ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
ইনকাদের শসাফলন এত বেশি হত যে তার উচ্চতা ৪১০০ মিটার বা প্রায় ১৩৫০০ ফুট উঁচু হয়ে যেত। এই আলুকে বিভিন্ন স্তরের উৎপাদন কৌশল প্রয়োগ করে মদজাতীয় পানীয় তৈরি করা হত। যাকে ইনকারা চিচা (Chicha) বলত। এই মদ আবার শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও অন্যান্য শহর বা প্রদেশে বিক্রি হত।
এই কাজেও সাধারণ মানুষের একটা অংশ নিযুক্ত হবার সুযোগ পেত। তবে চাষের কাজ করার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত অসুবিধাও ছিল। বিশেষ করে পাহাড়ি জমির জন্য কৃষিযোগ্য জমি কম পাওয়া যেত। এছাড়া চাষের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রায় জল সংগ্রহ করা কঠিন ছিল। এই অসুবিধা, সমস্যা দূর করার জন্য তারা জমির বিশেষ অঞ্চল গড়ে তুলত।
পাথরের দেয়াল তৈরি করে জমির একটা অংশকে পৃথক করে নিত। এই জমির বিশেষ অঞ্চল অনেকটা সিঁড়িপথ-এর মত ছিল। কিন্তু পরীক্ষার পর দেখা গেছে এই বিশেষ আকার দেওয়া জমির উর্বরতা ছিল বেশি এবং বৃষ্টি, ঝড় জলে নষ্ট হয়ে যেত না। ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে সাধারণত বৃষ্টিপাত ভাল হত।
এছাড়া বছরের অন্য সময়ে খরা থাকত কিন্তু এই প্রতিকূলতার মধ্যেও ইনকারা খাল কেটে পাহাড়ি জমিতে চাষের জন্য জল নিয়ে আসত। ইনকাদের কৃষিকাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে জমিতে সার দেবার কাজটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে তারা প্রাকৃতিক সার দিতেই পছন্দ বেশি করত। সারের মধ্যে ছিল ওয়ানো নাইট্রেট জাতীয় এবং পাখির বিষ্ঠা পাহাড়ি বা উঁচু জমিতে ইয়ামাদের মরা পচা সার হিসেবে ব্যবহার করত।
(চলবে)