও। বিস্তীর্ণ এলাকা ইতোমধ্যে জলমগ্ন। সাম্প্রতিক সময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির দেখা গিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে। চাষের ক্ষতিও হয়েছিল। ‘দানার’প্রভাবে সেই পরিস্থিতি আরও বিরূপ হয়েছে।

নিচু এলাকা থেকে সাড়ে তিন লক্ষরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সম্মতিক্রমে দেড় লক্ষের বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে। সাড়ে ৮০০র বেশি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলবর্তী অংশ থেকে বহু মানুষ ইতোমধ্যে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ঘূর্ণিঝড় দানা’র কারণে বাতিল করা হয়েছিল বহু ট্রেন ৷ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে বহু দূরপাল্পা এবং লোকাল ট্রেন বাতিলের কথা আগাম জানানো হয়েছিল। পূর্ব রেলের তরফেও বাতিল করা হয়েছিল দূরপাল্লার ট্রেন। পরে শুক্রবার বেলার দিকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার চলাচল ধীরে ধীরে শুরু হয়।

অন্যদিকে, ঝড়ের তাণ্ডবের কথা মাথায় রেখে কলকাতা বিমানবন্দর এবং ওড়িশার বিজু পট্টনায়ক চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে। শুক্রবার সকালে বিমান পরিষেবা চালু হয়।

শুক্রবার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

শুক্রবার দুপুরে নবান্নে জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

ঘূর্ণিঝড়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরসহ যে যে অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে, জলমগ্ন রয়েছে বা চাষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই সমস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করে স্থানীয় প্রশাসনকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন মিজ ব্যানার্জী।

বিবিসি নিউজ বাংলা