সারাক্ষণ রিপোর্ট
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। তবে এই অবস্থান এখন হুমকির মুখে পড়েছে, কারণ ভিয়েতনাম দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে আরও উন্নত বাণিজ্য সুবিধা, বৈচিত্র্যময় পণ্য এবং কার্যকর লজিস্টিক ব্যবস্থার মাধ্যমে। ইয়ংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,
“ভিয়েতনামের সঙ্গে আমরা খুব কাছাকাছি। কিন্তু যদি আমরা এখনই ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয় না হই, তাহলে আমাদের দ্বিতীয় অবস্থানের গৌরব হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।”
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে সতর্কবার্তা
এই মন্তব্য তিনি করেছেন ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’-এ। এই চারদিনের সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
‘Bangladesh Moving Forward: Through an Investor’s Lens’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি জানান,
২০২৪ সালে ভিয়েতনাম ৪৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক ও টেক্সটাইল রপ্তানি করেছে।
গতি ও গুণমান—দুইয়েই পিছিয়ে বাংলাদেশ
কিহাক সাং বলেন,
- যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক পৌঁছাতে বাংলাদেশের তুলনায় ভিয়েতনাম প্রায় তিন সপ্তাহ কম সময় নেয়। দ্রুত সরবরাহ ফ্যাশন শিল্পে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- বাংলাদেশ পণ্যের পরিমাণে এগিয়ে থাকলেও মানের দিক থেকে পিছিয়ে, যার কারণে অনেক ক্রেতা ভিয়েতনামের পণ্যে বেশি দাম দিতে প্রস্তুত।
- যদিও ভিয়েতনামে শ্রম ব্যয় বাংলাদেশ থেকে ৪০–৫০ শতাংশ বেশি, তবুও তারা উচ্চ মুনাফা অর্জন করছে, কারণ ক্রেতারা গুণগত মানের জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী।
শুল্ক জটিলতা ও ভৌগোলিক চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে অন্যতম বড় বাধা কাস্টমস প্রক্রিয়ার বিলম্ব।
কিহাক সাং মনে করেন,
- এক সপ্তাহ থেকে দশ দিনের মধ্যে শুল্ক জটিলতা দূর করা সম্ভব হলে, দেশের রপ্তানি সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
- দ্রুত শুল্ক নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।
উপসংহার
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ধরে রাখতে হলে তৎপর ব্যবসায়িক উদ্যোগ,গুণগত মানে উন্নয়ন, এবং লজিস্টিক ও শুল্ক প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন জরুরি। অন্যথায় ভিয়েতনামের কাছে এই অবস্থান হারানোর ঝুঁকি অত্যন্ত বাস্তব।