০৯:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে বাংলাদেশ, ঢাকাসহ সারাদেশে বেড়েছে শীতের দাপট জিয়ার কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান গুলিস্তানের শপিং কমপ্লেক্সের ছাদে গুদামে আগুন তারেক রহমানের পক্ষে সাভারে শ্রদ্ধা জানাল বিএনপি প্রতিনিধিদল বিশ্ববাজারে পৌঁছাতে ভার্চুয়াল আইডলে বাজি কেপপ সংস্থার উষ্ণ শীত জাপানের ‘স্নো মাঙ্কি’দের আচরণ বদলে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সরবরাহ ঝুঁকি বাড়ায় তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী নতুন iOS আপডেটে অন-ডিভাইস এআই জোরালো করল অ্যাপল রপ্তানি আদেশ কমায় দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতার সতর্কতা জার্মানির

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৭)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • 159

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

এর তিন দিন পরে শানায়া রেলস্টেশনের ঠিক আগে আমাদের বাহিনী তাড়াতাড়ি ট্রেন থেকে নেমে পড়ল।

কোথা থেকে এক ছোকরা অশ্বারোহী সৈন্য ঘোড়া ছুটিয়ে ওখানে এসে হাজির হল আর শেবালভের হাতে একখানা মুখ-আঁটা খাম ধরিয়ে দিয়ে হেসে, যেন ভারি একটা সুখবর দিচ্ছে এমনি ভঙ্গিতে, বলল:

‘গতকাল ক্রাইউৎকোভোতে জার্মানরা আমাদের নোকজনেরে এক্কেবারে ছাগলভেড়ার মতো কচুকাটা করি দিল। চু-চু, এক্কেবারে রামধোলাই দিল!’

আমাদের বাহিনীর ওপর ভার পড়ল শত্রুর পেছনদিকে অনুপ্রবেশের। বলা হল, গ্রামে-গ্রামে ছড়ানো শত্রুর ছোট-ছোট দলগুলোকে আমরা যেন এড়িয়ে যাই আর বেগিচেভের নেতৃত্বে পরিচালিত দনে খনি-মজুরদের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করি।

‘কিন্তু ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করব কী করি?’ ম্যাপের ওপর আঙুলের খোঁচা দিতে-দিতে শেবালভ বললেন। ‘খনি-মজুরদের বাহিনীর খোঁজটা করি কোথায়? ওরা লিখচে: ‘ওলেস্কিনো আর সোস্কার মাঝামাঝি’। ঠিক-ঠিক জায়গাটা বাতলাও, তা না। বলা তো খুব সোজা ‘যোগাযোগ কর’। কোথায়? না, ‘অমুক আর অমুকের মধ্যি’, বাঃ…’

সেনাবিভাগের দপ্তর-প্রধানদের মুণ্ডপাত করতে লাগলেন শেবালভ। ওরা না-বোঝে কোনো একটা জিনিস, খালি কথায়-কথায় হুকুমনামা লিখতে ওস্তাদ আর তারপর কোম্পানি-কম্যান্ডারদের ডেকে পাঠাতে। তবে ‘দপ্তরের নোকজনরে’ গালাগাল দিলে কী হবে, স্বাধীনভাবে এই একটা কাজ করার দায়িত্ব ঘাড়ে পড়ায়, আরও বেশি সৈন্যের কোন একটা বাহিনীর তাঁবে কাজ করতে না হওয়ায় শেবালভআসলে খুশিই হলেন।

আমাদের বাহিনীতে ছিলেন তিনজন কোম্পানি-কম্যান্ডার। পরিষ্কার কামানো চাঁচাছোলা মুখ, ঠান্ডা মেজাজের চেক-দেশীয় গাল্দা, গোমড়া মুখো এন-সি-ও সুখারেভ আর তেইশ বছরের হাসিখুশি অ্যাকর্ডিয়ন-বাজিয়ে আর নাচিয়ে ফেদিয়া সির্ত্সভ। যুদ্ধে আসার আগে ফেদিয়া ছিল গোরুর রাখাল।

একটা ফাঁকা জায়গায় ম্যাপটাকে ঘিরে ওঁরা বসে ছিলেন সবাই। আর ওঁদেরও ঘিরে বসে ছিল লাল ফৌজের লোকজন।

হুকুমনামার কাগজখানা তুলে ধরে শেবালভ বলছিলেন, ‘আচ্ছা, এই যে হকুমনামা আমি পেয়েচি এ-অনুযায়ী আমাদের শত্রুর পেছনদিক দিয়ে গিয়ে ওদের মধ্যি ঢুকতি হবে আর কাজ করতি হবে বেগিচেভের বাহিনীর কাছাকাছি। আজ রাতেই রওনা হতি হবে আমাদের। শত্রুর নাগালের মধ্যি না-গিয়ে, একটু দূরে দূরে থেকে এগোতে হবে আমাদের, ছোঁয়াছুয়ি হলি চলবে না। কথাটা পরিষ্কার বুয়েচ তো?’

‘ও তো একটা মস্ত কথা হল ছোঁয়াছ’য়ি হলি চলবে না। বলি, ছোঁয়া বাঁচাব কেমন করি?’ ধূর্তামিমাখা ভালোমানুষির ভাঙ্গতে ফেদিয়া সিত্ত্সভবলল।

জনপ্রিয় সংবাদ

দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন

রণক্ষেত্রে (পর্ব-২৭)

০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

এর তিন দিন পরে শানায়া রেলস্টেশনের ঠিক আগে আমাদের বাহিনী তাড়াতাড়ি ট্রেন থেকে নেমে পড়ল।

কোথা থেকে এক ছোকরা অশ্বারোহী সৈন্য ঘোড়া ছুটিয়ে ওখানে এসে হাজির হল আর শেবালভের হাতে একখানা মুখ-আঁটা খাম ধরিয়ে দিয়ে হেসে, যেন ভারি একটা সুখবর দিচ্ছে এমনি ভঙ্গিতে, বলল:

‘গতকাল ক্রাইউৎকোভোতে জার্মানরা আমাদের নোকজনেরে এক্কেবারে ছাগলভেড়ার মতো কচুকাটা করি দিল। চু-চু, এক্কেবারে রামধোলাই দিল!’

আমাদের বাহিনীর ওপর ভার পড়ল শত্রুর পেছনদিকে অনুপ্রবেশের। বলা হল, গ্রামে-গ্রামে ছড়ানো শত্রুর ছোট-ছোট দলগুলোকে আমরা যেন এড়িয়ে যাই আর বেগিচেভের নেতৃত্বে পরিচালিত দনে খনি-মজুরদের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করি।

‘কিন্তু ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করব কী করি?’ ম্যাপের ওপর আঙুলের খোঁচা দিতে-দিতে শেবালভ বললেন। ‘খনি-মজুরদের বাহিনীর খোঁজটা করি কোথায়? ওরা লিখচে: ‘ওলেস্কিনো আর সোস্কার মাঝামাঝি’। ঠিক-ঠিক জায়গাটা বাতলাও, তা না। বলা তো খুব সোজা ‘যোগাযোগ কর’। কোথায়? না, ‘অমুক আর অমুকের মধ্যি’, বাঃ…’

সেনাবিভাগের দপ্তর-প্রধানদের মুণ্ডপাত করতে লাগলেন শেবালভ। ওরা না-বোঝে কোনো একটা জিনিস, খালি কথায়-কথায় হুকুমনামা লিখতে ওস্তাদ আর তারপর কোম্পানি-কম্যান্ডারদের ডেকে পাঠাতে। তবে ‘দপ্তরের নোকজনরে’ গালাগাল দিলে কী হবে, স্বাধীনভাবে এই একটা কাজ করার দায়িত্ব ঘাড়ে পড়ায়, আরও বেশি সৈন্যের কোন একটা বাহিনীর তাঁবে কাজ করতে না হওয়ায় শেবালভআসলে খুশিই হলেন।

আমাদের বাহিনীতে ছিলেন তিনজন কোম্পানি-কম্যান্ডার। পরিষ্কার কামানো চাঁচাছোলা মুখ, ঠান্ডা মেজাজের চেক-দেশীয় গাল্দা, গোমড়া মুখো এন-সি-ও সুখারেভ আর তেইশ বছরের হাসিখুশি অ্যাকর্ডিয়ন-বাজিয়ে আর নাচিয়ে ফেদিয়া সির্ত্সভ। যুদ্ধে আসার আগে ফেদিয়া ছিল গোরুর রাখাল।

একটা ফাঁকা জায়গায় ম্যাপটাকে ঘিরে ওঁরা বসে ছিলেন সবাই। আর ওঁদেরও ঘিরে বসে ছিল লাল ফৌজের লোকজন।

হুকুমনামার কাগজখানা তুলে ধরে শেবালভ বলছিলেন, ‘আচ্ছা, এই যে হকুমনামা আমি পেয়েচি এ-অনুযায়ী আমাদের শত্রুর পেছনদিক দিয়ে গিয়ে ওদের মধ্যি ঢুকতি হবে আর কাজ করতি হবে বেগিচেভের বাহিনীর কাছাকাছি। আজ রাতেই রওনা হতি হবে আমাদের। শত্রুর নাগালের মধ্যি না-গিয়ে, একটু দূরে দূরে থেকে এগোতে হবে আমাদের, ছোঁয়াছুয়ি হলি চলবে না। কথাটা পরিষ্কার বুয়েচ তো?’

‘ও তো একটা মস্ত কথা হল ছোঁয়াছ’য়ি হলি চলবে না। বলি, ছোঁয়া বাঁচাব কেমন করি?’ ধূর্তামিমাখা ভালোমানুষির ভাঙ্গতে ফেদিয়া সিত্ত্সভবলল।