প্রদীপ কুমার মজুমদার
এক মহাযুগে প্রদক্ষিণ করে “খদস্রাক্ষিবেদযড়বহ্নি” বার। এখানে খ (=০), দস্র (২) অক্ষি (=২), বেদ (=৪) যড় (=৬), বহ্নি (=৩)। এগুলিকে ভারতীয় নিয়ম “অঙ্কানাং বামতো গতিঃ বিধিতে লিখলে দাঁড়ায় ৩৬৪২২০; অতএব বৃহস্পতি এক মহা- যুগে ৩৬৪২২০ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে।
ঠিক এইভাবে পাওয়া যায় গুণরস-৫৩, শশিষমশর = ৫২১, সমূদ্রবসুবিষয়= ৫৮৪, পরাম=৩০, রসার্ক=১২৬, খেযব=৫০, খযুগা=৪০, খার্ণব-৪০, খরস-৬০, বেদাগ্নি-৩৪, বাণগুণ-৩৫, বসবাণাক্ষি = ২৫৬, খচতুষ্করদার্ণবাঃ- ৪০২০০০০, এই পদ্ধতিতে কি ধরণের সুবিধা এবং অসুবিধা আছে তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে কৌতূহল আছে।
গণিত ঐতিহাসিক বিভূতিভূষণ দত্ত বলেছেন-এই সংখ্যার উল্লেখের পিছনে মূলত তিনটি কারণ আছে। সেগুলি হচ্ছে (ক) এই পদ্ধতি ছন্দের উপযোগী, (খ) এই পদ্ধতিতে কোন বড় সংখ্যাকে ছোট করে লেখা যায়। যেমন ১৪৩৩২৪ একটি বড় সংখ্যা। কিন্তু নাম সংখ্যার দৌলতে এটি লেখা হয় “বেদযুগগুণরামাব্দি চন্দ্র”।
তাছাড়াও সমুদ্ররদহুতাশন মনু অথবা জিনরামমনু প্রভৃতি এই সংখ্যাটির পরিবর্তে লেখা হয়ে থাকে। (গ) সংখ্যার বিশুদ্ধি রক্ষণ করতে এ পদ্ধতি এক আশ্চর্য ফল দেয়। অনেক সময় দেখা যায় পরবর্তী লেখকেরা কখনও সংখ্যা পাতন করতে গিয়ে এক বা একাধিক সংখ্যা চিহ্ন বসাতে ভুলে গিয়েছেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে বসান নাই। কিন্তু নাম সংখ্যা ব্যবহৃত হলে এ ধরণের ভ্রান্তি কম হয়ে থাকে।
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৬১)