সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
-
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে প্রায় ২০ লাখ নতুন মাদকসেবী যুক্ত হয়েছে, ফলে দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দেড় কোটিতে পৌঁছেছে। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে তরুণ শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকির মুখে।
-
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশের সমন্বয়হীনতা, দুর্বল নজরদারি এবং অনিয়মিত অভিযানের ফলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
-
জাতিসংঘের (UNCTAD) প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন ডলার মাদক ব্যবসার মাধ্যমে পাচার হচ্ছে, যা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করছে।
মাদকসেবী ও মাদক কারবারের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শিথিলতা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুর্বল ভূমিকার কারণে মাদক এখন সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক কয়েক মাসে নতুন করে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মাদকসেবনে যুক্ত হয়েছে, ফলে দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে প্রায় দেড় কোটিতে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে অবৈধ মাদক ব্যবসা থেকে বিপুল অর্থ দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে।
মাদক পরিস্থিতির অবনতি
মাদকের সহজলভ্যতা
- বিশেষজ্ঞদের মতামত: কার্যকর নিয়ন্ত্রণের অভাবে বর্তমানে ‘হাত বাড়ালেই মাদক’—এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
- আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন: জাতিসংঘের সংস্থা আংকটাডের ২০২৩ সালের জুনের তথ্য অনুযায়ী, মাদকের কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন ডলার পাচার হয়। অর্থপাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম এবং এশিয়ায় শীর্ষে।

নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণ
- সরকারি পদক্ষেপের অভাব: নিয়মিত ও ধারাবাহিক অভিযান না থাকায় মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না।
- প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং শিথিলতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
মাদকসেবীর সংখ্যা
- মানসের তথ্য: মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) দাবি করছে, দেশে এখন প্রায় দেড় কোটি মাদকসেবী রয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে প্রায় ২০ লাখ নতুন মাদকসেবী যুক্ত হয়েছে।
- তরুণদের ঝুঁকি: মাদকসেবীদের উল্লেখযোগ্য অংশই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং কিশোর-কিশোরী।
সাম্প্রতিক উদাহরণ ও গ্রেফতার
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) অভিযান: ১ জানুয়ারি মাদকসেবনের অভিযোগে ৯ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রীও ছিলেন।
- নারায়ণগঞ্জ শহর: ৯ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল এলাকায় মাদকসেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়।

সীমান্ত ও ইয়াবা কারবার
- ইয়াবার চালান বিস্তার: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে ইয়াবা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
- রোহিঙ্গা সম্পৃক্ততা: রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এই ইয়াবা কারবারে যুক্ত থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
- সীমান্ত পরিস্থিতি: তারকাঁটা দিয়ে পুরো সীমান্ত ঘিরে রাখা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, এবং ঘন ঘন তল্লাশিও সম্ভব হচ্ছে না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ভূমিকা
- কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: অধিদপ্তরকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া চলছে, পাশাপাশি নিয়মিত অভিযানের কথা বলা হচ্ছে।
- সমস্যা: অনেক কর্মকর্তা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না অথবা পোস্টিং থাকা সত্ত্বেও এলাকায় কম সময় দেন।
Leave a Reply