০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার

  • Sarakhon Report
  • ০৭:০০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
  • 31

সারাক্ষণ রিপোর্ট

মালয়েশিয়ার বিনিয়োগবাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী তেংকু দাতুক সেরি জাফরুল আবদুল আজিজ জানিয়েছেনএখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্যে পরিণত হয়েছেযা রপ্তানি পরিমাণের দিক থেকে চীনকে পেছনে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ‘‘চীন এখনো আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার (মোট বাণিজ্যের দিক থেকে)কিন্তু রপ্তানির ক্ষেত্রে শীর্ষ গন্তব্য এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।’’

তিনি এই মন্তব্য করেন আসিয়ান ইউনিটি ড্রাইভ ২০২৫’ অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের সময়।

আমেরিকায় বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে সরকার
মন্ত্রী জানানমালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাণিজ্য চেম্বারগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছেযাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয় এবং নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা চাইমালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো আমেরিকায় বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করুক। সরকার এই উদ্যোগে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’

যদিও বর্তমানে মালয়েশিয়া বা আসিয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাণিজ্য চুক্তির পরিকল্পনা নেইতবে ভবিষ্যতে আলোচনা হলে সরকার তা বিবেচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

চীনের বিকল্প হিসেবে আসিয়ান দেশগুলোর অগ্রগতি
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস জানিয়েছেচীনের সাপ্লাই চেইন বহুমুখীকরণের ফলে ভিয়েতনামমালয়েশিয়া এবং ভারত বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেবিশেষত টেক্সটাইল ও ইলেকট্রনিক খাতে।

তবে মুডিস উল্লেখ করেছেচীন থেকে সাপ্লাই চেইন স্থানান্তর এখনো সীমিত আকারে ঘটছেকারণ উৎপাদনে চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো এখনো বেশ কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি এখনো কমচীনের রপ্তানি অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসিয়ান ও ভারতের পণ্য আমদানির হার যথাক্রমে ৯ শতাংশ ও ৩ শতাংশযা এখনো কম। অন্যদিকেচীন তার রপ্তানি আসিয়ানরাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে সরিয়ে নিচ্ছে।

মুডিস জানিয়েছেবিদেশি বিনিয়োগের ধারা এই পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করছে। এখন ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া নতুন কারখানা স্থাপনের (গ্রিনফিল্ড ইনভেস্টমেন্ট) মূল কেন্দ্র হয়ে উঠছেযেখানে চীনের অংশ হ্রাস পাচ্ছে।

সোলার সেলে মার্কিন শুল্ক এবং এর প্রভাব
২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ামালয়েশিয়াথাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানিকৃত সোলার সেলের ওপর প্রাথমিক শুল্ক আরোপ করে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনা মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াযাদেরকে অবৈধ ভর্তুকি পাওয়ার সন্দেহ করা হয়।

মুডিস বলছেচীনের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে আসিয়ান অঞ্চলের ওপর মার্কিন শুল্কের পরোক্ষ প্রভাব বড় ধরনের হতে পারে। বিশেষ করে ভিয়েতনামথাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারেযারা চীনের রপ্তানি-নির্ভর প্রবৃদ্ধির মডেল অনুসরণ করছে।

নতুন উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার চ্যালেঞ্জ

মুডিস মনে করেআসিয়ান ও ভারতকে নিজেদের মধ্যে আরও শক্তিশালী মান-সংযোজন ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ শক্তিশালী দেশীয় সাপ্লাই চেইন এবং বাণিজ্য নীতির উন্নতির অভাবই নতুন শিল্প কেন্দ্র গড়ে ওঠার পথে বড় বাধা।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে অবকাঠামোসংযুক্তিএবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নীতির উদারীকরণে অগ্রগতি আনতে হবে।

তবে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলগুলো শিল্প ৪.০ প্রযুক্তি গ্রহণঅবকাঠামোর উন্নয়ন এবং সক্রিয় নীতিমালার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার

০৭:০০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

মালয়েশিয়ার বিনিয়োগবাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী তেংকু দাতুক সেরি জাফরুল আবদুল আজিজ জানিয়েছেনএখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্যে পরিণত হয়েছেযা রপ্তানি পরিমাণের দিক থেকে চীনকে পেছনে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ‘‘চীন এখনো আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার (মোট বাণিজ্যের দিক থেকে)কিন্তু রপ্তানির ক্ষেত্রে শীর্ষ গন্তব্য এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।’’

তিনি এই মন্তব্য করেন আসিয়ান ইউনিটি ড্রাইভ ২০২৫’ অনুষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের সময়।

আমেরিকায় বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে সরকার
মন্ত্রী জানানমালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাণিজ্য চেম্বারগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছেযাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয় এবং নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা চাইমালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো আমেরিকায় বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করুক। সরকার এই উদ্যোগে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’

যদিও বর্তমানে মালয়েশিয়া বা আসিয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাণিজ্য চুক্তির পরিকল্পনা নেইতবে ভবিষ্যতে আলোচনা হলে সরকার তা বিবেচনা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

চীনের বিকল্প হিসেবে আসিয়ান দেশগুলোর অগ্রগতি
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস জানিয়েছেচীনের সাপ্লাই চেইন বহুমুখীকরণের ফলে ভিয়েতনামমালয়েশিয়া এবং ভারত বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেবিশেষত টেক্সটাইল ও ইলেকট্রনিক খাতে।

তবে মুডিস উল্লেখ করেছেচীন থেকে সাপ্লাই চেইন স্থানান্তর এখনো সীমিত আকারে ঘটছেকারণ উৎপাদনে চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো এখনো বেশ কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি এখনো কমচীনের রপ্তানি অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসিয়ান ও ভারতের পণ্য আমদানির হার যথাক্রমে ৯ শতাংশ ও ৩ শতাংশযা এখনো কম। অন্যদিকেচীন তার রপ্তানি আসিয়ানরাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে সরিয়ে নিচ্ছে।

মুডিস জানিয়েছেবিদেশি বিনিয়োগের ধারা এই পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করছে। এখন ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া নতুন কারখানা স্থাপনের (গ্রিনফিল্ড ইনভেস্টমেন্ট) মূল কেন্দ্র হয়ে উঠছেযেখানে চীনের অংশ হ্রাস পাচ্ছে।

সোলার সেলে মার্কিন শুল্ক এবং এর প্রভাব
২০২৪ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ামালয়েশিয়াথাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানিকৃত সোলার সেলের ওপর প্রাথমিক শুল্ক আরোপ করে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনা মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াযাদেরকে অবৈধ ভর্তুকি পাওয়ার সন্দেহ করা হয়।

মুডিস বলছেচীনের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে আসিয়ান অঞ্চলের ওপর মার্কিন শুল্কের পরোক্ষ প্রভাব বড় ধরনের হতে পারে। বিশেষ করে ভিয়েতনামথাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারেযারা চীনের রপ্তানি-নির্ভর প্রবৃদ্ধির মডেল অনুসরণ করছে।

নতুন উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার চ্যালেঞ্জ

মুডিস মনে করেআসিয়ান ও ভারতকে নিজেদের মধ্যে আরও শক্তিশালী মান-সংযোজন ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ শক্তিশালী দেশীয় সাপ্লাই চেইন এবং বাণিজ্য নীতির উন্নতির অভাবই নতুন শিল্প কেন্দ্র গড়ে ওঠার পথে বড় বাধা।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে অবকাঠামোসংযুক্তিএবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নীতির উদারীকরণে অগ্রগতি আনতে হবে।

তবে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলগুলো শিল্প ৪.০ প্রযুক্তি গ্রহণঅবকাঠামোর উন্নয়ন এবং সক্রিয় নীতিমালার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।