০১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
দুবাইয়ের বেসরকারি স্কুলে শুক্রবার নতুন সময়সূচি, সাড়ে এগারোটায় ছুটি ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ি থেকে লাফ, আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু পঞ্চগড়ে নিখোঁজ পুলিশ কনস্টেবলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হাটহাজারীতে গভীর রাতে হামলা দিবালোকে কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আগুন ক্রিপ্টো বাজারে ধস কেন থামছে না সংস্কৃতির সংকটেই কি আটকে ভবিষ্যৎ প্রাচীন মিসরের ডিএনএ খুলে দিল নতুন ইতিহাসের দরজা, পিরামিড যুগে পশ্চিম এশিয়ার ছাপ প্রাচীন ডিএনএ বদলে দিল ইতিহাস প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিটন ধারণা ভেঙে নতুন সত্যের মুখোমুখি বিচি হেড নারী বিএনপি নেতার তালাবদ্ধ ঘরে পেট্রল আগুন, ঘুমন্ত শিশুর দগ্ধ মৃত্যুতে স্তব্ধ লক্ষ্মীপুর আরব উদার চিন্তার দীর্ঘ ছায়া ও তার পরিণতি

চাহিদা ৭ লাখ, আমদানী করতে হয় ৬ লাখ টন: এ বছর উৎপাদন আরো কম

  • Sarakhon Report
  • ০৫:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
  • 194

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ক্রমাগত কমছে মসুর চাষ ও উৎপাদন

দেশে মসুর ডালের চাষ ও উৎপাদন গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে কমছে।
সরকারি তথ্যমতে, এই পতনের পেছনে তিনটি বড় কারণ রয়েছে:

  • চাষে লাভজনক না হওয়া
  • ঘনঘন রোগবালাইয়ের আক্রমণ
  • অনুকূল আবহাওয়ার অভাব

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) জানায়, গত পাঁচ বছরে দেশে মসুর চাষের জমি ৭৫,৭০০ হেক্টর কমে গেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে মসুর উৎপাদন ছিল ২,৫৮,৫০০ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নেমে এসেছে মাত্র ১,৬৬,৩০০ টনে।

যেখানে দেশে বছরে ৭ লাখ টনের মতো মসুর ডালের চাহিদা রয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে খুব অল্প—ফলে প্রায় ৬ লাখ টন আমদানি করতে হচ্ছে।

কৃষকরা মসুর চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কেন?

১৫ জনের বেশি কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মসুর চাষে তাদের আগ্রহ কমে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে:

  • রোগবালাই ও খারাপ আবহাওয়া
  • অন্যান্য ফসলে তুলনামূলক বেশি লাভ
  • আগের বছরগুলোতে দাম কম পাওয়া

এ কারণে অনেক কৃষক এখন মসুরের বদলে পেঁয়াজ, ভুট্টা, গম ও কলা চাষে ঝুঁকছেন।

নড়াইলের কৃষক হাসান আলী আগে ৬ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করতেন, কিন্তু ফলন কমে যাওয়ায় এবার করেছেন ৪ বিঘায়। তিনি বলছেন, এখন ভুট্টা চাষে বেশি লাভ হচ্ছে।

রাজবাড়ীর কৃষক মজিবর রহমান গত বছরের তুলনায় এবার কম জমিতে চাষ করেও ২৪ মণ মসুর পেয়েছেন, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলন।

মসুরের দাম বেড়েছে:
এই মৌসুমে প্রতি মণ মসুর বিক্রি হচ্ছে ৩,৪০০–৩,৬০০ টাকায়, যেখানে গত বছর ছিল ২,৪০০–২,৮০০ টাকা।

ঝিনাইদহের কৃষক আজিজুর রহমান বলছেন, “এ বছর ফলন ও দাম ভালো হলেও আগের বছরগুলোতে অবস্থা ভালো না থাকায় অনেকেই মসুর চাষ ছেড়ে দিয়েছেন।”

ফরিদপুরের কামাল হোসেন জানান, আগে বারি-২, বারি-৩, বারি-৪ জাতের মসুর চাষ করতেন, কিন্তু ফলন কম থাকায় কৃষকেরা আগ্রহ হারিয়েছেন। এবার তিনি বারি-৮ জাতের মসুর চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন।

পাইকারি বাজারে ধীরগতিমিল মালিকরা বিপাকে

মাগুরার নতুন বাজার দেশের অন্যতম বড় মসুর ডালের পাইকারি বাজার।
সেখানে ব্যবসায়ী মো. শহীদুল ইসলাম জানান, আগে প্রতিদিন ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ মণ মসুর কেনাবেচা হতো, এখন তা নেমে এসেছে ১,৫০০ থেকে ১২,০০০ মণে।

ফরিদপুরের এক ডাল মিল মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, দেশীয় মসুরের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ছোট মিলগুলো সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ডাল কিনতে পারছে না। সরকারকে আমদানির মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে, ফলে অনেক ছোট মিল বন্ধ হয়ে গেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দুবাইয়ের বেসরকারি স্কুলে শুক্রবার নতুন সময়সূচি, সাড়ে এগারোটায় ছুটি

চাহিদা ৭ লাখ, আমদানী করতে হয় ৬ লাখ টন: এ বছর উৎপাদন আরো কম

০৫:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ক্রমাগত কমছে মসুর চাষ ও উৎপাদন

দেশে মসুর ডালের চাষ ও উৎপাদন গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে কমছে।
সরকারি তথ্যমতে, এই পতনের পেছনে তিনটি বড় কারণ রয়েছে:

  • চাষে লাভজনক না হওয়া
  • ঘনঘন রোগবালাইয়ের আক্রমণ
  • অনুকূল আবহাওয়ার অভাব

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) জানায়, গত পাঁচ বছরে দেশে মসুর চাষের জমি ৭৫,৭০০ হেক্টর কমে গেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে মসুর উৎপাদন ছিল ২,৫৮,৫০০ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নেমে এসেছে মাত্র ১,৬৬,৩০০ টনে।

যেখানে দেশে বছরে ৭ লাখ টনের মতো মসুর ডালের চাহিদা রয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে খুব অল্প—ফলে প্রায় ৬ লাখ টন আমদানি করতে হচ্ছে।

কৃষকরা মসুর চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কেন?

১৫ জনের বেশি কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মসুর চাষে তাদের আগ্রহ কমে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে:

  • রোগবালাই ও খারাপ আবহাওয়া
  • অন্যান্য ফসলে তুলনামূলক বেশি লাভ
  • আগের বছরগুলোতে দাম কম পাওয়া

এ কারণে অনেক কৃষক এখন মসুরের বদলে পেঁয়াজ, ভুট্টা, গম ও কলা চাষে ঝুঁকছেন।

নড়াইলের কৃষক হাসান আলী আগে ৬ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করতেন, কিন্তু ফলন কমে যাওয়ায় এবার করেছেন ৪ বিঘায়। তিনি বলছেন, এখন ভুট্টা চাষে বেশি লাভ হচ্ছে।

রাজবাড়ীর কৃষক মজিবর রহমান গত বছরের তুলনায় এবার কম জমিতে চাষ করেও ২৪ মণ মসুর পেয়েছেন, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলন।

মসুরের দাম বেড়েছে:
এই মৌসুমে প্রতি মণ মসুর বিক্রি হচ্ছে ৩,৪০০–৩,৬০০ টাকায়, যেখানে গত বছর ছিল ২,৪০০–২,৮০০ টাকা।

ঝিনাইদহের কৃষক আজিজুর রহমান বলছেন, “এ বছর ফলন ও দাম ভালো হলেও আগের বছরগুলোতে অবস্থা ভালো না থাকায় অনেকেই মসুর চাষ ছেড়ে দিয়েছেন।”

ফরিদপুরের কামাল হোসেন জানান, আগে বারি-২, বারি-৩, বারি-৪ জাতের মসুর চাষ করতেন, কিন্তু ফলন কম থাকায় কৃষকেরা আগ্রহ হারিয়েছেন। এবার তিনি বারি-৮ জাতের মসুর চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন।

পাইকারি বাজারে ধীরগতিমিল মালিকরা বিপাকে

মাগুরার নতুন বাজার দেশের অন্যতম বড় মসুর ডালের পাইকারি বাজার।
সেখানে ব্যবসায়ী মো. শহীদুল ইসলাম জানান, আগে প্রতিদিন ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ মণ মসুর কেনাবেচা হতো, এখন তা নেমে এসেছে ১,৫০০ থেকে ১২,০০০ মণে।

ফরিদপুরের এক ডাল মিল মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, দেশীয় মসুরের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ছোট মিলগুলো সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ডাল কিনতে পারছে না। সরকারকে আমদানির মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে, ফলে অনেক ছোট মিল বন্ধ হয়ে গেছে।