০২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৬১)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 18

শশাঙ্ক মণ্ডল

আদিবাসী মহিলারা লেখাপড়া না জানুক কিন্তু তাদের আদরের টুসু বড় হচ্ছে, ইংবেজি বিদ্যালয়ে তাকে পাঠাবার বাসনা প্রকাশ করেছে গায়করা। টুসু আরও বড় হয়েছে-জীবনের অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন-কলকাতা দেখে সরল গ্রাম্য আদিবাসীদের বিস্ময় গানের মধ্য দিয়ে টুসুর নামে প্রকাশিত হচ্ছে

পথ ছেড়ে দে পথ ছেড়ে দে

টুসু যাবে কলকাতা

কলকাতায় দেখে এলাম লোহার খুটে বাঘ বান্ধা

ঐ বাঘে কি মানুষ ধরে

দেখবো বাঘের তামাসা।।

টুসুর জীবনে পরিবর্তন আসে কৈশোর থেকে যৌবন। যৌবনের কৌতুহল তাকে পেয়ে বসে। দেহমনে আসে চঞ্চলতা।

বাড়ীর ধারে ফুল গাছটা ফুল ঝটাপট করিলো

শেষ রাতে কোকিল ডাকে টুসুর মনটা ভুলাইলো।

টুসুর বিয়ের ব্যবস্থা করা হল গৃহবধূ হিসাবে সংসারে প্রবেশ করেছ। শাশুড়ি তাকে উপদেশ দিচ্ছে-

তেল দিও সলতে দিও সঙ্গে দিও বাতি গো

সন্ধে দিয়ে বেরোও টুসু ঘরের কুলবতী গো।।

টুসুকে গানের মধ্য দিয়ে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে-

সব পাড়ায় যেও টুসু। উত্তর পাড়ায় যেও না। উত্তর পাড়ায় জোড়া সতীন পান দিলে পান খেয়ো না।

সতীন এবং তার যন্ত্রণা, ঐন্দ্রজালিক বিশ্বাস আদিম সমাজের কুসংস্কার ও বিশ্বাস সব কিছুই গানের মধ্যে ধরা পড়ে। শিশুসুলভ কল্পনা পাখা মেলে নতুন জিনিস দেখে বিস্ময়ে আবিষ্ট হয়।

রাস্তার ধারে শিরিষ গাছটা

কেটে করবো রেলগাড়ী,

সেই গাড়ীতে চেপে যাব

বোনাই শালার ঘর বাড়ী।

রেলগাড়ী চড়ার স্বপ্ন দেখে সে তাই পূর্ণ করার জন্য রাস্তার শিরিষ গাছ কেটে রেলগাড়ি বানানোর স্বপ্ন দেখে। আদিম শিশুসুলভ কল্পনাবিলাস মাঝে মাঝে মাথাচড়া দিয়ে ওঠে।

কলকাতাতে দেখে এলাম শিকড়ে বেল ধরেছে

ঐ ছেলেটার পয়সা নাই যে বৌ বেচে বেল খেয়েছে।

অবাক বিস্ময় ভরা চোখে অসম্ভব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে। সভ্যতার ব্যাধি কল্পনাকে গ্রাস করে, বৌ বেচে বেল খেয়েছে।

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৬১)

১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শশাঙ্ক মণ্ডল

আদিবাসী মহিলারা লেখাপড়া না জানুক কিন্তু তাদের আদরের টুসু বড় হচ্ছে, ইংবেজি বিদ্যালয়ে তাকে পাঠাবার বাসনা প্রকাশ করেছে গায়করা। টুসু আরও বড় হয়েছে-জীবনের অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন-কলকাতা দেখে সরল গ্রাম্য আদিবাসীদের বিস্ময় গানের মধ্য দিয়ে টুসুর নামে প্রকাশিত হচ্ছে

পথ ছেড়ে দে পথ ছেড়ে দে

টুসু যাবে কলকাতা

কলকাতায় দেখে এলাম লোহার খুটে বাঘ বান্ধা

ঐ বাঘে কি মানুষ ধরে

দেখবো বাঘের তামাসা।।

টুসুর জীবনে পরিবর্তন আসে কৈশোর থেকে যৌবন। যৌবনের কৌতুহল তাকে পেয়ে বসে। দেহমনে আসে চঞ্চলতা।

বাড়ীর ধারে ফুল গাছটা ফুল ঝটাপট করিলো

শেষ রাতে কোকিল ডাকে টুসুর মনটা ভুলাইলো।

টুসুর বিয়ের ব্যবস্থা করা হল গৃহবধূ হিসাবে সংসারে প্রবেশ করেছ। শাশুড়ি তাকে উপদেশ দিচ্ছে-

তেল দিও সলতে দিও সঙ্গে দিও বাতি গো

সন্ধে দিয়ে বেরোও টুসু ঘরের কুলবতী গো।।

টুসুকে গানের মধ্য দিয়ে উপদেশ দেওয়া হচ্ছে-

সব পাড়ায় যেও টুসু। উত্তর পাড়ায় যেও না। উত্তর পাড়ায় জোড়া সতীন পান দিলে পান খেয়ো না।

সতীন এবং তার যন্ত্রণা, ঐন্দ্রজালিক বিশ্বাস আদিম সমাজের কুসংস্কার ও বিশ্বাস সব কিছুই গানের মধ্যে ধরা পড়ে। শিশুসুলভ কল্পনা পাখা মেলে নতুন জিনিস দেখে বিস্ময়ে আবিষ্ট হয়।

রাস্তার ধারে শিরিষ গাছটা

কেটে করবো রেলগাড়ী,

সেই গাড়ীতে চেপে যাব

বোনাই শালার ঘর বাড়ী।

রেলগাড়ী চড়ার স্বপ্ন দেখে সে তাই পূর্ণ করার জন্য রাস্তার শিরিষ গাছ কেটে রেলগাড়ি বানানোর স্বপ্ন দেখে। আদিম শিশুসুলভ কল্পনাবিলাস মাঝে মাঝে মাথাচড়া দিয়ে ওঠে।

কলকাতাতে দেখে এলাম শিকড়ে বেল ধরেছে

ঐ ছেলেটার পয়সা নাই যে বৌ বেচে বেল খেয়েছে।

অবাক বিস্ময় ভরা চোখে অসম্ভব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে। সভ্যতার ব্যাধি কল্পনাকে গ্রাস করে, বৌ বেচে বেল খেয়েছে।