সারাক্ষণ রিপোর্ট
রমজান ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ইতিমধ্যেই প্রায় সর্বকালের শীর্ষে পৌঁছেছে এবং ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো আরও বড় সংকটের আশঙ্কা করছে।
অস্থায়ী সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, পবিত্র রমজান মাসে প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজারে সিন্ডিকেট সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবছর রমজানের সময় বিভিন্ন অজুহাতে মূল্য বৃদ্ধি একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো আশার আলো দেখা যায় না।
২০২৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, কারণ লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি শুধু ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করেনি, অন্যান্য ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতিকেও ম্লান করে দিয়েছে।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের নভেম্বরে মুদ্রাস্ফীতির হার গড়ে ১১.৩৮%-এ পৌঁছেছে, যা এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
জুলাইয়ে এটি ১১.৬৬%-এ পৌঁছায়, যা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও খারাপ অবস্থায় পড়ে।
খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, যা গৃহস্থালির ব্যয়ের একটি বড় অংশ এবং ভোক্তা মূল্য সূচকে (সিপিআই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এই উল্লম্ফনের মূল কারণ ছিল।
বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সারা বছর ১২-১৪%-এর মধ্যে ছিল, কারণ চাল, ভোজ্যতেল এবং শাকসবজির দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, উচ্চ ইউটিলিটি বিল এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ফল।
বর্তমানে শাক সবজির দাম কমেছে ঠিকই তবে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের বক্তব্য হলো রমজানে শাক সবজির প্রয়োজনীয়তা কম থাকে। রমজানে, চালের পাশাপাশি তেল, ডাল, মাংস, চিনি, দুধ, ফলমুল এগুলোর প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকে। বর্তমানে এগুলোর সবই দাম বাড়তি।
গুলশানের গ্রোসারি শপের এক মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছে শুধু ভ্যাট নয় ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে ডালের দাম যেটা ১৮০ টাকা আছে তা শীঘ্রই দু’শ টাকা হবে।
অন্যদিকে একজন আমদানীকারক বলছেন, সরকার এক বছরের ডেফার এল সি নীতি ঘোষণা করেছে ঠিকই। কিন্তু বাস্তবে ব্যাংক গুলোর পক্ষে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি ইতোমধ্যে দুটি ব্যাংকে গিয়ে নিরাশ হয়েছেন।
তাই স্বাভাবি্কই প্রশ্ন সরকারের উদ্যোগের পরেও রমজানে বাজার ঠিক রাখা কি সম্ভব হবে? মূল্যস্ফীতি রমজানে আরো অস্বাভাবিক হবে বলে মনে করেন একজন শিল্পপতি যিনি চেম্বারের সঙ্গে জড়িত।