সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “ঢালাও আসামির নেপথ্যে বাণিজ্য, বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব”
কিশোরগঞ্জের দুলাল রবিদাসের মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের (স্ট্রোক) কারণে। গত বছরের ২৭ জুলাই তাঁর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে সনদ দিয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতাল। অথচ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হয়েছেন—এমন অভিযোগ এনে ২৯ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনসহ ৭৬৮ জনকে।
এ মামলা নিয়ে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে চাঁদাবাজি ও পূর্বশত্রুতার জেরে হয়রানির অভিযোগসহ নানা অনিয়ম সামনে এসেছে। যে অভিযোগে মামলাটি হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন দুলাল রবিদাসের স্বজনেরাই। ঘটনার সময়, হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা, আসামির তালিকা—সবই ভুয়া।
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহত হওয়ার ঘটনায়ও অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রকৃত আসামি, সন্দিগ্ধ ব্যক্তির পাশাপাশি হয়রানিমূলকভাবেও অনেককে আসামি করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, অন্যত্র থাকা মানুষ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিও রয়েছেন। দুলাল রবিদাসের মতো সাজানো ঘটনার পাশাপাশি কোথাও সত্য ঘটনার মামলায় এ রকম অনেককে আসামি করে ‘মামলা–বাণিজ্য’ হচ্ছে। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস, ভুলবশত আসামি করা হয়েছে মর্মে হলফনামা দিয়ে ও পুলিশ প্রতিবেদনে নির্দোষ দেখানোর প্রতিশ্রুতিসহ নানাভাবে এই বাণিজ্য করার অভিযোগ যেমন আছে, আবার প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েও কাউকে কাউকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “আট মাসে ২৪ নতুন দল, রাজনীতিতে কৌতূহল”
দেশে রাজনীতিতে চলছে দল গঠনের প্রতিযোগিতা। নানা নাম আর প্রতিশ্রুতি নিয়ে আগমন হচ্ছে একের পর এক রাজনৈতিক দলের। আওয়ামী লীগের পতনের পর গত আট মাসে আত্মপ্রকাশ করেছে ২৪টি রাজনৈতিক দল। এ নিয়ে রাজনীতিতে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও প্রতিটি নির্বাচনের আগে এরকম নতুন নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ঘুরেফিরে চেনা কিছু মুখ পুরোনো মঞ্চ ছেড়ে নতুনভাবে সামনে আসেন। এদিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নতুন দলের আগমন ইতিবাচক হলেও প্রচলিত ধারায় দলগুলোর বেশির ভাগের টিকে থাকা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, শুধু ইচ্ছা হলো, আর একটা পলিটিক্যাল দল নিয়ে আসলাম, এটা হলে কিন্তু ঘটনা আগের মতোই হবে। ব্যা
বিগত কয়েক দশক ধরে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দৌড় শুরু হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত বিএনএম-এ যোগ দিয়ে নোঙর মার্কা প্রতীকে অংশ নেন ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। কিন্তু বিপুল ভোটে পরাজিত শুধু নন তার জামানতও বাজেয়াপ্ত হয় এবং তিনি তৃতীয় স্থান পান। বিএনএমে যোগ দিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ ছাড়েন তিনি। সর্বশেষ গত শুক্রবার বিএনএম এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের থেকে পদত্যাগ করে জনতার পার্টি বাংলাদেশে যোগদান করেন তিনি। তাকে পার্টির উপদেষ্টা পদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনি আট বার দল পরিবর্তন করলেন। ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’র মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন শওকত মাহমুদ। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। দলীয় ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে’ লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ শওকত মাহমুদকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ দলের সব পদ থেকে ‘বহিষ্কার’ করা হয়। এর কয়েক দিন আগে বনানীতে জাতীয় ইনসাফ কমিটি (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) নামের এক সংগঠনের ব্যানারে এক অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য এই নতুন দল গঠন করিনি। ২০২৪ সালের যে নির্বাচনটি হয়েছে, সেখানে অনেকে বাধ্য হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে বলতে পারি, আমাকে গোয়েন্দা সংস্থা তুলে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে ৭০টি মামলা, সেই মামলার একটির রায় ঘোষণা করা হবে-এটা ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। ২০১৮ সালে যারা নির্বাচনে গেছে, ২০২৪ সালে নির্বাচনে যাওয়া আর ’১৮ সালে নির্বাচনে যাওয়ার মধ্যে আমরা কোনো পার্থক্য দেখি না। ’২৪ সালের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করি; কিন্তু একইসঙ্গে যারা ’১৮ সালে নির্বাচনে গেছেন এবং নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন- তাদেরও তো দুঃখ প্রকাশ করা উচিত।’
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “মূলধনি যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩০ শতাংশ”
টানা তিন অর্থবছর ধরে দেশে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমছে। চলতি অর্থবছরেও এ খাতের ঋণপত্র (এলসি) হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। তিন বছর আগে এক অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি বা ৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে তা মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য মাত্র ১১৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ শতাংশ কমে যাওয়ার পরও এ আট মাসে ১৬৫ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি আরো ৩০ দশমিক ১০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
ব্যাংক নির্বাহী ও উদ্যোক্তারা বলছেন, যেকোনো শিল্প স্থাপনের মূলে রয়েছে মূলধনি যন্ত্রপাতি। বাংলাদেশের শিল্প খাতের মূলধনি যন্ত্রপাতির বড় অংশই আমদানিনির্ভর। যন্ত্রপাতি আমদানি করেই উদ্যোক্তারা নতুন কারখানা স্থাপন করেন। এর মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। কিন্তু টানা তিন বছর ধরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমছে। তার মানে দেশে নতুন শিল্প স্থাপন বা কর্মসংস্থান বিকাশের পথ ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে।
দেশে নতুন বিনিয়োগের যে খরা চলছে, সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যেও ফুটে উঠেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ অর্জন হয়েছে। যদিও মুদ্রানীতিতে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার যেখানে নেমেছে, সেটি গত ২১ বছরের সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮২ শতাংশের নিচে নেমেছিল।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “গঠনতন্ত্র, নির্বাহী কাউন্সিল ও পলিটিক্যাল কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা”
রাজনীতিতে চমক দেখিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও ইমেজ সংকটে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি। নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দলের নেতাদের মূল্যায়ন, নানা কারণে আস্থা হারাচ্ছে জনমানুষের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কাঠামো সুসংগঠিত করে তৃণমূলে সংগঠন বিস্তারে জোর দিচ্ছে দলটি। এ লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিল গঠন করা হবে। এছাড়া সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ‘পলিটিক্যাল কাউন্সিল’ গঠন করবে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন দলটি। সংগঠন বিস্তারে সারা দেশকে ১৮টি জোনে ভাগ করে শিগগিরই দায়িত্ব দেয়া হবে কেন্দ্রীয় নেতাদের। এদিকে দল গঠনের দুই মাস পর গঠনতন্ত্র প্রণয়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিক কাজ করতে যাচ্ছে এনসিপি। গঠন করা হবে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি। যাদের দায়িত্ব থাকবে দ্রুত সময়ে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা।
শনিবার এনসিপি’র চতুর্থ সাধারণ সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয় দলটির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাংলা মোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে।
সভার একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাহী কাউন্সিল গঠন নিয়ে গত সভায়ও আলোচনা হয়েছিল। তবে শনিবার অনুষ্ঠিত সভা সুনির্দিষ্টভাবে এ বিষয়েই ডাকা হয়। সেখানে নির্বাহী কমিটিতে কারা থাকবে ও কীভাবে থাকবে সেসব নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের ২১৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির পাঁচটি ক্যাটাগরি থেকে নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। সেগুলো হলো- আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, সংগঠক, সমন্বয়ক ও সদস্য। এসব ক্যাটাগরিতে থাকা যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম সদস্য সচিব, সংগঠক, যুগ্ম সমন্বয়ক ও সাধারণ সদস্যরা নির্বাহী কমিটিতে স্থান পাবেন। শুরুতে নির্বাহী কমিটি শীর্ষ নেতাদের প্রস্তাবনার আলোকে সাধারণ সভায় থেকে পাস করানো হবে। কিন্তু সাধারণ সভার সদস্যদের চাওয়ায় সেটি হচ্ছে না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাহী কাউন্সিল গঠন করা হবে।
Leave a Reply