১০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ দুই পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক

  • Sarakhon Report
  • ০৮:২৫:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 25

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ দুই পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক”

বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ সোমবার সকালে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠক।

গত সপ্তাহে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে নজিরবিহীন হামলা করে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠন। এর প্রতিবাদে পরদিন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। শেষ মুহূর্তে দুই পররাষ্ট্রসচিবের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয় তৈরি হয়েছিল।

পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আজ সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই হবে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে এটি হবে বিক্রম মিশ্রির প্রথম বাংলাদেশ সফর। খসড়া সূচি অনুযায়ী, তিনি পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে একান্তে বৈঠক করবেন। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে যোগ দেবেন মধ্যাহ্নভোজে। এরপর তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। আজ রাতেই বিক্রম মিশ্রির দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকটি নিয়মিত আলোচনার প্রক্রিয়া হলেও বাংলাদেশে ৫ আগস্ট–পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনার পতনকে সারা বিশ্ব অনিবার্য পরিণতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ভারত ওই পরিবর্তনকে এখনো স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি; বরং সংখ্যালঘু ইস্যুটিকে সামনেই রেখে চলেছে।

গতকাল ঢাকায় এক সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এটা স্বীকার করতে হবে যে ৫ আগস্টের আগে এবং পরে সম্পর্কের নিশ্চয়ই গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমি আশা করব, তাঁরা ফলপ্রসূ আলোচনা করবেন।’

 

দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “এ মাসেও চালু হচ্ছে না রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র”

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথা থাকলেও গ্রিড (সঞ্চালন) লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম দফায় পেছানোর পর ২০২৩ সালে বলা হয়েছিল চলতি ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। কিন্তু ৫ আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতায় কয়েক মাস সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সব প্রস্তুতি শেষ করে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও ছয় মাস সময় লাগবে বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বছরখানেক আগেই চুল্লিসহ মূল অবকাঠামোর নির্মাণ শেষ হয়েছে। বিগত বছরের অক্টোবরে পাঁচ দফায় রাশিয়া থেকে জ্বালানির (ইউরেনিয়াম) প্রথম চালানও রূপপুরে পৌঁছেছে। কিন্তু গ্রিডলাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে প্রথম ইউনিটের গ্রিড লাইনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে উৎপাদনে যেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। রূপপুর এনপিপির প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান জানান, গ্রিডলাইন রেডি হওয়ার পর উত্পাদনে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে হয়। প্রাথমিক বিভিন্ন পরীক্ষা শেষ করে জ্বালানি লোড করতে দুই মাসের মতো সময় প্রয়োজন হবে। এরপর পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও এক মাস সময় লাগবে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে গ্রিড রেডি হলে থার্ড কোয়ার্টারে অর্থাৎ আগস্টে হয়তো টেস্ট ট্রায়ালে যাওয়া সম্ভব হবে। প্রথম ইউনিট চালুর এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সরকার বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা এবং ইউএনডিপির সাবেক প্রধান লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল তাদের মধ্যে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তার সরকার।

বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান আইএমএফ উপদেষ্টা লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউন। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান, উন্নয়ন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকে লক্ষ্য করে ভুল তথ্য প্রচার, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক ব্যবসা, ক্ষুদ্র ঋণসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ায় লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মূল শব্দই ছিল সংস্কার। তাই তার সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এদিকে যমুনায় গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মেটার পরিচালক (মানবাধিকার নীতি) মিরান্ডা সিসন্স। বাংলাদেশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চালানো বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার ঠেকাতে এ সময় বহুজাতিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মেটাকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “হাসনাতেই জিম্মি ছিল বরিশাল”

১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসনামলে গোটা বরিশালই ছিল দলটির কাছে জিম্মি। একটি পরিবারের সিদ্ধান্তেই সব চলতো সেখানে। সেই পরিবারের নাম সেরনিয়াবাত পরিবার। স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়র ছিলেন বরিশালের সর্বেসর্বা। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতো বিভিন্ন নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন, ঠিকাদারি এবং রাজনীতি।

সম্প্রতি সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন সেরনিয়াবাত আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। অর্থের বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা, দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দেয়া ছাড়াও সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে কমিশন, সরকারি বরাদ্দের অর্থ নিজের সম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করা ও ব্যাপক জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে হাসনাত আবদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে। আর এসবে ভূমিকা রাখতেন তার তিন ছেলে মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও আশিক আবদুল্লাহ। গত ৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর পরপর সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জামিনে ছাড়া পান। গত ৩রা ডিসেম্বর ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ: আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে বরিশাল অঞ্চলের যেকোনো নির্বাচনে মনোনয়ন কে পাবেন সেটার নির্ধারক ছিলেন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা জেলা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করে দিতেন তিনি। বিজয়ী প্রার্থীও নির্ধারণ করতেন তিনি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতেন হাসনাত আবদুল্লাহ। টাকা না দিলে প্রার্থিতা মিলতো না- এমন অভিযোগও রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ’র পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিলে নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করাতেন। আর তাকে জয়ী করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা কাজে লাগাতেন।
বিভাগের ছয় জেলা ও ৪২টি উপজেলায় বেশির ভাগ কমিটিতে পদ-পদবি পেয়েছেন তার অনুসারীরা। পাশাপাশি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান ও মেয়রও হয়েছে তার পছন্দের লোকজন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য করেছেন তিনি। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের গুনতে হয়েছে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে ৫০ লাখ থেকে এক কোটির অধিক টাকা।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ দুই পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক

০৮:২৫:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সারাক্ষণ ডেস্ক

প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ দুই পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক”

বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ সোমবার সকালে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠক।

গত সপ্তাহে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে নজিরবিহীন হামলা করে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠন। এর প্রতিবাদে পরদিন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। শেষ মুহূর্তে দুই পররাষ্ট্রসচিবের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয় তৈরি হয়েছিল।

পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আজ সকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই হবে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে এটি হবে বিক্রম মিশ্রির প্রথম বাংলাদেশ সফর। খসড়া সূচি অনুযায়ী, তিনি পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে একান্তে বৈঠক করবেন। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে যোগ দেবেন মধ্যাহ্নভোজে। এরপর তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। আজ রাতেই বিক্রম মিশ্রির দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকটি নিয়মিত আলোচনার প্রক্রিয়া হলেও বাংলাদেশে ৫ আগস্ট–পরবর্তী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনার পতনকে সারা বিশ্ব অনিবার্য পরিণতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ভারত ওই পরিবর্তনকে এখনো স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি; বরং সংখ্যালঘু ইস্যুটিকে সামনেই রেখে চলেছে।

গতকাল ঢাকায় এক সেমিনারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এটা স্বীকার করতে হবে যে ৫ আগস্টের আগে এবং পরে সম্পর্কের নিশ্চয়ই গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়ে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমি আশা করব, তাঁরা ফলপ্রসূ আলোচনা করবেন।’

 

দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “এ মাসেও চালু হচ্ছে না রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র”

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথা থাকলেও গ্রিড (সঞ্চালন) লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম দফায় পেছানোর পর ২০২৩ সালে বলা হয়েছিল চলতি ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। কিন্তু ৫ আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতায় কয়েক মাস সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সব প্রস্তুতি শেষ করে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও ছয় মাস সময় লাগবে বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বছরখানেক আগেই চুল্লিসহ মূল অবকাঠামোর নির্মাণ শেষ হয়েছে। বিগত বছরের অক্টোবরে পাঁচ দফায় রাশিয়া থেকে জ্বালানির (ইউরেনিয়াম) প্রথম চালানও রূপপুরে পৌঁছেছে। কিন্তু গ্রিডলাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে প্রথম ইউনিটের গ্রিড লাইনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে উৎপাদনে যেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। রূপপুর এনপিপির প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান জানান, গ্রিডলাইন রেডি হওয়ার পর উত্পাদনে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে হয়। প্রাথমিক বিভিন্ন পরীক্ষা শেষ করে জ্বালানি লোড করতে দুই মাসের মতো সময় প্রয়োজন হবে। এরপর পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও এক মাস সময় লাগবে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে গ্রিড রেডি হলে থার্ড কোয়ার্টারে অর্থাৎ আগস্টে হয়তো টেস্ট ট্রায়ালে যাওয়া সম্ভব হবে। প্রথম ইউনিট চালুর এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সরকার বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা এবং ইউএনডিপির সাবেক প্রধান লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল তাদের মধ্যে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তার সরকার।

বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান আইএমএফ উপদেষ্টা লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউন। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান, উন্নয়ন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকে লক্ষ্য করে ভুল তথ্য প্রচার, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক ব্যবসা, ক্ষুদ্র ঋণসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ায় লর্ড মার্ক ম্যালোচ-ব্রাউনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মূল শব্দই ছিল সংস্কার। তাই তার সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বড় ধরনের সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এদিকে যমুনায় গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মেটার পরিচালক (মানবাধিকার নীতি) মিরান্ডা সিসন্স। বাংলাদেশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চালানো বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার ঠেকাতে এ সময় বহুজাতিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মেটাকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “হাসনাতেই জিম্মি ছিল বরিশাল”

১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসনামলে গোটা বরিশালই ছিল দলটির কাছে জিম্মি। একটি পরিবারের সিদ্ধান্তেই সব চলতো সেখানে। সেই পরিবারের নাম সেরনিয়াবাত পরিবার। স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়র ছিলেন বরিশালের সর্বেসর্বা। তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতো বিভিন্ন নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন, ঠিকাদারি এবং রাজনীতি।

সম্প্রতি সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন সেরনিয়াবাত আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। অর্থের বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা, দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দেয়া ছাড়াও সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে কমিশন, সরকারি বরাদ্দের অর্থ নিজের সম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করা ও ব্যাপক জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে হাসনাত আবদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে। আর এসবে ভূমিকা রাখতেন তার তিন ছেলে মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ও আশিক আবদুল্লাহ। গত ৫ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর পরপর সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জামিনে ছাড়া পান। গত ৩রা ডিসেম্বর ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ: আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৫ বছরে বরিশাল অঞ্চলের যেকোনো নির্বাচনে মনোনয়ন কে পাবেন সেটার নির্ধারক ছিলেন আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা জেলা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করে দিতেন তিনি। বিজয়ী প্রার্থীও নির্ধারণ করতেন তিনি। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতেন হাসনাত আবদুল্লাহ। টাকা না দিলে প্রার্থিতা মিলতো না- এমন অভিযোগও রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ’র পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিলে নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করাতেন। আর তাকে জয়ী করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা কাজে লাগাতেন।
বিভাগের ছয় জেলা ও ৪২টি উপজেলায় বেশির ভাগ কমিটিতে পদ-পদবি পেয়েছেন তার অনুসারীরা। পাশাপাশি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান ও মেয়রও হয়েছে তার পছন্দের লোকজন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য করেছেন তিনি। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের গুনতে হয়েছে এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে ৫০ লাখ থেকে এক কোটির অধিক টাকা।