০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-২)

  • Sarakhon Report
  • ১০:০০:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • 19

প্রদীপ কুমার মজুমদার

য়োশিও মিকামী তাঁর গ্রন্থে চীনা গণিতশাস্ত্রের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন ২৯০০ খ্রীষ্টপূর্বে চীনারা কিছুটা বিক্ষিপ্তভাবে গণিতচর্চা করতেন। ২৭০০ খ্রীষ্টপূর্বে পীত সম্রাট হুয়ান তি’র আমলে কিছুটা পদ্ধতিগতভাবে গণিত চর্চা হয়েছে। দ্বাদশ খ্রীষ্টপূর্বে চীন। পণ্ডিত ওয়ান ওয়াদ ‘আই কিং’ নামে একটি গ্রন্থ লেখেন। এই গ্রন্থে গণিতের কিছু অংশ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

চৌ পেই নামক গ্রন্থে চৌ কাঙ্গ গণিতের কয়েকটি তত্ত্ব সন্নিবিষ্ট করেন। গ্রন্থটি মূলতঃ বিজ্ঞানের হওয়ায় গণিত নিয়ে খুব বেশী আলোচনা করা হয়নি। চীনে পদ্ধতিগতভাবে গণিতচর্চা শুরু হয় ধরতে গেলে ১৫২ খ্রীষ্টপূর্ব থেকে। চাঙ্গ ৎসাঙ্গ নামে একজন চীনা গণিতজ্ঞ ‘কিউ চাঙ্গ সুয়ান সু’ নামে একটি সুন্দর গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ধরতে গেলে চীনাদের প্রথম পদ্ধতিগতভাবে লেখা বই এইটিই।

অটো নিউগেবাওয়ার ‘দি এক্সাট সায়েন্সেস ইন এ্যান্টিকুইটি’ গ্রন্থে মিশর এবং ব্যাবিলনের গণিতচর্চা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ব্যাবিলনে ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে জ্যোতবিদ্যার চর্চা ছিল। ফলে অনুমান করা যেতে পারে যে ১৬০০ শ্রীষ্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলনে গণিতচর্চা করা হোত। আনুর, নিপ্পর ও নিনেভে খননকার্যের ফলে যে সব মাটির চাকতি পাওয়া গিয়েছে তা থেকে অনুমান করা যায়-ব্যাবিলনে ২০০০ শ্রীঃ পূঃ থেকে ১২০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এই দীর্ঘ আট শতাব্দী ধরে গাণিতিক তৎপরতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।

মিশরীয় গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে টি. এরিক পিট ‘রাইন্দ ম্যাথেমেটিক্যাল পেপিরাস’ থেকে অনেক তথ্যের সন্ধান দিয়েছেন। এ থেকে জানা যায় ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মিশরে হিকোসাস রাজত্বকালে ফারাও আ- আসার রে’র সময়ে আ-মোস নামে একজন লিপিকার এটি পূর্বের কোন গ্রন্থ বা পেপিরাস থেকে নকল করেছেন। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন তৃতীয় আমেন এম হেটের রাজত্বকালে অর্থাৎ শ্রীষ্টপূর্ব ১৮৪৯ থেকে ১৮০১ খ্রীষ্টপূর্বের মধ্যে লিখিত কোন গ্রন্থ থেকে সম্ভবত নকল করা হয়েছে।

মিশরীয় গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে টি. এরিক পিট “রাইন্দ ম্যাথেমেটিক্যাল পেপিরাস’ থেকে অনেক তথ্যের সন্ধান দিয়েছেন। এ থেকে জানা যায় ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মিশরে হিকোসাস রাজত্বকালে ফারাও আ- আসার রে’র সময়ে আ-মোস নামে একজন লিপিকার এটি পূর্বের কোন গ্রন্থ বা পেপিরাস থেকে নকল করেছেন। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন তৃতীয় আমেন এম হেটের রাজত্বকালে অর্থাৎ খ্রীষ্টপূর্ব ১৮৪৯ থেকে ১৮০১ খ্রীষ্টপূর্বের মধ্যে লিখিত কোন গ্রন্থ থেকে সম্ভবত নকল করা হয়েছে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে ইউফ্রাতিস ও তাইগ্রিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল এবং নীলনদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০০’ এর ওদিকে গণিতচর্চা শুরু হয় নি। যদিও বা শুরু হয়ে থাকে তবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা জানতে পারি নি। এবার দেখাবো সিন্ধু উপত্যকা এবং গাঙ্গেয় উপত্যকায় কি ভাবে এবং কতকাল পূর্বে গণিত চর্চা শুরু হয়েছিল।

(চলবে)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-১)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-১)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-২)

১০:০০:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

প্রদীপ কুমার মজুমদার

য়োশিও মিকামী তাঁর গ্রন্থে চীনা গণিতশাস্ত্রের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন ২৯০০ খ্রীষ্টপূর্বে চীনারা কিছুটা বিক্ষিপ্তভাবে গণিতচর্চা করতেন। ২৭০০ খ্রীষ্টপূর্বে পীত সম্রাট হুয়ান তি’র আমলে কিছুটা পদ্ধতিগতভাবে গণিত চর্চা হয়েছে। দ্বাদশ খ্রীষ্টপূর্বে চীন। পণ্ডিত ওয়ান ওয়াদ ‘আই কিং’ নামে একটি গ্রন্থ লেখেন। এই গ্রন্থে গণিতের কিছু অংশ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

চৌ পেই নামক গ্রন্থে চৌ কাঙ্গ গণিতের কয়েকটি তত্ত্ব সন্নিবিষ্ট করেন। গ্রন্থটি মূলতঃ বিজ্ঞানের হওয়ায় গণিত নিয়ে খুব বেশী আলোচনা করা হয়নি। চীনে পদ্ধতিগতভাবে গণিতচর্চা শুরু হয় ধরতে গেলে ১৫২ খ্রীষ্টপূর্ব থেকে। চাঙ্গ ৎসাঙ্গ নামে একজন চীনা গণিতজ্ঞ ‘কিউ চাঙ্গ সুয়ান সু’ নামে একটি সুন্দর গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ধরতে গেলে চীনাদের প্রথম পদ্ধতিগতভাবে লেখা বই এইটিই।

অটো নিউগেবাওয়ার ‘দি এক্সাট সায়েন্সেস ইন এ্যান্টিকুইটি’ গ্রন্থে মিশর এবং ব্যাবিলনের গণিতচর্চা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ব্যাবিলনে ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে জ্যোতবিদ্যার চর্চা ছিল। ফলে অনুমান করা যেতে পারে যে ১৬০০ শ্রীষ্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলনে গণিতচর্চা করা হোত। আনুর, নিপ্পর ও নিনেভে খননকার্যের ফলে যে সব মাটির চাকতি পাওয়া গিয়েছে তা থেকে অনুমান করা যায়-ব্যাবিলনে ২০০০ শ্রীঃ পূঃ থেকে ১২০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এই দীর্ঘ আট শতাব্দী ধরে গাণিতিক তৎপরতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।

মিশরীয় গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে টি. এরিক পিট ‘রাইন্দ ম্যাথেমেটিক্যাল পেপিরাস’ থেকে অনেক তথ্যের সন্ধান দিয়েছেন। এ থেকে জানা যায় ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মিশরে হিকোসাস রাজত্বকালে ফারাও আ- আসার রে’র সময়ে আ-মোস নামে একজন লিপিকার এটি পূর্বের কোন গ্রন্থ বা পেপিরাস থেকে নকল করেছেন। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন তৃতীয় আমেন এম হেটের রাজত্বকালে অর্থাৎ শ্রীষ্টপূর্ব ১৮৪৯ থেকে ১৮০১ খ্রীষ্টপূর্বের মধ্যে লিখিত কোন গ্রন্থ থেকে সম্ভবত নকল করা হয়েছে।

মিশরীয় গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে টি. এরিক পিট “রাইন্দ ম্যাথেমেটিক্যাল পেপিরাস’ থেকে অনেক তথ্যের সন্ধান দিয়েছেন। এ থেকে জানা যায় ১৬০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মিশরে হিকোসাস রাজত্বকালে ফারাও আ- আসার রে’র সময়ে আ-মোস নামে একজন লিপিকার এটি পূর্বের কোন গ্রন্থ বা পেপিরাস থেকে নকল করেছেন। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন তৃতীয় আমেন এম হেটের রাজত্বকালে অর্থাৎ খ্রীষ্টপূর্ব ১৮৪৯ থেকে ১৮০১ খ্রীষ্টপূর্বের মধ্যে লিখিত কোন গ্রন্থ থেকে সম্ভবত নকল করা হয়েছে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে ইউফ্রাতিস ও তাইগ্রিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল এবং নীলনদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০০’ এর ওদিকে গণিতচর্চা শুরু হয় নি। যদিও বা শুরু হয়ে থাকে তবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা জানতে পারি নি। এবার দেখাবো সিন্ধু উপত্যকা এবং গাঙ্গেয় উপত্যকায় কি ভাবে এবং কতকাল পূর্বে গণিত চর্চা শুরু হয়েছিল।

(চলবে)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-১)

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা ( পর্ব-১)