ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের কোনো চিকিৎসকের কথা ভাবলে সাধারণত সাদা পোশাক পরা, লম্বা দাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধের ছবি ভেসে ওঠে কল্পনায়। তবে এ ধারণা বদলে দিয়েছে ‘দ্য বেস্ট থিং’ নাটকটি। এর প্রধান চরিত্র তরুণ চিকিৎসক হ্য সুয়ে বদলে দিয়েছেন চিরায়ত এ ধারণা। এ নাটকে তিনি একজন টিসিএম বিশেষজ্ঞ। নিজের পাশাপাশি পেশাটিকেও তুলে ধরছেন নতুনভাবে।
হ্য সুয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ২৭ বছর বয়সী চাং লিংহ্য। তিনি বললেন, ‘হ্য সুয়ে একজন শান্ত ও আধুনিক সময়ের জন্য উপযুক্ত টিসিএম চিকিৎসক।’
তার মতে, হ্য পরিশ্রমী ও পেশাদার চিকিৎসক। তবে কাজের বাইরে তিনি এমন একজন তরুণ, যার শখ স্কেটবোর্ডিং ও মালাথাং নামের মশলাদার একটি খাবার খাওয়া।
‘দ্য বেস্ট থিং’ নাটকটি সম্প্রচারিত হয়েছে চিয়াংসু টিভি এবং চীনের জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ইছিয়িতে। একটি উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত নাটকটিতে আছেন শেন শিফান নামের এক কাজপাগল হোটেল ম্যানেজার, যিনি মাইগ্রেন ও নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন। চিকিৎসার জন্য তিনি হ্য সুয়ের সঙ্গে পরিচিত হন এবং ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এ নাটকে অভিনয়ের জন্য, চাংকে শিখতে হয়েছে চীনা চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি। অ্যাকুপাংচার, পালস ডায়াগনোসিস, এবং মক্সিবশনও শিখেছেন তিনি।
‘এটা আমার প্রথম চিকিৎসক চরিত্র’, বললেন চাং।
‘এতে অভিনয় করতে গিয়ে টিসিএম-এর দর্শন ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আমার গভীর বোঝাপড়া হয়েছে।’
নাটকটির প্রতিটি পর্বে টিসিএম এর নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া, নাটকটিতে টিসিএম-এর কিছু ক্লিনিক্যাল প্রয়োগও দেখানো হয়েছে, যেমন ‘ভেজা কাপিং’ পদ্ধতি, যা শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
নাটকে দেখানো চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে কুয়াং’আনমেন হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক এবং এ নাটকের পরামর্শক চাং ইয়িং জানালেন, ‘এটি টিসিএম-এর জরুরি চিকিৎসার একটি উদাহরণ।’
নাটকটি তরুণদের মধ্যে টিসিএম সম্পর্কে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। চাং ইয়িং জানান, ‘চীনা যুবকরা এখন টিসিএম এবং হার্বাল পানীয়র প্রতি আগ্রহী।’
নাটকটি সম্প্রচারের পর, সামাজিক মাধ্যমে এক বিলিয়ন ভিউ এবং প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বার আলোচনা হয়েছে।
চাং লিংহ্য বিশ্বাস করেন, টিসিএম একটি সফল ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, যে কারণে তার চরিত্র হ্য সুয়েকে দেখা যায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি টিসিএমকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
সম্প্রতি, টিসিএম চীনা তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও এর গুরুত্ব বাড়ছে। অনেক দেশ আকুপাংচারকে স্বাস্থ্যবীমায় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং ২০২৪ সালের বিশ্ব ঐতিহ্য চিকিৎসা সম্মেলনও এই শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নাটকটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে এবং মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও দেখানো হবে।
সিএমজি বাংলা
Leave a Reply