সারাক্ষণ রিপোর্ট
৮ মে ভোরে, পাকিস্তান পাঞ্জাবের বিভিন্ন বেসামরিক ও ধর্মীয় স্থাপনা, বিশেষ করে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি বড় আক্রমণ চালায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট, বিশেষ করে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও L-70 এয়ার ডিফেন্স গান ব্যবহার করে, এই আক্রমণ সম্পূর্ণভাবে প্রতিহত করে।
১৫ ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল কার্তিক সি শেশাদ্রি জানান, “পাকিস্তান সেনাবাহিনী বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তু না পেয়ে আমাদের সামরিক স্থাপনা ও বেসামরিক, ধর্মীয় স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে বলে আমরা ধারণা করেছিলাম। এর মধ্যে স্বর্ণমন্দির ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করে স্বর্ণমন্দিরের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা বলয় তৈরি করি।”
তিনি আরও বলেন, “৮ মে ভোরে, অন্ধকারে, পাকিস্তান ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি বড় আক্রমণ চালায়। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিলাম এবং আমাদের সাহসী ও সজাগ বিমান প্রতিরক্ষা গনাররা পাকিস্তানের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়। আমাদের পবিত্র স্বর্ণমন্দিরে একটি আঁচড়ও লাগতে দেয়নি।”
পাহালগাম হামলা ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
২২ এপ্রিল, জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে একটি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিকও ছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায়, ভারত ৭ মে “অপারেশন সিন্দুর” চালায়, যার মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এই অভিযানে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়, যার মধ্যে ৭টি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়। লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল মুরিদকেতে লস্কর-ই-তইবা ও বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তর।
ভারতীয় সেনাবাহিনী স্পষ্ট করে জানায়, এই হামলায় কোনো পাকিস্তানি সামরিক বা বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রতিশোধমূলক হামলা ও ভারতের প্রস্তুতি
ভারতের এই নির্ভুল হামলার পর, পাকিস্তান প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পূর্বাভাস দেয়। যদিও প্রাথমিকভাবে সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করা হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, পাকিস্তান কৌশল পরিবর্তন করে সরাসরি স্বর্ণমন্দিরকে লক্ষ্য করে কামিকাজে ড্রোন, ভূমি থেকে ভূমি ও আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
মাঠ পর্যায়ে থাকা এক সেনা সদস্য জানান, “কামিকাজে ড্রোন, ভূমি থেকে ভূমি ও আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি স্বর্ণমন্দিরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়। তবে আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এই আক্রমণ প্রতিহত করে।”
সংঘাতের অবসান ও যুদ্ধবিরতি
ভারতের নির্ভুল প্রতিক্রিয়া ও পাকিস্তানের প্রতিশোধমূলক হামলা প্রতিহত করার পর, উভয় দেশ ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
সংক্ষেপে মূল তথ্য:
· ৮ মে পাকিস্তান স্বর্ণমন্দিরসহ পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।
· ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট এই হামলা সম্পূর্ণভাবে প্রতিহত করে।
· ২২ এপ্রিল পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন।
· ৭ মে ভারত “অপারেশন সিন্দুর” চালিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালায়।
· ১০ মে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
এই ঘটনাগুলো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও দক্ষতা এই সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত হলেও, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ ও সহযোগিতা জরুরি।