সপ্তম পরিচ্ছেদ
এমন সময় চুবুক কাছে এসে দাঁড়ালেন।
বললুম, ‘বসুন। চা খাবেন নাকি একটু?’
‘সময় নেই। বরিস, যাবে নাকি আমার সঙ্গে? কও।’
‘হ্যাঁ,’ সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলুম আমি। কোথায় তিনি আমায় সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছেন তা জানতে পর্যন্ত চাইলুম না।
‘তাইলে, জলদি চা-টুক শেষ কর। আমাদের জন্যি গাড়ি দাঁড়িয়ে আচে।’
‘গাড়ি কী জন্যে, চুবুক?’
আমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে তখন চুবুক বললেন যে আমাদের বাহিনী তার পরদিন ভোরে যাত্রা শুরু করে ওই জায়গাটা থেকে অল্প খানিক দূরে বেগিচেভের খনি-মজুরদের যে সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধ করছে তার সঙ্গে মিলতে যাবে। তারপর ওদের সঙ্গে মিলিত হবার পর একসঙ্গে আমরা লাল ফৌজের প্রধান অংশের সঙ্গে মেলবার জন্যে এগোতে থাকব।
কিন্তু এটা করতে গেলে আমাদের ওই তিনজন সাংঘাতিক আহত লোককে সঙ্গে করে বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না, কারণ এই যাত্রায় আমাদের শ্বেতরক্ষী আর জার্মানদের দখল-করা এলাকা পার হয়ে যেতে হবে।
আমরা তখন যেখানে ছিলুম সেখান থেকে কাছেই ছিল একটা মৌমাছিচাষের বাগান। জায়গাটা অজ পাঁড়া-গা, লোক-চলাচলের এলাকা থেকে একটু দূরে। তাছাড়া মৌমাছি-পালক লোকটি ছিল লাল ফৌজের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন। আহতরা সেরে না-ওঠা পর্যন্ত সে তাদের আশ্রয় দিতে রাজী হয়েছিল। চুবুক তখন ওই বাগান থেকেই একটা একঘোড়ায় টানা গাড়ি নিয়ে আসছিলেন। জানালেন, অন্ধকার থাকতে-থাকতেই আহতদের সরিয়ে ফেলতে হবে।
‘আর কেউ আমাদের সঙ্গে যাচ্ছে?’
‘না। শুধু আমরা দুজনা। আমি একাই সামলাতে পারতাম, তবে ঘোড়াটা একটুক বেয়াড়া বলেই মুস্কিল। আমাদের একজনরে ঘোড়ার লাগাম ধরে ওরে চালাতি হবে, অপর জন জখমি কমরেডদের দেখাশোনা করবে। তা, তুমি যাবে নাকি?’