০৩:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২১) হলিউডের ‘হাইল্যান্ডার’ রিবুটে যোগ দিলেন কোরিয়ান তারকা জিওন জং-সিও অক্ষরের রহস্য: কেন ‘Q’-এর প্রয়োজন ‘U’ — ভাষার আত্মার এক বিস্ময়কর ইতিহাস নাসার চন্দ্র মিশনের গতি ফেরাতে ‘সবকিছু করবে’ ব্লু অরিজিন” ট্রাম্প বনাম সুপ্রিম কোর্ট: শুল্ক সংকটে নতুন আইনি লড়াই সম্ভাব্য বাজার ধসের পূর্বাভাস: ওয়াল স্ট্রিটও জানে না কখন আসবে পতন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫২) শেয়ারবাজারে ধস অব্যাহত: ডিএসই-তে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে সিটি ব্যাংক ও ইউনিসেফের চুক্তি: প্রান্তিক যুবকদের সবুজ দক্ষতায় সক্ষম করে তুলতে উদ্যোগ বিবিসি চেয়ারম্যানের ক্ষমাপ্রার্থনা: ট্রাম্পের বক্তৃতা সম্পাদনায় ‘বিচারের ভুল’ স্বীকার

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫৭)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
  • 40

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কাউন্সিল হইতেও তাঁহার সুবিধার জন্য হুকুম প্রদত্ত হইল। কান্ত বাবুর প্রায় জমিদারী ও মহাল লোক- নাথের নামে লওয়া হইত, কিন্তু কাউন্সিলে ও রাজস্বকমিটি প্রভৃতি স্থানে কর্তৃপক্ষগণ এরূপ সাহস অবলম্বন করিতেন যে, কান্ত বাবুর নিজ নামে সমস্ত কথাবার্তা চালাইতে তাঁহারা কিছুমাত্র কুণ্ঠিত হইতেন না। উপরোক্ত পত্র হইতে ইহা বেশ বুঝা যায়।

যদিও কোম্পানীর নিয়মা- মুসারে কোন সরকারী কর্মচারীর বেনিয়ান বা পেস্কারাদি কোন জমি- দারী বা ফারম ইজারা লইতে পারিত না, তথাপি লোকনাথের নামে- কান্ত বাবুকে জমিদারী মহালাদি প্রদান করিয়া, তাঁহারা অনেক সময়ে *প্রকাশ্যভাবে কান্ত বাবুর নাম করিয়া তর্ক বিতর্ক করিয়াছেন। তাঁহারা যে অনেক সময়ে ডিরেক্টর প্রভৃতির আদেশ অবহেলা করিতেন, ইহা হইতে তাহা বেশ বুঝা যায়। উপরোক্ত পত্র ও তাহার উত্তর ১৭৭৪ খৃঃ অব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে লিখিত হয়। কমল উদ্দীন ১৭৭২ খৃঃ অব্দে হিজলীর ইজারদার নিযুক্ত হয়।

পূর্ব্বে একস্থানে লিখিত হইয়াছে যে, হেষ্টিংস দুঃখ করিয়া বলিয়াছিলেন যে, কমল উদ্দীন হিজলীর ইজারা লওয়ায় কান্তের লোকসান হইতেছে। সুতরাং বুঝা যাইতেছে যে, কমল উদ্দীন ইজারদার হইবার পূর্ব্বে ও পরে কান্তের সহিত হিজলীর লবণ মহালের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল, এবং তাঁহার লাভের যাহাতে ক্ষতি না হয়, তদ্বিষয়ে কর্তৃপক্ষগণেরও বিশেষ দৃষ্টি ছিল। কমল উদ্দীনও প্রকাশ করিয়াছে, লোকনাথ রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে হিজলীর দরইজারা লইয়াছেন।

ইত্যাদি কারণে কমল উদ্দীন স্পষ্টতঃ কান্ত বাবুর বেনামদার না হইলেও, কমলের সহিত তাঁহার যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল, তাহাতে অণুমাত্র সন্দেহ নাই। সুতরাং ষ্টীফেন সাহেব বেভারিজ সাহেবকে প্রমাণাভাবে যে দোষ দিয়াছেন, তাহা সঙ্গত নহে। এইরূপে আমরা দেখিতে পাই যে, তৎকালে এ দেশে যে কোন লাভকর জমি- দারী বা মহাল ছিল, কান্ত বাবুর সহিত তাহাদের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল। হেষ্টিংসের যত্নে চঞ্চলা লক্ষ্মী অনেক লোককে পরিত্যাগ করিয়া, কান্ত বাবুকে আশ্রয় করিতে বাধ্য হন। পরিবর্তনশীলা স্রোতস্বিনীর ন্যায় ভাগ্যলক্ষ্মীও বৈচিত্র্যময়ী।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩২১)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৫৭)

১১:০০:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কাউন্সিল হইতেও তাঁহার সুবিধার জন্য হুকুম প্রদত্ত হইল। কান্ত বাবুর প্রায় জমিদারী ও মহাল লোক- নাথের নামে লওয়া হইত, কিন্তু কাউন্সিলে ও রাজস্বকমিটি প্রভৃতি স্থানে কর্তৃপক্ষগণ এরূপ সাহস অবলম্বন করিতেন যে, কান্ত বাবুর নিজ নামে সমস্ত কথাবার্তা চালাইতে তাঁহারা কিছুমাত্র কুণ্ঠিত হইতেন না। উপরোক্ত পত্র হইতে ইহা বেশ বুঝা যায়।

যদিও কোম্পানীর নিয়মা- মুসারে কোন সরকারী কর্মচারীর বেনিয়ান বা পেস্কারাদি কোন জমি- দারী বা ফারম ইজারা লইতে পারিত না, তথাপি লোকনাথের নামে- কান্ত বাবুকে জমিদারী মহালাদি প্রদান করিয়া, তাঁহারা অনেক সময়ে *প্রকাশ্যভাবে কান্ত বাবুর নাম করিয়া তর্ক বিতর্ক করিয়াছেন। তাঁহারা যে অনেক সময়ে ডিরেক্টর প্রভৃতির আদেশ অবহেলা করিতেন, ইহা হইতে তাহা বেশ বুঝা যায়। উপরোক্ত পত্র ও তাহার উত্তর ১৭৭৪ খৃঃ অব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে লিখিত হয়। কমল উদ্দীন ১৭৭২ খৃঃ অব্দে হিজলীর ইজারদার নিযুক্ত হয়।

পূর্ব্বে একস্থানে লিখিত হইয়াছে যে, হেষ্টিংস দুঃখ করিয়া বলিয়াছিলেন যে, কমল উদ্দীন হিজলীর ইজারা লওয়ায় কান্তের লোকসান হইতেছে। সুতরাং বুঝা যাইতেছে যে, কমল উদ্দীন ইজারদার হইবার পূর্ব্বে ও পরে কান্তের সহিত হিজলীর লবণ মহালের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল, এবং তাঁহার লাভের যাহাতে ক্ষতি না হয়, তদ্বিষয়ে কর্তৃপক্ষগণেরও বিশেষ দৃষ্টি ছিল। কমল উদ্দীনও প্রকাশ করিয়াছে, লোকনাথ রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে হিজলীর দরইজারা লইয়াছেন।

ইত্যাদি কারণে কমল উদ্দীন স্পষ্টতঃ কান্ত বাবুর বেনামদার না হইলেও, কমলের সহিত তাঁহার যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ ছিল, তাহাতে অণুমাত্র সন্দেহ নাই। সুতরাং ষ্টীফেন সাহেব বেভারিজ সাহেবকে প্রমাণাভাবে যে দোষ দিয়াছেন, তাহা সঙ্গত নহে। এইরূপে আমরা দেখিতে পাই যে, তৎকালে এ দেশে যে কোন লাভকর জমি- দারী বা মহাল ছিল, কান্ত বাবুর সহিত তাহাদের বিশেষ সম্বন্ধ ছিল। হেষ্টিংসের যত্নে চঞ্চলা লক্ষ্মী অনেক লোককে পরিত্যাগ করিয়া, কান্ত বাবুকে আশ্রয় করিতে বাধ্য হন। পরিবর্তনশীলা স্রোতস্বিনীর ন্যায় ভাগ্যলক্ষ্মীও বৈচিত্র্যময়ী।