যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একটি অভ্যন্তরীণ সার্কুলার জারির মাধ্যমে সমস্ত প্রধান কনস্যুলার অফিসগুলোকে জানিয়েছে যে, নতুন এফ, এম ও জে শ্রেণীর ছাত্র ও বিনিময় ভিসা আবেদনকারীদের জন্য অবিলম্বে নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণ বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে বুক করা অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলি বর্তমান নির্দেশনার আওতায় সম্পন্ন হবে।
ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিতের কারণ
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে যে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বর্তমানে ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক মিডিয়া যাচাই পদ্ধতি পুনঃপর্যালোচনা করছে। এই মূল্যায়ন শেষে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হবে, এবং তখন থেকেই সামাজিক মিডিয়া প্রোফাইলের আরও বিস্তৃত যাচাইয়ের ভিত্তিতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পুনরায় চালু হবে।
সামাজিক মিডিয়া যাচাই প্রসারিত
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সার্কুলারে বলেছেন, “বিদেশি ছাত্র ও বিনিময় ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক মিডিয়া যাচাই সম্প্রসারিত করার জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করা হবে।” এ অনুযায়ী, কনস্যুলার সেকশনগুলোকে তাদের কাজের পরিধি, প্রক্রিয়া ও মানবসম্পদের বরাদ্দ পুনঃসংগঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কনস্যুলার সেকশনের দায়িত্ব
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে যে ইতিমধ্যে নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই, তবে ভবিষ্যতের অগ্রিম বুকিং অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি, ইউএস সিটিজেন সেবা, ইমিগ্র্যান্ট ভিসা ও জালিয়াতি প্রতিরোধ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও বিরোধিতা
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ কয়েকশ প্রতিবাদকারী ক্যাম্পাসে দাবি তুলেছেন যে বিদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অকারণে টার্গেট হচ্ছেন। প্রশাসনের সমালোচকরা এটিকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখছেন।
বিধিনিষেধ ও বিতর্ক
প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে কিছু আন্তর্জাতিক ছাত্র-শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনি সমর্থন ও গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের ভূমিকা সমালোচনা করার কারণে ভিসা বাতিল বা ডিপোর্টেশনের সম্মুখীন হচ্ছেন। সমালোচকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে গ্যারান্টীকৃত মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন করার সমতুল্য।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক ভর্তি সংখ্যা সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল, যেখানে প্রায় ৬,৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ভর্তি সংখ্যার প্রায় ২৭ শতাংশ। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দৃঢ়তা ও বৈশ্বিক মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
সমাপনী ভাবনা
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতির অংশ হিসাবে এই নতুন নির্দেশনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আবারও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সামাজিক মিডিয়া যাচাই কার্যকারিতার দাবি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনে বিতর্কের মধ্যেই নির্দেশনাগুলো সচল থাকবে।