ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
ভাষার বাঁধন-অর্থবিন্যাস, শব্দ ও ধ্বনির বিস্তার বিশ্লেষণ করে অন্য একটি তথ্যজগতের কাছে গিয়ে উপস্থিত হই আমরা। ইনকাদের ভাষা এবং তার ঐতিহ্য হল এই প্রক্রিয়ার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ইনকাদের মধ্যে প্রধানত যে ভাষা প্রচলিত তার নাম হল কেচুয়া (Quechua)। এছাড়া আইমরা (Ayymara) জনগোষ্ঠীর ভাষাও চালু আছে।
এই প্রাক স্পেনীয় সময়ের মূল ভাষার সঙ্গে কিছুটা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মত ঘটেছিল স্প্যানিস উপনিবেশ-এর ভাষা। এই কারণে ইনকাদের মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষার মধ্যে মিল ও অমিল লক্ষ্য করা যায়। আবার অন্যদিক থেকে ভারতীয় ভাষার মধ্যে সংস্কৃত ও তামিল-এর সঙ্গে ইনকা-ভাষার সংমিশ্রণ ঘটেছিল।

আবার সমাজ-বাণিজ্য এবং সেই সূত্রে সংস্কৃতির আদান- প্রদানের স্রোতে ইন্দোনেশিয়া, মালোয়েশিয়া ভাষাও অনেক সময় ঢুকে পড়েছিল। উদাহরণ হিসেবে ইনকাদের পরিচিত শব্দ মাংকো (Manco)-র সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার মাংকু (Mariku)-র মিল বা প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। মাংকু-উপাধি বা পদবি ইন্দোনেশিয়ার রাজারা ব্যবহার করেন। এর সঙ্গে আবার দক্ষিণ ভারতীয় আয়ার (Aiyar) জাতির কিছু মানুষ ইন্দোনেশিয়ায় এসেছিলেন এবং এর মধ্য থেকে কিছু শব্দ, প্রথা তারা গ্রহণ করেছিলেন।
এই পরিযায়ী অংশের একটি ছোট অংশ যখন পেরুতে প্রবেশ করে তখন আবার তারা পেরুতে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এইভাবেই ভারতবর্ষ, ইন্দোনেশিয়া, পেরু এবং আরো বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে লাতিন আমেরিকার মধ্যে ভাষা, প্রথা, সংস্কৃতির এক সহজ করিডর গড়ে উঠেছিল। সেই কারণে চূড়ান্তভাবে বলা যায় না নির্দিষ্ট একটি শব্দ, ভাষা, লোকশব্দ একটি বা এই অঞ্চলেরই একচেটিয়া সম্পদ।
(চলবে)
Sarakhon Report 



















