সারাক্ষণ রিপোর্ট
- সিদ্ধান্ত স্থগিত: আইএমএফ–বাংলাদেশ বৈঠক শেষে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে সমঝোতা হয়নি।
- মূল জট: বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু ও রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর রোডম্যাপ নিয়ে মতবিরোধ।
- পূর্ববর্তী পদক্ষেপ: ৬–১৭ এপ্রিল ঢাকা মিশনেও স্টাফ-লেভেল চুক্তি হয়নি; আইএমএফ জুনের মধ্যেই পর্যালোচনা শেষ করতে চায়।
আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা
ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বসন্তসভায় টানা বৈঠকের পর রোববার (২৭ এপ্রিল) ঘোষণা আসে—“ভালো অগ্রগতি হয়েছে, তবে সময়সীমা দিতে পারছি না,” বলেন আইএমএফ এশিয়া-প্রশান্ত বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণ শ্রীনিবাসন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর জানান, সমঝোতা কাছাকাছি হলেও চূড়ান্ত হয়নি।
আইএমএফের প্রধান শর্ত
- বিনিময় হার নমনীয় করা—‘ক্রলিং পেগে’ ৮-১০ শতাংশের বেশি অস্থিরতা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেবল হস্তক্ষেপ করবে।
- রাজস্ব সংস্কার—ট্যাক্স ছাড় কমিয়ে সহজ, স্বচ্ছ ও স্বয়ংক্রিয় করব্যবস্থা গড়া।
- ব্যাংকিং সুশাসন—সম্পদ-গুণগত মূল্যায়ন (AQR) ও ঝুঁকি-ভিত্তিক তদারকি নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের পাল্টা যুক্তি
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, টাকায় বড় ধাক্কা এখনই গ্রহণযোগ্য নয়; বাজার ‘স্থির’ থাকায় আরও সময় দরকার। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, রাজস্ব-বিষয়ক প্রায় সব শর্তেই অগ্রগতি হয়েছে, কেবল বিনিময় হার ইস্যুতে অমিল।
কেন ‘বেইলআউট’ গুরুত্বপূর্ণ
- রিজার্ভ চাপ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২৩-এর শেষ থেকে নিম্নমুখী।
- উচ্চ মূল্যস্ফীতি: মার্চে ৯.৪ শতাংশ, লক্ষ্যমাত্রার (৫–৬ শতাংশ) অনেক ওপরে।
- কমে আসা প্রবৃদ্ধি: অর্থবছর ২৫-এর প্রথমার্ধে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশ, আগের বছরের ৫.১ শতাংশ থেকে উল্লেখযোগ্য পতন।
সামনে কী
আইএমএফ বোর্ডে প্রস্তাব তোলা হবে জুন ২০২৫-এর মধ্যে—ততদিনে স্টাফ-লেভেল চুক্তি পেতে হবে। সমঝোতা হলে চতুর্থ-পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ার কথা; না হলে বাংলাদেশকে বিকল্প অর্থায়নের পথ খুঁজতে হতে পারে।
দৃষ্টিভঙ্গি:
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, কিস্তি বিলম্বিত হলেও আলোচনার দরজা খোলা থাকায় ‘বেইলআউট’ পুরোপুরি ঝুঁকির মুখে পড়েনি; তবে শর্ত পূরণের গতি বাড়ানো জরুরি, নইলে বাজার আস্থা ও রিজার্ভ—দুটোই চাপের মুখে পড়বে।