বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন

৫০ টাকার কমে কোন চাল নেই : বেসরকারি ভাবে আমদানী কম

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ৫.২৮ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • খাদ্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে সরকারি ক্রয়, নির্বিঘ্ন আমদানি এবং আমন ফসলের ব্যবস্থা
  • দেশের বার্ষিক চালের চাহিদা প্রায় ৩.৭ থেকে ৩.৯ কোটি টন, যা দেশীয় উৎপাদন দিয়ে পূরণ করা হয়
  • সরকার ১৬.৭৫ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিলেও, বেসরকারি খাত মাত্র ২.৬৩ লাখ টন আমদানি করেছে

গত কয়েক মাস ধরে চালের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। মাঝারি এবং মোটা উভয় চালই এখন বাংলাদেশের ইতিহাসের রেকর্ড দামে গেছে। আগস্টে পূর্বাঞ্চলের ধানক্ষেত ধ্বংসকারী প্রবল বন্যার পর, অন্তর্বর্তী সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানদের মাধ্যমে ব্যাপক চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে আমদানীতে সে আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি

আমদানীর পরিমান

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত ১৬.৭৫ লাখ টনের মধ্যে পাঁচ মাসের সময়কালের পরও বেসরকারি খাত মাত্র ২.৬৩ লাখ টন চাল আমদানি করতে পেরেছে – যা অনুমোদিত পরিমাণের প্রায় ১৭ শতাংশ মাত্র।

আমদানির প্রতিবন্ধকতা

  • উচ্চ ডলার বিনিময় হার: বর্তমান বিনিময় হার উচ্চ থাকার কারণে আমদানির খরচ বেড়েছে।
  • ভালো আমান ফসল: ভালো আমান ফসল পাওয়ার ফলে আমদানিতে লাভজনকতা কমে গেছে।
  • কম চাহিদা: আমদানিকৃত চালের স্থানীয় বাজারে চাহিদা কম থাকায় ব্যবসায়ীরা সম্পূর্ণ পরিমাণ আমদানিতে উৎসাহী নন।
  • রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা: আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে বাজার পূর্বাভাস নির্ধারণে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।

সরকারী হস্তক্ষেপ ও বাজার প্রভাব

  • খাদ্য সংরক্ষণ: সরকারী ক্রয়, নির্বিঘ্ন আমদানী এবং ভালো আমান ফসলের কারণে খাদ্য সংরক্ষণ বজায় আছে।
  • বিভাগভাগে বরাদ্দ: অনুমোদিত ১৬.৭৫ লাখ টনের মধ্যে ১২.১৯ লাখ টন পারবোইলড চাল এবং বাকি অংশ সূর্যের আলোয় শুকানো (আটাপ চাল) চালের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।

  • মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্য: অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ পূর্বাঞ্চলের বন্যার কারণে আমান ধান চাষে বিঘ্ন পড়ার পর খুচরা বাজারে চালের মূল্য দ্রুত বাড়ছে।
  • উৎপাদনের প্রভাব: মার্চ ২০২৩ থেকে সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর চাপ পড়েছে।
  • সরকারের পদক্ষেপ: খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাসুদুল হাসান জানান, জিটুজি আমদানী, ওপেন মার্কেট সেলস (ও এম এস ) ও ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা লক্ষ লক্ষ গরীব পরিবারের উপকারে আসছে এবং চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে।

বর্তমান বাজারের অবস্থা

  • ঢাকার বাজার: টিসিবি’র  তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বাজারে গত সপ্তাহে চালের দাম অপরিবর্তিত ছিল।
  • মূল্য সীমা:
    • সরু রাইস: ৭২ থেকে ৮৫ টাকা কেজি
    • মাঝারি চাল : ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা কেজি
    • মোটা চাল : ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি
    • যা থেকে বলা যায় ৫০ টাকার কমে কোন চাল নেই।

  • মাসিক ও বার্ষিক পরিবর্তন:
    • গত মাসে: সরু চাল১.২৯% বৃদ্ধি, মাঝারি চাল ০.৮২% বৃদ্ধি, মোটা চাল ১.৮৭% হ্রাস
    • বার্ষিক: সরু চাল ১৪.৬০%, মাঝারি চাল ১৩.৮৯%, মোটা চাল ৫% বৃদ্ধি
  • জাতীয় চাহিদা: বাংলাদেশে বার্ষিক ৩.৭ থেকে ৩.৯ কোটি টন চালের প্রয়োজন, যার বেশিরভাগ অংশ দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ করা হয়। অর্থবছর ২০২৩-২৪ এ কোনো চালের আমদানী হয়নি।

উপসংহার

উচ্চ মূল্য, সীমিত আমদানী এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সম্মিলিত প্রভাব বাজারে চালের আমদানিকে কঠিন করে তুলেছে। সরকারের হস্তক্ষেপ ও শক্তিশালী আমন ফসলের মাধ্যমে খাদ্য সংরক্ষণ বজায় থাকলেও, বেসরকারি আমদানিকারকদের জন্য লাভের সুযোগ কমে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়া ধানের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024