০৯:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে ইরানে চীনা বিনিয়োগ অনিশ্চিত, তবু মধ্যপ্রাচ্যের আহ্বান অটুট

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২০)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • 17

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বাস্স্কাকভ তখন বলে চলেছে, ‘যুদ্ধজয়ের পর শান্তি? তা, কথাটা শুনতে মন্দ লয় কিন্তু। আমরা কনস্টানতিনোপ্ল্ জিতে লিব। ওই কনস্টানতিনোপ্‌ল্টা আমাদের বড়ই দরকার! তারপর লড়াই করতি করতি একসময় বার্লিনও জিতে লিব আমরা। তা তো হল, কিন্তু আমি শুধোই,’ লাগাম-হাতে দাওয়ায়-বসা সেই কৃষক ইতিমধ্যে ঠেলেঠুলে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর দিকে একটা আঙুল উ’চিয়ে এবার বাস্স্কাকভ বলল, ‘তোমারেই শুধোই, কও দেখি, জার্মানরা কিংবা তুকরা কি তোমার কাচ থেকে ধার লিয়ে শুষতে চাইছি নার্স নিতে দেখি ভালোমানুষের পো, কনস্টানতিনোপলে, যাওয়ায় তোমার কামটা কী? তুমি কি

ওখেনকার বাজারে আল, চালান দিতে চাও? কথা কও না কেন? কয়ে ফ্যালো।’ কৃষকটি লাল হয়ে উঠে চোখ পিটপিট করতে লাগলেন। তারপর সামনের দিকে হাত ছড়িয়ে দিয়ে রাগত সুরে জবাব দিলেন:

‘কনস্টানতিনোপুল, চাই কীসের জন্যি? মোটেই চাই নে, একদম চাই নে!’ ‘তাইলে? তুমি চাও না, আমি চাই না, এখানে কেউই চায় না তা। চায় খালি মহাজন-ব্যাপারীরা। ওরা লাভের ব্যবসা চালাতি চায়। তা, ওরা যদি চায় তো নিজেরাই লড়াই করুক না কেন। চাষীদের এ-লিয়ে লড়াই করার কী আছে? তাইলে তোমাদের গাঁয়ের আদ্ধেক নোকরে ফ্রন্টে চালান করি দিয়েচে কেন, শুনি? মহাজনরে লাভের মণ্ডা হাতিয়ে লিতে সাহায্য করতি? আচ্ছা হাবাগৰা লোক তো তোমরা। ইয়া-ইয়া পালোয়ান, লম্বা-লম্বা দাড়ি সব, অথচ যে-কেউ কড়ে আঙুলে তুলি লাচাতি পারে।’

‘ঠিক! ঠিক কয়েচ!’ উরুতে চাপড় মেরে সেই কৃষকটি বললেন। ‘চোখের মাথা খেয়ে বসেচি। নোকটা খাঁটি কথা কয়েচে।’ বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মাথা হেট করে রইলেন কৃষকটি।

‘তাইলে শোন আমাদের বক্তব্য,’ শেষ করার আগে বাস্কাকভ বললে, ‘আমরা বলি, যুদ্ধ জয়ফয় শেষ করে শান্তি চাই না আমরা, বাড়ির মরদরা সব মরে ভূত হোক, আরও হাজার হাজার মজুর চাষী কানা-খোঁড়া-পঙ্গু হোক এ আমরা চাই না – এখুনি শান্তি চাই আমরা, তা সে যুদ্ধজয় হোক আর নাই হোক। আমাদের নিজেদের দেশেই তো আমরা জমিদারবাবুদের যুদ্ধে হারাতে পারি নি এখনও। কেমন, কথাটা খাঁটি কিনা, ভাইসব? যদি এতে কারো অমত থাকে তো সে আসুক সামনে, কয়ে যাক আমি মিথ্যেবাদী, কয়ে যাক আমি খাঁটি কথা কচ্চি না। আর আমার কিছু কওয়ার নেই!’

এখনও মনে পড়ে, জনতার মধ্যে একটা আর্ত চিৎকার ফেটে পড়ল। ‘এস-আর’ কুলিকভ রক্তশূন্য মুখে মঞ্চে লাফিয়ে উঠে হাত নেড়ে-নেড়ে সবাইকে চুপ করিয়ে কিছু বলতে চাইল। কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে লোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে।

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩)

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২০)

০৮:০০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বাস্স্কাকভ তখন বলে চলেছে, ‘যুদ্ধজয়ের পর শান্তি? তা, কথাটা শুনতে মন্দ লয় কিন্তু। আমরা কনস্টানতিনোপ্ল্ জিতে লিব। ওই কনস্টানতিনোপ্‌ল্টা আমাদের বড়ই দরকার! তারপর লড়াই করতি করতি একসময় বার্লিনও জিতে লিব আমরা। তা তো হল, কিন্তু আমি শুধোই,’ লাগাম-হাতে দাওয়ায়-বসা সেই কৃষক ইতিমধ্যে ঠেলেঠুলে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর দিকে একটা আঙুল উ’চিয়ে এবার বাস্স্কাকভ বলল, ‘তোমারেই শুধোই, কও দেখি, জার্মানরা কিংবা তুকরা কি তোমার কাচ থেকে ধার লিয়ে শুষতে চাইছি নার্স নিতে দেখি ভালোমানুষের পো, কনস্টানতিনোপলে, যাওয়ায় তোমার কামটা কী? তুমি কি

ওখেনকার বাজারে আল, চালান দিতে চাও? কথা কও না কেন? কয়ে ফ্যালো।’ কৃষকটি লাল হয়ে উঠে চোখ পিটপিট করতে লাগলেন। তারপর সামনের দিকে হাত ছড়িয়ে দিয়ে রাগত সুরে জবাব দিলেন:

‘কনস্টানতিনোপুল, চাই কীসের জন্যি? মোটেই চাই নে, একদম চাই নে!’ ‘তাইলে? তুমি চাও না, আমি চাই না, এখানে কেউই চায় না তা। চায় খালি মহাজন-ব্যাপারীরা। ওরা লাভের ব্যবসা চালাতি চায়। তা, ওরা যদি চায় তো নিজেরাই লড়াই করুক না কেন। চাষীদের এ-লিয়ে লড়াই করার কী আছে? তাইলে তোমাদের গাঁয়ের আদ্ধেক নোকরে ফ্রন্টে চালান করি দিয়েচে কেন, শুনি? মহাজনরে লাভের মণ্ডা হাতিয়ে লিতে সাহায্য করতি? আচ্ছা হাবাগৰা লোক তো তোমরা। ইয়া-ইয়া পালোয়ান, লম্বা-লম্বা দাড়ি সব, অথচ যে-কেউ কড়ে আঙুলে তুলি লাচাতি পারে।’

‘ঠিক! ঠিক কয়েচ!’ উরুতে চাপড় মেরে সেই কৃষকটি বললেন। ‘চোখের মাথা খেয়ে বসেচি। নোকটা খাঁটি কথা কয়েচে।’ বলে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মাথা হেট করে রইলেন কৃষকটি।

‘তাইলে শোন আমাদের বক্তব্য,’ শেষ করার আগে বাস্কাকভ বললে, ‘আমরা বলি, যুদ্ধ জয়ফয় শেষ করে শান্তি চাই না আমরা, বাড়ির মরদরা সব মরে ভূত হোক, আরও হাজার হাজার মজুর চাষী কানা-খোঁড়া-পঙ্গু হোক এ আমরা চাই না – এখুনি শান্তি চাই আমরা, তা সে যুদ্ধজয় হোক আর নাই হোক। আমাদের নিজেদের দেশেই তো আমরা জমিদারবাবুদের যুদ্ধে হারাতে পারি নি এখনও। কেমন, কথাটা খাঁটি কিনা, ভাইসব? যদি এতে কারো অমত থাকে তো সে আসুক সামনে, কয়ে যাক আমি মিথ্যেবাদী, কয়ে যাক আমি খাঁটি কথা কচ্চি না। আর আমার কিছু কওয়ার নেই!’

এখনও মনে পড়ে, জনতার মধ্যে একটা আর্ত চিৎকার ফেটে পড়ল। ‘এস-আর’ কুলিকভ রক্তশূন্য মুখে মঞ্চে লাফিয়ে উঠে হাত নেড়ে-নেড়ে সবাইকে চুপ করিয়ে কিছু বলতে চাইল। কিন্তু ওকে ধাক্কা দিয়ে লোকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে।