প্রদীপ কুমার মজুমদার
অঙ্কের বামদিকে গতি সম্পর্কে পরবর্তী কালে বিভিন্ন টীকাকার সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এদের মধ্যে গণেশ দৈবজ্ঞ, নৃসিংহ দৈবজ্ঞ ও মুনীশ্বরের নাম উল্লেখযোগ্য।গণেশ দৈবজ্ঞ বলেছেন:
‘গণনাক্রমঃ সর্বত্র সব্যক্রমেণৈব ভাব্যঃ। সর্বাত্রাপসব্যক্রমস্য শিষ্টগহিতত্বাদেকা- দিসংজ্ঞানাং বামক্রমমন্তরেণ গণনায়াঃ সব্যক্রমো ন সম্ভবতি। যখৈযামস্তানাং ১২৩৪ এক সহস্রং দ্বে শতে দশকত্রয়ং চত্বারশ্চেতি সব্যক্রমেণ গণনা স্যাৎ। লোকৈরপ্যনেনৈব ক্রমেণোচ্যতে। নতু চত্বারিত্রিংশন্বেশতে সহস্রমেবমিত্যুচ্যতে।
অপি চ কাল কীর্ত্তনং প্রয়োগেহপি পরার্দ্ধকল্পমন্বন্তর-যুগবৎসরাদিকং দেশকীর্ত্তনেহপি দ্বীপবর্ষখণ্ডাদিকং চ স্কুলসুম্মমিত্যনেনৈব ক্রমেণোচ্যতে। এবমুচ্যমানে গণনায়াঃ সব্যক্রমস্থানানাং বামক্রমো ভবতি। তম্মাদেকাদিস্থানানাং বামক্রমেণৈককাদিসংজ্ঞেতি সমাচারঃ।
‘ অর্থাৎ গণনাক্রম সর্বত্র সব্যক্রমেই হওয়া উচিত। যেহেতু অপসব্য ক্রম সর্বদাই শিষ্টগর্হিত। একক-দশকাদি সংখ্যার বামাগতি ব্যতিরেকে গণনায় সব্যক্রম হওয়া সম্ভব নহে। যেমন ১২৩৪, এই সংখ্যাটিকে এক হাজার দু’শ তিন দশক চার’ এই প্রকারে বলাই সব্যক্রমে গণনা; সেইজন্য লোকেও সেই প্রকার করিয়া থাকে। চার তিরিশ দু’শ এক হাজার কেউ বলে না।
আরও দেখ কাল বর্ণনা করিতে লোকে পরার্থ কল্প মন্বন্তর যুগ বৎসরাদিক্রমে করিয়া থাকে, দেশ বর্ণনা করিতে দ্বীপ-বর্ণ খণ্ডাদিক্রমে বলে। অর্থাৎ সর্বত্র বৃহত্তর হইতে ক্ষুদ্রতরের দিকে গতিক্রমেই লোকে (স্বভাবতঃ) বলিয়া থাকে। গণনাও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করিতে, অঙ্কস্থানের বামা- গতিই সব্যক্রম হইবে। সেই হেতু বামাগতিতেই অঙ্কস্থানের এককাদি সংজ্ঞা করা হইয়া থাকে। (অঙ্কানাং বামতো গতিঃ, বিভূতি ভূষণ দত্ত, সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা, ১৩৩৭, পৃঃ ৭৪)
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৫৮)