০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৬৬)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
  • 21

শশাঙ্ক মণ্ডল

অবশেষে দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির উভয়ের সেবক হয়ে তাদের মাহাত্ম্য প্রচারে নেমে পড়েন। গীতিকাটির মধ্যে চারটি অংশ লক্ষ করা যায়। প্রথমত চন্দ্রকেতু এবং তার পতন। দ্বিতীয়ত দক্ষিণ রায়ের প্রতাপ ও তার কীর্তিকলাপ, তৃতীয়ত বনবিবির উপাখ্যান এবং সর্বশেষে বনবিবি ও দক্ষিণ রায়ের সমঝোতা এবং সেই থেকে উভয়ের একত্রে পূজার প্রচলন। হাসনাবাদ ও সোনারপুর (দুটি স্থানই ২৪ পরগণার অন্তর্গত) এলাকায় দুটি পুঁথির আবিষ্কার করেন বাংলা লোক-সাহিত্যের অন্যতম গবেষক চিত্তরঞ্জন দেব। হাসনাবাদে প্রাপ্ত পুঁথিতে গাজীপীরের প্রভাব বেশি লক্ষ করা যায়। এই পুঁথিতে কবি-পরিচয় এভাবে দেওয়া হয়েছে-

সেলাম সেলাম তোমায় গাজী পীর

কিবা দোষে করলে আমায় ঘরছাড়া

যেমুন চন্দ্রকেতু রাজার বাড়ি করলে ছারখার

অধম হারু তাই তোমায় সেলাম জানায় বারে বার।

অপরদিকে সোনারপুরে প্রাপ্ত সতী রুমুনা ঝুমুনা পালা পুঁথিটিতেকবির পরিচয় অংশে আমরা পাই

বাবা দক্ষিণ রায় ভাটি দেশের রাজা, বাদাবনের বনদেবী যে গো তাহারি মিতা। অধম জনার্দন মুই কি কহিতে পারি বনবিবি দক্ষিণ রায়ের নামে দিও জয়ধ্বনি।

চন্দ্রকেতুর যজ্ঞ নষ্ট করার ব্যাপারে স্বর্গরাজ ইন্দ্র চক্রান্ত করছেন গাজী পীরের সাথে-গাজী বড় খাঁ ছিল ভাটির অধিশ্বর তাহারে ইন্দ্র দিল এক নতুন সমাচার। ইন্দ্র বলে শোন গাজী, তুমি মোর দোস্ত। এক জরুরী বার্তা দিতে তোমায় করিয়াছি মনস্ত।

গীতিকাটি দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির মাহাত্ম্য প্রচার করার লক্ষ নিয়ে রচিত। বাউলে সম্প্রদায়ের কোন্ কবি এই পালার রচয়িতা তা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না। কবিত্ব শক্তির কোন পরিচয় এই পালার মধ্যে আদৌ লক্ষ করা যায় না। পালাটি কাঠুরিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে প্রচলিত ছিল একথা অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির পূজার শেষে পাঁচালী হিসাবে পালাটি অনেক জায়গায় গাওয়া হত।

 

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১৬৬)

১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

শশাঙ্ক মণ্ডল

অবশেষে দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির উভয়ের সেবক হয়ে তাদের মাহাত্ম্য প্রচারে নেমে পড়েন। গীতিকাটির মধ্যে চারটি অংশ লক্ষ করা যায়। প্রথমত চন্দ্রকেতু এবং তার পতন। দ্বিতীয়ত দক্ষিণ রায়ের প্রতাপ ও তার কীর্তিকলাপ, তৃতীয়ত বনবিবির উপাখ্যান এবং সর্বশেষে বনবিবি ও দক্ষিণ রায়ের সমঝোতা এবং সেই থেকে উভয়ের একত্রে পূজার প্রচলন। হাসনাবাদ ও সোনারপুর (দুটি স্থানই ২৪ পরগণার অন্তর্গত) এলাকায় দুটি পুঁথির আবিষ্কার করেন বাংলা লোক-সাহিত্যের অন্যতম গবেষক চিত্তরঞ্জন দেব। হাসনাবাদে প্রাপ্ত পুঁথিতে গাজীপীরের প্রভাব বেশি লক্ষ করা যায়। এই পুঁথিতে কবি-পরিচয় এভাবে দেওয়া হয়েছে-

সেলাম সেলাম তোমায় গাজী পীর

কিবা দোষে করলে আমায় ঘরছাড়া

যেমুন চন্দ্রকেতু রাজার বাড়ি করলে ছারখার

অধম হারু তাই তোমায় সেলাম জানায় বারে বার।

অপরদিকে সোনারপুরে প্রাপ্ত সতী রুমুনা ঝুমুনা পালা পুঁথিটিতেকবির পরিচয় অংশে আমরা পাই

বাবা দক্ষিণ রায় ভাটি দেশের রাজা, বাদাবনের বনদেবী যে গো তাহারি মিতা। অধম জনার্দন মুই কি কহিতে পারি বনবিবি দক্ষিণ রায়ের নামে দিও জয়ধ্বনি।

চন্দ্রকেতুর যজ্ঞ নষ্ট করার ব্যাপারে স্বর্গরাজ ইন্দ্র চক্রান্ত করছেন গাজী পীরের সাথে-গাজী বড় খাঁ ছিল ভাটির অধিশ্বর তাহারে ইন্দ্র দিল এক নতুন সমাচার। ইন্দ্র বলে শোন গাজী, তুমি মোর দোস্ত। এক জরুরী বার্তা দিতে তোমায় করিয়াছি মনস্ত।

গীতিকাটি দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির মাহাত্ম্য প্রচার করার লক্ষ নিয়ে রচিত। বাউলে সম্প্রদায়ের কোন্ কবি এই পালার রচয়িতা তা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না। কবিত্ব শক্তির কোন পরিচয় এই পালার মধ্যে আদৌ লক্ষ করা যায় না। পালাটি কাঠুরিয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে প্রচলিত ছিল একথা অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। দক্ষিণ রায় এবং বনবিবির পূজার শেষে পাঁচালী হিসাবে পালাটি অনেক জায়গায় গাওয়া হত।