১১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ঢাকার যানজট: কী আছে, কেন আছে, কী করা যাবে

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৩৪:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • 36

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ঢাকায় এখন যে-কোনো মোড়ে তাকালেই সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মোটরসাইকেল আর রিকশা। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, রাজধানীর রাস্তায় চলা সব গাড়ির প্রায় অর্ধেকই এসব ছোট বাহন। এত গাড়ি একসঙ্গে নেমে পড়ায় যানজট বাড়ছে, দুর্ঘটনাও ঘটছে বেশি।

জরিপ অনুযায়ী মোটরসাইকেল ২৭ শতাংশ, রিকশা-ভ্যান ২২ শতাংশ, প্রাইভেট কার ২০ শতাংশ, সিএনজি-অটোরিকশা ১৪ শতাংশ। মাইক্রোবাস-পিকআপ ৭ শতাংশ, ট্রাক ৬ শতাংশ আর বাস আছে মাত্র ৩ শতাংশ। মানে যাত্রী পরিবহনের মূল ভরসা বাসই রাস্তায় সবচেয়ে কম।

গত দশ বছরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। রাইড-শেয়ার অ্যাপ জনপ্রিয় হওয়ার পর অনেকেই বাইক কিনে ভাড়া খাটছেন। অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশাও বেড়েছে; ঢাকায় এমন বাহন প্রায় ১৬ লাখ বলে ধারণা। এসব গাড়ির প্রায় কোনও সরকারি হিসাব নেই, নিয়ন্ত্রণও নেই।

গাড়ির সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ২০২৪ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ১২ হাজারেরও বেশি। শুধু মার্চ ২০২৫ মাসেই নিহতদের ৪১ শতাংশ ছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী।

ঢাকার জমির মোট ৭ শতাংশই রাস্তা; অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুসারে শহরে অন্তত এক-চতুর্থাংশ জায়গা সড়ক হওয়া দরকার। ফলে সামান্য নতুন গাড়ি নামলেই রাস্তায় জট লাগে। সম্প্রতি উড়াল মহাসড়ক চালু হলেও মুখ্য মোড়ে চাপ কমেনি, বরং ওঠানামার জায়গায় নতুন করে জট তৈরি হচ্ছে।

বাসের সংখ্যা কম বলে মানুষ বাধ্য হয়ে ছোট গাড়ি বেছে নিচ্ছে। মেট্রোরেলে প্রতিদিন তিন-সাড়ে তিন লাখ যাত্রী উঠছে-নামছে, কিন্তু তা ঢাকার মোট যাত্রীর অনেক কম অংশ। গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) কাজও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

ছোট বাহন নিয়ে ট্রাফিক-পুলিশ এবং সিটি করপোরেশন সব সময় চাপে থাকে। পার্কিং ব্যবস্থা ঠিক নেই, চালকদের প্রশিক্ষণ কম, আর আইন ঠিকমতো মানে না বলেই বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

সমাধানের পথ স্পষ্ট:

প্রথমত, বাস ও অন্য বড় গণপরিবহন বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশাকে নিবন্ধন ও নির্দিষ্ট রুটে চলার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, ট্রাফিক সিগন্যাল ঠিক রেখে ক্যামেরা ও সফটওয়্যারে রাস্তার তথ্য পরিচালনা করা দরকার। আর সবার আগে দরকার আইন মেনে চলা ও চালকদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।

যদি এসব পদক্ষেপ একসঙ্গে নেওয়া যায়, তাহলে ঢাকাকে আবার চলাফেরার মতো শহর করা সম্ভব। এখনও সময় আছে, শুধু সমন্বিত উদ্যোগ চাই।

ঢাকার যানজট: কী আছে, কেন আছে, কী করা যাবে

০৩:৩৪:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ঢাকায় এখন যে-কোনো মোড়ে তাকালেই সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মোটরসাইকেল আর রিকশা। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, রাজধানীর রাস্তায় চলা সব গাড়ির প্রায় অর্ধেকই এসব ছোট বাহন। এত গাড়ি একসঙ্গে নেমে পড়ায় যানজট বাড়ছে, দুর্ঘটনাও ঘটছে বেশি।

জরিপ অনুযায়ী মোটরসাইকেল ২৭ শতাংশ, রিকশা-ভ্যান ২২ শতাংশ, প্রাইভেট কার ২০ শতাংশ, সিএনজি-অটোরিকশা ১৪ শতাংশ। মাইক্রোবাস-পিকআপ ৭ শতাংশ, ট্রাক ৬ শতাংশ আর বাস আছে মাত্র ৩ শতাংশ। মানে যাত্রী পরিবহনের মূল ভরসা বাসই রাস্তায় সবচেয়ে কম।

গত দশ বছরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। রাইড-শেয়ার অ্যাপ জনপ্রিয় হওয়ার পর অনেকেই বাইক কিনে ভাড়া খাটছেন। অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশাও বেড়েছে; ঢাকায় এমন বাহন প্রায় ১৬ লাখ বলে ধারণা। এসব গাড়ির প্রায় কোনও সরকারি হিসাব নেই, নিয়ন্ত্রণও নেই।

গাড়ির সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ২০২৪ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ১২ হাজারেরও বেশি। শুধু মার্চ ২০২৫ মাসেই নিহতদের ৪১ শতাংশ ছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী।

ঢাকার জমির মোট ৭ শতাংশই রাস্তা; অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুসারে শহরে অন্তত এক-চতুর্থাংশ জায়গা সড়ক হওয়া দরকার। ফলে সামান্য নতুন গাড়ি নামলেই রাস্তায় জট লাগে। সম্প্রতি উড়াল মহাসড়ক চালু হলেও মুখ্য মোড়ে চাপ কমেনি, বরং ওঠানামার জায়গায় নতুন করে জট তৈরি হচ্ছে।

বাসের সংখ্যা কম বলে মানুষ বাধ্য হয়ে ছোট গাড়ি বেছে নিচ্ছে। মেট্রোরেলে প্রতিদিন তিন-সাড়ে তিন লাখ যাত্রী উঠছে-নামছে, কিন্তু তা ঢাকার মোট যাত্রীর অনেক কম অংশ। গাজীপুর-এয়ারপোর্ট বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) কাজও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

ছোট বাহন নিয়ে ট্রাফিক-পুলিশ এবং সিটি করপোরেশন সব সময় চাপে থাকে। পার্কিং ব্যবস্থা ঠিক নেই, চালকদের প্রশিক্ষণ কম, আর আইন ঠিকমতো মানে না বলেই বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

সমাধানের পথ স্পষ্ট:

প্রথমত, বাস ও অন্য বড় গণপরিবহন বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশাকে নিবন্ধন ও নির্দিষ্ট রুটে চলার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, ট্রাফিক সিগন্যাল ঠিক রেখে ক্যামেরা ও সফটওয়্যারে রাস্তার তথ্য পরিচালনা করা দরকার। আর সবার আগে দরকার আইন মেনে চলা ও চালকদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।

যদি এসব পদক্ষেপ একসঙ্গে নেওয়া যায়, তাহলে ঢাকাকে আবার চলাফেরার মতো শহর করা সম্ভব। এখনও সময় আছে, শুধু সমন্বিত উদ্যোগ চাই।