সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে
২. কাঁচা মাল ও ডলার সংকট অন্যতম বাধা হয়ে দাড়িয়েছে
৩. অক্টোবর মাসে উপদেষ্টাকে জানানো হলেও এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি
৪. ঋন সুদ বিহীনভাবে ব্লক ও পরিশোধের সময়কাল ১৫ করার দাবী এসোসিয়েশানের
বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, এই শিল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা, যেখানে ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ কর্মরত। বর্তমান বাস্তবতায় এই শিল্প ও ২৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এখন হুমকির মুখে।
অথচ দেশের কাগজ শিল্প, যা একসময় স্বয়ংসম্পূর্ন ছিলো সফল বর্তমানে অতিরিক্ত উৎপাদন, যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ, এবং বিক্রয়ের মন্দার কারণে টিকে থাকার সংকটে পড়েছে। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে অনেক কাগজ মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যা উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থান হারানো ও বিনিয়োগ ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় ১০০টি বেসরকারি কাগজ মিলের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৭০টি বন্ধ হয়ে গেছে, এবং আরও কয়েকটি ঋণ খেলাপির কারণে বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে অর্থ উপদেষ্টাকে পাঠানো এক চিঠিতে অ্যাসোসিয়েশন এই সংকটের কথা উল্লেখ করেছে।
চিঠিতে বকেয়া ঋণ সুদবিহীনভাবে ব্লক হিসাবে স্থানান্তর, দুই বছরের স্থগিতাদেশ, ১৫ বছরের পরিশোধকাল এবং নতুন কার্যকরী মূলধনের জন্য সুদের হার হ্রাসের অনুরোধ করা হয়।

উদ্যোক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে আমদানি নির্ভর কাগজ শিল্পে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ শুরু হয়। এটি ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে প্রায় ৪০টি দেশে কাগজ ও কাগজজাত পণ্য রপ্তানি শুরু করে।
তবে, কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, বৈশ্বিক কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি এবং জ্বালানি খরচ বৃদ্ধির ফলে শিল্পটি বড় সংকটের মুখে পড়ে।
পেপার মিল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, “অনেক মিল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে, এবং বর্তমানে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি ও ঘাটতির কারণে আরও কয়েকটি বন্ধ হওয়ার পথে। চাহিদা হ্রাসের ফলে অনেক মিল ঋণ খেলাপি হয়েছে।”
অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বার্ষিক কাগজের চাহিদা ৯ লাখ টন, যেখানে উৎপাদন প্রায় ১৫ লাখ টন।
মিল বন্ধের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য সময়মতো কাগজ সরবরাহ ব্যাহত হবে। “এই খাতের সাথে জড়িত ৩০০টিরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্প এবং প্রায় ১ কোটি কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়বে। শিল্পটি আবার আমদানিনির্ভর হয়ে পড়বে,” তিনি বলেন। তারা প্রমান হিসেবে বলছে সরকার যে শুধু বই সংস্কারের জন্যে এবার শিশুদের হাতে পাঠ্য পুস্তক এখনো দিতে পারেনি তা নয়, কাগজ সংকটও রয়েছে।
তাদের মতে যদি কাগজ শিল্প ধসে পড়ে, তবে সরকার প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে দেশ।
Sarakhon Report 


















