বন বড়ই চঞ্চলা
বৃষ্টি নামলে সে পাখিদের ডানাকে ঢেকে
রাখার জন্যে সব পাতা মেলে ধরে না।
অনেক পাখি ভিজে চুপসে যায়
আবার বৃষ্টিতে মাতোয়ারা হয় ঘাসের বুকে
পায়ে চলা, জলে সাঁতার কাটা পাখিরা।
বনে মাঝে মাঝে আগুন লাগে
সে কবে থেকে তার হিসেব নেই –
সেই দাবানলে ভালুক নিজের ছানা হারিয়ে ফেলে
বাঘের ছানা বুকে নিয়েই চমকে ওঠে।
তারপরে ভালুক কী করে – তা রুদ্রের ভয়ংকরে দেখা যায় না।
বাঘের ছানা কখনও কখনও বেঁচে যায়
ভালুকের বুকের সাহায্য পেয়ে।
আবার নিস্তরঙ্গ বনে বুনো ঝড় এলে
কখনও কখনও সিংহ, বাঘ অচ্যুত হয়ে ওঠে।
সিংহ গোপন পাহাড়ের চূড়ায় আশ্রয় নেয় –
বাঘেরা উঁচু কোন গাছের পাতার নিচে
চুপটি করে থাকে।
তখন বনের সকল দুর্বল প্রাণী খাবারের অধিকার
পায় হায়েনা ও শিয়ালেরা।
তারা একের পর এক মাংস জড়ো করে-
সিংহ দূর পাহাড় থেকে “সিংহনিরীক্ষণে” নিশ্চল
দৃষ্টি ফেলে আর দেখে –
বনে যতই রাত নামে ততই
হায়েনা আর শিয়ালেরা মাংস নিয়ে
অশ্লীল, কুৎসিত দাঁত বের করে
একে অপরকে ধাওয়া করতে থাকে।
বনের সাত রঙা পাখিটি ভোর হলে
ওদের রক্তাক্ত দাঁত আর লোভের চিৎকার
শুনে কেঁদে ওঠে –
বলে আহা, বনটা গেল –
সাত রঙা পাখি তার স্মৃতিতে ফিরে
যায় – মনে পড়ে সিংহের গর্জনে কেঁপে উঠত বন
অথচ কী নীরব ছিল তার প্রয়োজনীয় খাদ্যটুকু খাওয়া!
সকালের আলোগুলো আরও ম্লান হয় – হায়েনা
ও শিয়ালের চিৎকারে।
বুনো কুকুর আর শুয়োরেরা তখন মাংসের
প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে।
সাত রঙা পাখি ভাবে –
আহা, আবার কবে শান্ত
আধারভাঙা বনে সে গাইবে গান!