০৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
আলোচনার পরিবর্তে কেন শিক্ষকদের ওপর সহিংসতা — প্রশ্ন জিএম কাদেরের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের ৯ রানে জয়; ওয়েস্ট ইনডিজকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল কিউইরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল তুরস্ক নাটোরে পুলিশের হাত থেকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীকে ছিনিয়ে নিল জনতা বেতন কাঠামো উন্নয়ন ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত রাজশাহীতে তাপমাত্রা নেমে ১৬.৫ ডিগ্রিতে: শীতের আগমনী বার্তা মোহাম্মদপুরে গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি যানবাহন শীতের আরাম নিশ্চিত করুন: বাংলাদেশে কোন গিজারগুলো সেরা ঢাকা-খুলনাসহ ১৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ ব্যাংকঅ্যাশিওরেন্স: শোকাহত পরিবারের পাশে দ্রুত সহায়তা

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৬৪)

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘আরে, চুবুক, নিশ্চয়ই যাব। আপনার সঙ্গে আমি যে-কোনো জায়গায় যেতে প্রস্তুত। আচ্ছা, ওখান থেকে আমরা কোথায় যাব? আবার কি ফিরে আসব এখানে?’

‘না। ওখেন থেকে নদী পার হয়ে সোজা আমাদের বাহিনীর সঙ্গে মিলতে যাব।

চল, তাইলে যাওয়া যাক,’ ঘোড়ার মাথাটা যেদিকে ফেরানো সেদিকে যেতে-যেতে চুবুক বললেন। ‘দেখো, বাপু, আমার রাইফেলটা পড়ে না যায়,’ অন্ধকারের মধ্যে থেকে ওঁর গলার আওয়াজ ভেসে এল।

অল্প একটু ঝাঁকুনি দিয়ে রওনা হল ঘোড়ার গাড়িটা। গাড়ির চাকার ঘষা লেগে একটা ঝোপ থেকে একফোঁটা শিশির ছিটকে এসে আমার মুখে লাগল। আমাদের বাহিনী যাত্রা শুরু করার তোড়জোড়ের সময় আগুনের যে কুণ্ডগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিচ্ছিল দেখতে দেখতে সেগুলো চোখের আড়াল হয়ে গেল।

রাস্তাটা ছিল খুবই খারাপ। গাড়ির চাকার গভীর দাগ আর কাদা-ভরতি গর্তে বোঝাই, আর আশপাশের গাছের গাঁটওয়ালা শেকড়বাকড় রাস্তার ওপর দিয়ে যাওয়ায় অসম্ভব এবড়োখেবড়ো। চারিদিক এত অন্ধকার যে গাড়ির পাশ থেকেই ঘোড়াটাকে কিংবা চুবুককে দেখা যাচ্ছিল না। আহত ছেলে তিনটে একবোঝা টাটকা খড়ের ওপর শুয়ে চুপচাপ করে চলছিল।

গাড়িটার পেছন-পেছন হে’টে আসছিলুম আমি। একহাতে গাড়ির পেছনদিকটা ধরে, আরেক হাতে রাইফেলটা শক্ত করে চেপে রেখে। হোঁচট খেয়ে পড়ার হাত থেকে কোনোরকমে নিজেকে সামলাতে-সামলাতে আসছিলুম। চারিদিক নিস্তব্ধ। কাছে কোথাও একটামাত্র চাতকপাখি একঘেয়ে করুণ সুরে আর্তনাদ না-করে চললে আমাদের চারপাশের অন্ধকারটাকে একেবারে প্রাণহীন বলে মনে হত।

আমরা সকলেও চুপচাপ যাচ্ছিলুম। কেবল গাড়ির চাকাগুলো যখন কোনো গর্তের মধ্যে পড়ছিল কিংবা গাছের শেকড়ে ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে উঠছিল একমাত্র তখনই আহতদের মধ্যে একজন, তিমোর্কিন, অস্পষ্টভাবে একটু-আধটু কাতুরে উঠছিল।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

আলোচনার পরিবর্তে কেন শিক্ষকদের ওপর সহিংসতা — প্রশ্ন জিএম কাদেরের

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৬৪)

০৮:০০:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

সপ্তম পরিচ্ছেদ

‘আরে, চুবুক, নিশ্চয়ই যাব। আপনার সঙ্গে আমি যে-কোনো জায়গায় যেতে প্রস্তুত। আচ্ছা, ওখান থেকে আমরা কোথায় যাব? আবার কি ফিরে আসব এখানে?’

‘না। ওখেন থেকে নদী পার হয়ে সোজা আমাদের বাহিনীর সঙ্গে মিলতে যাব।

চল, তাইলে যাওয়া যাক,’ ঘোড়ার মাথাটা যেদিকে ফেরানো সেদিকে যেতে-যেতে চুবুক বললেন। ‘দেখো, বাপু, আমার রাইফেলটা পড়ে না যায়,’ অন্ধকারের মধ্যে থেকে ওঁর গলার আওয়াজ ভেসে এল।

অল্প একটু ঝাঁকুনি দিয়ে রওনা হল ঘোড়ার গাড়িটা। গাড়ির চাকার ঘষা লেগে একটা ঝোপ থেকে একফোঁটা শিশির ছিটকে এসে আমার মুখে লাগল। আমাদের বাহিনী যাত্রা শুরু করার তোড়জোড়ের সময় আগুনের যে কুণ্ডগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিচ্ছিল দেখতে দেখতে সেগুলো চোখের আড়াল হয়ে গেল।

রাস্তাটা ছিল খুবই খারাপ। গাড়ির চাকার গভীর দাগ আর কাদা-ভরতি গর্তে বোঝাই, আর আশপাশের গাছের গাঁটওয়ালা শেকড়বাকড় রাস্তার ওপর দিয়ে যাওয়ায় অসম্ভব এবড়োখেবড়ো। চারিদিক এত অন্ধকার যে গাড়ির পাশ থেকেই ঘোড়াটাকে কিংবা চুবুককে দেখা যাচ্ছিল না। আহত ছেলে তিনটে একবোঝা টাটকা খড়ের ওপর শুয়ে চুপচাপ করে চলছিল।

গাড়িটার পেছন-পেছন হে’টে আসছিলুম আমি। একহাতে গাড়ির পেছনদিকটা ধরে, আরেক হাতে রাইফেলটা শক্ত করে চেপে রেখে। হোঁচট খেয়ে পড়ার হাত থেকে কোনোরকমে নিজেকে সামলাতে-সামলাতে আসছিলুম। চারিদিক নিস্তব্ধ। কাছে কোথাও একটামাত্র চাতকপাখি একঘেয়ে করুণ সুরে আর্তনাদ না-করে চললে আমাদের চারপাশের অন্ধকারটাকে একেবারে প্রাণহীন বলে মনে হত।

আমরা সকলেও চুপচাপ যাচ্ছিলুম। কেবল গাড়ির চাকাগুলো যখন কোনো গর্তের মধ্যে পড়ছিল কিংবা গাছের শেকড়ে ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে উঠছিল একমাত্র তখনই আহতদের মধ্যে একজন, তিমোর্কিন, অস্পষ্টভাবে একটু-আধটু কাতুরে উঠছিল।