০২:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৮৪)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • 11
শ্রী নিখিলনাথ রায়
তাঁহার • হৃদয় অত্যন্ত উচ্চ ছিল; মুক্তহস্ততায় তাঁহার ন্যায় লোক তৎকালে দৃষ্ট হইত না। তিনি শিক্ষাকার্য্যে অত্যন্ত উৎসাহ প্রদান করিতেন। হেয়ার সাহেবের স্মরণচিহ্নস্থাপন সভায় তিনি সভাপতির কার্য্য করিয়াছিলেন, এবং সর্ব্বাপেক্ষা অধিক অর্থ প্রদান করেন। তাঁহার প্রিয় উদ্যানবাটী বানজেটিয়ায় নিজ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করিবার জন্য প্রায় সমস্ত সম্পত্তি উইল করিয়া যান। বিদ্যাশিক্ষার এরূপ জ্বলন্ত উৎসাহ কয়টি দেখিতে পাওয়া যায়? কৃষ্ণনাথ লর্ড’ অক্লাণ্ডকর্তৃক রাজো-পাধিতে ভূষিত হন।
একটি মোকদ্দমায় তাঁহার বিচারালয়ে উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনায় কৃষ্ণনাথ সম্মানহানির আশঙ্কায় আত্মহত্যা সম্পাদন করেন। ১৮৪৪ খৃঃ অব্দের ৩০ শে অক্টোবর এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। তাঁহার ন্যায় মুক্তহস্ত ও উচ্চ-হৃদয় পুরুষ এতদ্দেশে বিরল। রাজা কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর তদীয় সহধর্মিণী কীর্তিমতী মহারাণী স্বর্ণময়ী মহোদয়া কাশীমবাজার রাজসম্পত্তির অধিকারিণী হন। মহারাণী মহোদয়ার নূতন পরিচয় দেওয়া বাতুলের কার্য্য।
যাঁহার নাম বঙ্গের প্রত্যেক দরিদ্রের গৃহ হইতে প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হইতেছে, যাঁহার দানস্রোত বিশাল ভারতভূমি অতিক্রম করিয়া সুদূর ইউরোপ পর্যন্ত গমন করিয়াছে, তাঁহার আবার নূতন পরিচয় কি? যিনি মূর্তিমতী দয়া; পরোপকার যাঁহার জীবনের একমাত্র ব্রত, তাঁহার নাম কোন্ বাঙ্গালী অবগত নহে? তিনিই বঙ্গদেশে একমাত্র ব্রাহ্মণসেবা ও দরিদ্র পাল’নর ভার লইয়াছিলেন বলিলে অত্যুক্তি হয় না। শত শত ব্রাহ্মণ, শত শত দরিদ্র তাঁহার দ্বারা প্রতিপালিত হইয়াছে। স্বর্ণময়ীর স্বর্ণময় নাম চিরদিনই বাঙ্গলার ইতিহাসে জ্বলন্ত অক্ষরে লিখিত থাকিবে।
মহারাণী মহোদয়ার সুকীর্তির বিবরণ লিখিতে হইলে, একখানি বৃহদায়তন পুস্তক হইয়া উঠে; সুতরাং এখানে সে বিষয়ে অধিক লেখা সম্ভব নহে।, মহারাণী মহোদয়ার অশেষবিধ কীর্তি থাকিলেও হিন্দুভাবের কোনও বিশেষ স্থারিকীর্তি দেখিতে পাওয়া যায় না।

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৮৪)

১১:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
শ্রী নিখিলনাথ রায়
তাঁহার • হৃদয় অত্যন্ত উচ্চ ছিল; মুক্তহস্ততায় তাঁহার ন্যায় লোক তৎকালে দৃষ্ট হইত না। তিনি শিক্ষাকার্য্যে অত্যন্ত উৎসাহ প্রদান করিতেন। হেয়ার সাহেবের স্মরণচিহ্নস্থাপন সভায় তিনি সভাপতির কার্য্য করিয়াছিলেন, এবং সর্ব্বাপেক্ষা অধিক অর্থ প্রদান করেন। তাঁহার প্রিয় উদ্যানবাটী বানজেটিয়ায় নিজ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করিবার জন্য প্রায় সমস্ত সম্পত্তি উইল করিয়া যান। বিদ্যাশিক্ষার এরূপ জ্বলন্ত উৎসাহ কয়টি দেখিতে পাওয়া যায়? কৃষ্ণনাথ লর্ড’ অক্লাণ্ডকর্তৃক রাজো-পাধিতে ভূষিত হন।
একটি মোকদ্দমায় তাঁহার বিচারালয়ে উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনায় কৃষ্ণনাথ সম্মানহানির আশঙ্কায় আত্মহত্যা সম্পাদন করেন। ১৮৪৪ খৃঃ অব্দের ৩০ শে অক্টোবর এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। তাঁহার ন্যায় মুক্তহস্ত ও উচ্চ-হৃদয় পুরুষ এতদ্দেশে বিরল। রাজা কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর তদীয় সহধর্মিণী কীর্তিমতী মহারাণী স্বর্ণময়ী মহোদয়া কাশীমবাজার রাজসম্পত্তির অধিকারিণী হন। মহারাণী মহোদয়ার নূতন পরিচয় দেওয়া বাতুলের কার্য্য।
যাঁহার নাম বঙ্গের প্রত্যেক দরিদ্রের গৃহ হইতে প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হইতেছে, যাঁহার দানস্রোত বিশাল ভারতভূমি অতিক্রম করিয়া সুদূর ইউরোপ পর্যন্ত গমন করিয়াছে, তাঁহার আবার নূতন পরিচয় কি? যিনি মূর্তিমতী দয়া; পরোপকার যাঁহার জীবনের একমাত্র ব্রত, তাঁহার নাম কোন্ বাঙ্গালী অবগত নহে? তিনিই বঙ্গদেশে একমাত্র ব্রাহ্মণসেবা ও দরিদ্র পাল’নর ভার লইয়াছিলেন বলিলে অত্যুক্তি হয় না। শত শত ব্রাহ্মণ, শত শত দরিদ্র তাঁহার দ্বারা প্রতিপালিত হইয়াছে। স্বর্ণময়ীর স্বর্ণময় নাম চিরদিনই বাঙ্গলার ইতিহাসে জ্বলন্ত অক্ষরে লিখিত থাকিবে।
মহারাণী মহোদয়ার সুকীর্তির বিবরণ লিখিতে হইলে, একখানি বৃহদায়তন পুস্তক হইয়া উঠে; সুতরাং এখানে সে বিষয়ে অধিক লেখা সম্ভব নহে।, মহারাণী মহোদয়ার অশেষবিধ কীর্তি থাকিলেও হিন্দুভাবের কোনও বিশেষ স্থারিকীর্তি দেখিতে পাওয়া যায় না।