১১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫৫)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • 17

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কিন্তু বেভারিজ সাহেব এ বিষয়ের `কোন প্রমাণ প্রদর্শন করেন নাই এবং নন্দকুমারের বিচারে কমল উদ্দীনের সাক্ষ্যে ইহার কোনও প্রকার নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায় না। বেভারিজ সাহেব স্বীয় “নন্দকুমারের বিচার” গ্রন্থে এ বিষয়ে উত্তর প্রদান করিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন। তিনি এ বিষয়ে যে সমস্ত প্রমাণ প্রদর্শন করিয়াছেন, আমরা নিম্নে তাহার যথাযথ মর্ম্ম প্রদান করিতছি; সাধারণে তাহা হইতে উপলব্ধি করিতে পারিবেন।

বেভারিজ সাহেব স্বীয় গ্রন্থের পরিশিষ্টে এই বিষয় প্রমাণ করিবার জন্য একখানি পত্র ও তাহার উত্তরও প্রদান করিয়াছেন কমল উদ্দীন গঙ্গাগোবিন্দসিংহ প্রভৃতি কয়েকজনের নামে কাউন্সিলে অভিযোগ করিবার জন্য মহারাজ নন্দকুমারকে যে কয়েকখানি দরখাস্ত পেশ করিতে দেয়, বেভারিজ সাহেব বলেন যে, তাহার এক- খানিতে এইরূপ লেখা আছে-“বিলায়তি ১১৮১ সালের বৈশাখ মাসে রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, লোকনাথ নন্দীর জন্য আমার নিকট হইতে হিজলীর দরইজারা লয় এবং আর্চডেকিন সাহেব তাহার জামিন হন।”

ইহা হইতে স্পষ্ট অনুমান করা যাইতে পারে যে, কান্তবাবুর সহিত হিজলীর মহালের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল। কান্তবাবু সমস্ত জমিদারী ও নিমক-মহাল স্বীয় পুত্র লোকনাথের নামে লইতেন; বাহারবন্দ তাহার প্রমাণ। লোকনাথ সে সময়ে ১১/১২ বৎসরের বালক হইলেও, হেষ্টিংসকর্তৃক অর্থশালী ও বিশ্বস্ত বলিয়া কথিত হইতেন। রাজস্বসংক্রান্ত কাগজপত্রে লোকনাথ নন্দীর লবণের কারবার সম্বন্ধে অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়।

হেষ্টিংস কাউন্সিলে বলিয়াছিলেন যে, কমল উদ্দীনের পূর্ব্বে এই সমস্ত লবণের মহাল কান্তেরই ইজারা ছিল। যদিও তিনি দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলিয়াছিলেন যে, কমল ইজারা লওয়ায় কান্তের কোনও লাভ হয় নাই, কিন্তু কমলের দরখাস্ত হইতে জানা যায় যে, কান্ত বাবু রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে হিজলীর দরইজারা লন এবং বারওয়েল প্রভৃতির পত্রে প্রকাশ যে, কমলের দরইজারদারগণই মহাল হইতে প্রকৃত লাভ করি- তেন। ক্লেভারিং সাহেবও বলেন যে, কমল ও কান্ত দুই জনেই হিজলীর অংশীদার ছিলেন।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫৫)

১১:০০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কিন্তু বেভারিজ সাহেব এ বিষয়ের `কোন প্রমাণ প্রদর্শন করেন নাই এবং নন্দকুমারের বিচারে কমল উদ্দীনের সাক্ষ্যে ইহার কোনও প্রকার নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায় না। বেভারিজ সাহেব স্বীয় “নন্দকুমারের বিচার” গ্রন্থে এ বিষয়ে উত্তর প্রদান করিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন। তিনি এ বিষয়ে যে সমস্ত প্রমাণ প্রদর্শন করিয়াছেন, আমরা নিম্নে তাহার যথাযথ মর্ম্ম প্রদান করিতছি; সাধারণে তাহা হইতে উপলব্ধি করিতে পারিবেন।

বেভারিজ সাহেব স্বীয় গ্রন্থের পরিশিষ্টে এই বিষয় প্রমাণ করিবার জন্য একখানি পত্র ও তাহার উত্তরও প্রদান করিয়াছেন কমল উদ্দীন গঙ্গাগোবিন্দসিংহ প্রভৃতি কয়েকজনের নামে কাউন্সিলে অভিযোগ করিবার জন্য মহারাজ নন্দকুমারকে যে কয়েকখানি দরখাস্ত পেশ করিতে দেয়, বেভারিজ সাহেব বলেন যে, তাহার এক- খানিতে এইরূপ লেখা আছে-“বিলায়তি ১১৮১ সালের বৈশাখ মাসে রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, লোকনাথ নন্দীর জন্য আমার নিকট হইতে হিজলীর দরইজারা লয় এবং আর্চডেকিন সাহেব তাহার জামিন হন।”

ইহা হইতে স্পষ্ট অনুমান করা যাইতে পারে যে, কান্তবাবুর সহিত হিজলীর মহালের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল। কান্তবাবু সমস্ত জমিদারী ও নিমক-মহাল স্বীয় পুত্র লোকনাথের নামে লইতেন; বাহারবন্দ তাহার প্রমাণ। লোকনাথ সে সময়ে ১১/১২ বৎসরের বালক হইলেও, হেষ্টিংসকর্তৃক অর্থশালী ও বিশ্বস্ত বলিয়া কথিত হইতেন। রাজস্বসংক্রান্ত কাগজপত্রে লোকনাথ নন্দীর লবণের কারবার সম্বন্ধে অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়।

হেষ্টিংস কাউন্সিলে বলিয়াছিলেন যে, কমল উদ্দীনের পূর্ব্বে এই সমস্ত লবণের মহাল কান্তেরই ইজারা ছিল। যদিও তিনি দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলিয়াছিলেন যে, কমল ইজারা লওয়ায় কান্তের কোনও লাভ হয় নাই, কিন্তু কমলের দরখাস্ত হইতে জানা যায় যে, কান্ত বাবু রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে হিজলীর দরইজারা লন এবং বারওয়েল প্রভৃতির পত্রে প্রকাশ যে, কমলের দরইজারদারগণই মহাল হইতে প্রকৃত লাভ করি- তেন। ক্লেভারিং সাহেবও বলেন যে, কমল ও কান্ত দুই জনেই হিজলীর অংশীদার ছিলেন।