০১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মিজোরাম আটক বিস্ফোরক, সন্দেহের চোখ নানা দিকে

  • Sarakhon Report
  • ১২:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
  • 20

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • অবৈধভাবে বিস্ফোরক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে গেলে তা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে
  • কেন্দ্রীয় সরকার ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে বেষ্টনী নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে
  • লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিস্ফোরক সরবরাহ করা হলেও, এর অপব্যবহারের ফলে অবৈধ চোরাচালান ঘটছে

তুন দিল্লি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মিজোরামের সিয়া‌হা জেলায় আসাম রাইফেলসের কর্মীরা আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৪৬ প্যাকেট বিস্ফোরক, সামরিক কেমোফ্লাজে পোশাক এবং গোলাবারুদসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। এই ঘটনা এবছরের নবমতম বিস্ফোরক চোরাচালানের ঘটনা হিসেবে নজরে এসেছে।

ঘটনাপ্রেক্ষিত

  • তারিখ ও স্থান:
    ১ মার্চ দুপুরে, সিয়া‌হা জেলায় (ভারত-বাংলাদেশ ও ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের মাঝে অবস্থিত) এই আটকের ঘটনা ঘটেছে।
  • অবজেক্ট ও আটক:
    আসাম রাইফেলসের কর্মকর্তারা এক ব্যক্তিকে আটক করে তার সাথে সংযুক্ত ৪৬ প্যাকেট বিস্ফোরক, সামরিক পোশাক এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করেছেন।

  • পরিসংখ্যান:
    এই বছর মোট ১৩টি বিস্ফোরক জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে, যার মাধ্যমে ২০০০ কেজি বিস্ফোরক, ৬০,০০০ এরো ডিটোনেটর এবং ১৩,০০০ জেলাটিন স্টিক উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম দুই মাসে নয়টি ঘটনার মাধ্যমে ১১৫০ কেজি বিস্ফোরক, ১৫,২৭০ ডিটোনেটর ও ৬,০৩০ জেলাটিন স্টিক আটক হয়েছে।

বিস্ফোরকের উৎস ও রপ্তানি

  • সরবরাহের পদ্ধতি:
    সাধারণত লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিস্ফোরক খনন ও নির্মাণ কাজের জন্য সরবরাহ করা হয়। তবে এগুলোর ভুল ব্যবহারের ফলে অবৈধ চোরাচালান ঘটছে।
  • অভিযোগ ও সন্দেহ:
    উচ্চপদস্থ আসাম রাইফেলস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিজোরামের ইউনিট গত ছয় মাসে রাজ্য সরকারের কাছে বারংবার বিস্ফোরকের অপব্যবহারের ঘটনা জানিয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে, এগুলো সম্ভবত বাংলাদেশ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হচ্ছিল।

নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

  • উল্লেখ্য:
    একজন কর্মকর্তার মতে, সর্বশেষ চিঠিতে বিস্ফোরকের অপব্যবহার ও সীমান্ত পারাপারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলছেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
  • সতর্কীকরণ:
    যদি অবৈধভাবে বিস্ফোরক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে চলে যায়, তবে তা এক সময় ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের পথ তৈরি করতে পারে।

সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

  • বিস্ফোরক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান:
    এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানত মহারাষ্ট্র, হায়দ্রাবাদ ও রাজস্থানে নিবন্ধিত থাকলেও, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হয়নি কারণ তারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত।

  • ইতিহাসের প্রেক্ষাপট:
    একই বিস্ফোরক ‘নিওজেল ৯০’ পূর্বে ২০০৭-২০০৮ সালের ঢাবি ও জয়পুরের বিস্ফোরক হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল। এছাড়াও, ২০২০ সালে কাশ্মীরের কারেওয়াতে এক সন্দেহভাজন লুকোচরে এই বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল।
  • সীমান্তে পদক্ষেপ:
    ২০২২ সালে এনআইএ মিয়ানমারে বিস্ফোরক পাচারের মাধ্যম হিসেবে মিজোরামকে চিহ্নিত করার পর থেকে এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যেই ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ১৬৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বেষ্টনী নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র আমিত শাহ প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সীমান্তের প্রবেশপথগুলো বেষ্টনী করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

মিজোরাম আটক বিস্ফোরক, সন্দেহের চোখ নানা দিকে

১২:৩০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • অবৈধভাবে বিস্ফোরক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে গেলে তা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে
  • কেন্দ্রীয় সরকার ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে বেষ্টনী নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে
  • লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিস্ফোরক সরবরাহ করা হলেও, এর অপব্যবহারের ফলে অবৈধ চোরাচালান ঘটছে

তুন দিল্লি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মিজোরামের সিয়া‌হা জেলায় আসাম রাইফেলসের কর্মীরা আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৪৬ প্যাকেট বিস্ফোরক, সামরিক কেমোফ্লাজে পোশাক এবং গোলাবারুদসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। এই ঘটনা এবছরের নবমতম বিস্ফোরক চোরাচালানের ঘটনা হিসেবে নজরে এসেছে।

ঘটনাপ্রেক্ষিত

  • তারিখ ও স্থান:
    ১ মার্চ দুপুরে, সিয়া‌হা জেলায় (ভারত-বাংলাদেশ ও ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের মাঝে অবস্থিত) এই আটকের ঘটনা ঘটেছে।
  • অবজেক্ট ও আটক:
    আসাম রাইফেলসের কর্মকর্তারা এক ব্যক্তিকে আটক করে তার সাথে সংযুক্ত ৪৬ প্যাকেট বিস্ফোরক, সামরিক পোশাক এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করেছেন।

  • পরিসংখ্যান:
    এই বছর মোট ১৩টি বিস্ফোরক জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে, যার মাধ্যমে ২০০০ কেজি বিস্ফোরক, ৬০,০০০ এরো ডিটোনেটর এবং ১৩,০০০ জেলাটিন স্টিক উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম দুই মাসে নয়টি ঘটনার মাধ্যমে ১১৫০ কেজি বিস্ফোরক, ১৫,২৭০ ডিটোনেটর ও ৬,০৩০ জেলাটিন স্টিক আটক হয়েছে।

বিস্ফোরকের উৎস ও রপ্তানি

  • সরবরাহের পদ্ধতি:
    সাধারণত লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিস্ফোরক খনন ও নির্মাণ কাজের জন্য সরবরাহ করা হয়। তবে এগুলোর ভুল ব্যবহারের ফলে অবৈধ চোরাচালান ঘটছে।
  • অভিযোগ ও সন্দেহ:
    উচ্চপদস্থ আসাম রাইফেলস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিজোরামের ইউনিট গত ছয় মাসে রাজ্য সরকারের কাছে বারংবার বিস্ফোরকের অপব্যবহারের ঘটনা জানিয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে, এগুলো সম্ভবত বাংলাদেশ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হচ্ছিল।

নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

  • উল্লেখ্য:
    একজন কর্মকর্তার মতে, সর্বশেষ চিঠিতে বিস্ফোরকের অপব্যবহার ও সীমান্ত পারাপারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলছেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতাদের বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
  • সতর্কীকরণ:
    যদি অবৈধভাবে বিস্ফোরক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে চলে যায়, তবে তা এক সময় ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের পথ তৈরি করতে পারে।

সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

  • বিস্ফোরক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান:
    এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানত মহারাষ্ট্র, হায়দ্রাবাদ ও রাজস্থানে নিবন্ধিত থাকলেও, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হয়নি কারণ তারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত।

  • ইতিহাসের প্রেক্ষাপট:
    একই বিস্ফোরক ‘নিওজেল ৯০’ পূর্বে ২০০৭-২০০৮ সালের ঢাবি ও জয়পুরের বিস্ফোরক হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল। এছাড়াও, ২০২০ সালে কাশ্মীরের কারেওয়াতে এক সন্দেহভাজন লুকোচরে এই বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল।
  • সীমান্তে পদক্ষেপ:
    ২০২২ সালে এনআইএ মিয়ানমারে বিস্ফোরক পাচারের মাধ্যম হিসেবে মিজোরামকে চিহ্নিত করার পর থেকে এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যেই ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ১৬৪৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বেষ্টনী নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র আমিত শাহ প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সীমান্তের প্রবেশপথগুলো বেষ্টনী করার নির্দেশ দিয়েছেন।