সারাক্ষণ রিপোর্ট
দেশে আগে বছরে চার কোটির বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও আমদানি হতো। বিক্রি হতো প্রায় সাড়ে তিন কোটি। কিন্তু চলমান অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণে এই সংখ্যা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে।
স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো ঈদকে ঘিরে নানা অফার ও কিস্তির মাধ্যমে বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করলেও বাজারে খুব একটা সাড়া মিলছে না। মানুষ কম খরচে পুরনো বা দ্বিতীয় হাতের ফোনকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব
- স্মার্টফোনের কাঁচামালের দাম বেড়েছে ডলার সংকটে।
- রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
- এলসি খোলার জটিলতায় আমদানি বন্ধ বা বিলম্ব হচ্ছে।
বিটিআরসির তথ্য: বিক্রি কমেছে লক্ষাধিক
- ২০২৪ সালে দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজারটি।
- ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বিক্রি হয় ১৮ লাখ ১৯ হাজার; ফেব্রুয়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮৮ হাজারে।
- গত বছরের তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি কমেছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার হ্যান্ডসেট।
কারখানা ও বিনিয়োগ
- দেশে এখন ১৭টি মোবাইল সংযোজন কারখানা রয়েছে।
- বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
- শ্রমিক সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি, যাদের প্রায় ৩০% নারী।
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
- অবৈধভাবে আসা ফোন বিক্রিতে সরকারের বার্ষিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
- এনইআইআর প্রকল্প চালু হলেও দুর্নীতি ও অনিয়মে তা বন্ধ হয়ে গেছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারেও বড় পতন
- ৭ মাসে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে ১.৩২ কোটি।
- একই সময়ে মোবাইল ফোন গ্রাহক কমেছে ৯৪ লাখ।
- বর্তমানে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড মিলিয়ে মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটির মতো (পূর্বে ছিল ১৪.২২ কোটি)।
সারাংশ:
দেশে চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা, মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্মার্টফোন বিক্রি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে বড় ধস নেমেছে। অবৈধভাবে আমদানি করা ফোনের বাজার দখল এবং নিয়ন্ত্রণহীন গ্রে মার্কেটও পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে।