০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
গ্র্যামির ডাবল মনোনয়নে কেটসআইয়ের জয়যাত্রা — বৈচিত্র্য, প্রতিভা ও সংস্কৃতির গ্লোবাল উদযাপন যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন সমাপ্তির সম্ভাবনায় ডলার স্থিতিশীল, অস্ট্রেলীয় ডলার শক্তিশালী, ইয়েন দুর্বল প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২১) হলিউডের ‘হাইল্যান্ডার’ রিবুটে যোগ দিলেন কোরিয়ান তারকা জিওন জং-সিও অক্ষরের রহস্য: কেন ‘Q’-এর প্রয়োজন ‘U’ — ভাষার আত্মার এক বিস্ময়কর ইতিহাস নাসার চন্দ্র মিশনের গতি ফেরাতে ‘সবকিছু করবে’ ব্লু অরিজিন” ট্রাম্প বনাম সুপ্রিম কোর্ট: শুল্ক সংকটে নতুন আইনি লড়াই সম্ভাব্য বাজার ধসের পূর্বাভাস: ওয়াল স্ট্রিটও জানে না কখন আসবে পতন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫২) শেয়ারবাজারে ধস অব্যাহত: ডিএসই-তে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২০)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • 38

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বাস্স্কাকভ তখন বলে চলেছে, ‘যুদ্ধজয়ের পর শান্তি? তা, কথাটা শুনতে মন্দ লয় কিন্তু। আমরা কনস্টানতিনোপ্ল্ জিতে লিব। ওই কনস্টানতিনোপ্‌ল্টা আমাদের বড়ই দরকার! তারপর লড়াই করতি করতি একসময় বার্লিনও জিতে লিব আমরা। তা তো হল, কিন্তু আমি শুধোই,’ লাগাম-হাতে দাওয়ায়-বসা সেই কৃষক ইতিমধ্যে ঠেলেঠুলে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর দিকে একটা আঙুল উ’চিয়ে এবার বাস্স্কাকভ বলল, ‘তোমারেই শুধোই, কও দেখি, জার্মানরা কিংবা তুকরা কি তোমার কাচ থেকে ধার লিয়ে শুষতে চাইছি নার্স নিতে দেখি ভালোমানুষের পো, কনস্টানতিনোপলে, যাওয়ায় তোমার কামটা কী? তুমি কি

ওখেনকার বাজারে আল, চালান দিতে চাও? কথা কও না কেন? কয়ে ফ্যালো।’ কৃষকটি লাল হয়ে উঠে চোখ পিটপিট করতে লাগলেন। তারপর সামনের দিকে হাত ছড়িয়ে দিয়ে রাগত সুরে জবাব দিলেন:

‘কনস্টানতিনোপুল, চাই কীসের জন্যি? মোটেই চাই নে, একদম চাই নে!’ ‘তাইলে? তুমি চাও না, আমি চাই না, এখানে কেউই চায় না তা। চায় খালি মহাজন-ব্যাপারীরা। ওরা লাভের ব্যবসা চালাতি চায়। তা, ওরা যদি চায় তো নিজেরাই লড়াই করুক না কেন। চাষীদের এ-লিয়ে লড়াই করার কী আছে? তাইলে তোমাদের গাঁয়ের আদ্ধেক নোকরে ফ্রন্টে চালান করি দিয়েচে কেন, শুনি? মহাজনরে লাভের মণ্ডা হাতিয়ে লিতে সাহায্য করতি? আচ্ছা হাবাগৰা লোক তো তোমরা। ইয়া-ইয়া পালোয়ান, লম্বা-লম্বা দাড়ি সব, অথচ যে-কেউ কড়ে আঙুলে তুলি লাচাতি পারে।’

‘ঠিক! ঠিক কয়েচ!’ উরুতে চাপড় মেরে সেই কৃষকটি বললেন। ‘চোখের মাথা খেয়ে বসেচি। নোকটা খাঁটি কথা কয়েচে।’ বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মাথা হেট করে রইলেন কৃষকটি।

‘তাইলে শোন আমাদের বক্তব্য,’ শেষ করার আগে বাস্কাকভ বললে, ‘আমরা বলি, যুদ্ধ জয়ফয় শেষ করে শান্তি চাই না আমরা, বাড়ির মরদরা সব মরে ভূত হোক, আরও হাজার হাজার মজুর চাষী কানা-খোঁড়া-পঙ্গু হোক এ আমরা চাই না – এখুনি শান্তি চাই আমরা, তা সে যুদ্ধজয় হোক আর নাই হোক। আমাদের নিজেদের দেশেই তো আমরা জমিদারবাবুদের যুদ্ধে হারাতে পারি নি এখনও। কেমন, কথাটা খাঁটি কিনা, ভাইসব? যদি এতে কারো অমত থাকে তো সে আসুক সামনে, কয়ে যাক আমি মিথ্যেবাদী, কয়ে যাক আমি খাঁটি কথা কচ্চি না। আর আমার কিছু কওয়ার নেই!’

এখনও মনে পড়ে, জনতার মধ্যে একটা আর্ত চিৎকার ফেটে পড়ল। ‘এস-আর’ কুলিকভ রক্তশূন্য মুখে মঞ্চে লাফিয়ে উঠে হাত নেড়ে-নেড়ে সবাইকে চুপ করিয়ে কিছু বলতে চাইল। কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে লোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে।

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্র্যামির ডাবল মনোনয়নে কেটসআইয়ের জয়যাত্রা — বৈচিত্র্য, প্রতিভা ও সংস্কৃতির গ্লোবাল উদযাপন

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২০)

০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বাস্স্কাকভ তখন বলে চলেছে, ‘যুদ্ধজয়ের পর শান্তি? তা, কথাটা শুনতে মন্দ লয় কিন্তু। আমরা কনস্টানতিনোপ্ল্ জিতে লিব। ওই কনস্টানতিনোপ্‌ল্টা আমাদের বড়ই দরকার! তারপর লড়াই করতি করতি একসময় বার্লিনও জিতে লিব আমরা। তা তো হল, কিন্তু আমি শুধোই,’ লাগাম-হাতে দাওয়ায়-বসা সেই কৃষক ইতিমধ্যে ঠেলেঠুলে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর দিকে একটা আঙুল উ’চিয়ে এবার বাস্স্কাকভ বলল, ‘তোমারেই শুধোই, কও দেখি, জার্মানরা কিংবা তুকরা কি তোমার কাচ থেকে ধার লিয়ে শুষতে চাইছি নার্স নিতে দেখি ভালোমানুষের পো, কনস্টানতিনোপলে, যাওয়ায় তোমার কামটা কী? তুমি কি

ওখেনকার বাজারে আল, চালান দিতে চাও? কথা কও না কেন? কয়ে ফ্যালো।’ কৃষকটি লাল হয়ে উঠে চোখ পিটপিট করতে লাগলেন। তারপর সামনের দিকে হাত ছড়িয়ে দিয়ে রাগত সুরে জবাব দিলেন:

‘কনস্টানতিনোপুল, চাই কীসের জন্যি? মোটেই চাই নে, একদম চাই নে!’ ‘তাইলে? তুমি চাও না, আমি চাই না, এখানে কেউই চায় না তা। চায় খালি মহাজন-ব্যাপারীরা। ওরা লাভের ব্যবসা চালাতি চায়। তা, ওরা যদি চায় তো নিজেরাই লড়াই করুক না কেন। চাষীদের এ-লিয়ে লড়াই করার কী আছে? তাইলে তোমাদের গাঁয়ের আদ্ধেক নোকরে ফ্রন্টে চালান করি দিয়েচে কেন, শুনি? মহাজনরে লাভের মণ্ডা হাতিয়ে লিতে সাহায্য করতি? আচ্ছা হাবাগৰা লোক তো তোমরা। ইয়া-ইয়া পালোয়ান, লম্বা-লম্বা দাড়ি সব, অথচ যে-কেউ কড়ে আঙুলে তুলি লাচাতি পারে।’

‘ঠিক! ঠিক কয়েচ!’ উরুতে চাপড় মেরে সেই কৃষকটি বললেন। ‘চোখের মাথা খেয়ে বসেচি। নোকটা খাঁটি কথা কয়েচে।’ বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মাথা হেট করে রইলেন কৃষকটি।

‘তাইলে শোন আমাদের বক্তব্য,’ শেষ করার আগে বাস্কাকভ বললে, ‘আমরা বলি, যুদ্ধ জয়ফয় শেষ করে শান্তি চাই না আমরা, বাড়ির মরদরা সব মরে ভূত হোক, আরও হাজার হাজার মজুর চাষী কানা-খোঁড়া-পঙ্গু হোক এ আমরা চাই না – এখুনি শান্তি চাই আমরা, তা সে যুদ্ধজয় হোক আর নাই হোক। আমাদের নিজেদের দেশেই তো আমরা জমিদারবাবুদের যুদ্ধে হারাতে পারি নি এখনও। কেমন, কথাটা খাঁটি কিনা, ভাইসব? যদি এতে কারো অমত থাকে তো সে আসুক সামনে, কয়ে যাক আমি মিথ্যেবাদী, কয়ে যাক আমি খাঁটি কথা কচ্চি না। আর আমার কিছু কওয়ার নেই!’

এখনও মনে পড়ে, জনতার মধ্যে একটা আর্ত চিৎকার ফেটে পড়ল। ‘এস-আর’ কুলিকভ রক্তশূন্য মুখে মঞ্চে লাফিয়ে উঠে হাত নেড়ে-নেড়ে সবাইকে চুপ করিয়ে কিছু বলতে চাইল। কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে লোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে।