১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

উনসানে সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট উদ্বোধন: পর্যটনে বাজি ধরছে উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়া জুলাইয়ের ১ তারিখে উনসানের উপকূলীয় শহরে একটি নতুন সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট চালু করতে যাচ্ছে। এই শহরেই শৈশবের একটি অংশ কাটিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। রিসোর্টটির নাম ‘উনসান কালমা কোস্টাল ট্যুরিস্ট জোন’। এটি ২০১৯ সালে চালুর কথা থাকলেও নির্মাণ বিলম্ব ও মহামারির কারণে প্রকল্পটি পিছিয়ে যায়।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম KCNA-এর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি প্রতি সময়ে প্রায় ২০,০০০ দর্শনার্থী গ্রহণে সক্ষম। এখানে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পানির পার্ক, শপিং মলসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তবে এসব দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

২৪ জুন রিসোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেয়ে কিম জু অ্যা এবং স্ত্রী রি সল জু। দীর্ঘদিন পর রি সল জু’র জনসমক্ষে এটি ছিল প্রথম উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মাতসেগোরা এবং রাশিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন, যা পিয়ংইয়ং-মস্কো সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে নির্দেশ করে।

আপাতত শুধু ঘরোয়া ও রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত

প্রাথমিকভাবে রিসোর্টটি কেবল উত্তর কোরিয়ার নাগরিক এবং রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য খোলা থাকবে। যদিও ২০২৪ সালের শুরুতে দেশটি স্বল্প সময়ের জন্য পশ্চিমা পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই অনুমতি বাতিল করা হয়।

পর্যটন সংস্থাগুলোর মতে, পশ্চিমা পর্যটকদের কাছে উনসানের আবেদন সীমিত হতে পারে। ইয়াং পাইওনিয়ার ট্যুরসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়ান বিয়ার্ড বলেন, “পিয়ংইয়ং, ডিমিলিটারাইজড জোন (DMZ), এবং উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট স্থাপত্যের স্থানগুলোই এখনো আন্তর্জাতিক পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।”

সফট পাওয়ারের কৌশল হিসেবেও বিবেচিত

উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে তার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে। এর মধ্যে দেশটি সামরিক বাহিনী, কিম পরিবারের ব্যক্তিপূজামূলক স্থাপত্য এবং পর্যটন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। নতুন এই রিসোর্টও সেই কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উরি ট্যুরসের পরিচালক এলিয়ট ডেভিসের মতে, উত্তর কোরিয়ার মতো ভিন্নধর্মী গন্তব্যের প্রতি এক শ্রেণির পর্যটকের আগ্রহ আছে। “একটি পরিচিত জিনিস—যেমন সৈকত রিসোর্ট—যখন এমন একটি অনন্য সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়, তখন তা বিশেষ অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে,” তিনি বলেন।

রিসোর্টের উদ্বোধনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে পাঁচ বছর বন্ধ থাকা সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও আবার শুরু হয়েছে। এই যৌথ উদ্যোগগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উনসানে সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট উদ্বোধন: পর্যটনে বাজি ধরছে উত্তর কোরিয়া

০৭:০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

উত্তর কোরিয়া জুলাইয়ের ১ তারিখে উনসানের উপকূলীয় শহরে একটি নতুন সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট চালু করতে যাচ্ছে। এই শহরেই শৈশবের একটি অংশ কাটিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। রিসোর্টটির নাম ‘উনসান কালমা কোস্টাল ট্যুরিস্ট জোন’। এটি ২০১৯ সালে চালুর কথা থাকলেও নির্মাণ বিলম্ব ও মহামারির কারণে প্রকল্পটি পিছিয়ে যায়।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম KCNA-এর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি প্রতি সময়ে প্রায় ২০,০০০ দর্শনার্থী গ্রহণে সক্ষম। এখানে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পানির পার্ক, শপিং মলসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তবে এসব দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

২৪ জুন রিসোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উন উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মেয়ে কিম জু অ্যা এবং স্ত্রী রি সল জু। দীর্ঘদিন পর রি সল জু’র জনসমক্ষে এটি ছিল প্রথম উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মাতসেগোরা এবং রাশিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন, যা পিয়ংইয়ং-মস্কো সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে নির্দেশ করে।

আপাতত শুধু ঘরোয়া ও রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত

প্রাথমিকভাবে রিসোর্টটি কেবল উত্তর কোরিয়ার নাগরিক এবং রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য খোলা থাকবে। যদিও ২০২৪ সালের শুরুতে দেশটি স্বল্প সময়ের জন্য পশ্চিমা পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই অনুমতি বাতিল করা হয়।

পর্যটন সংস্থাগুলোর মতে, পশ্চিমা পর্যটকদের কাছে উনসানের আবেদন সীমিত হতে পারে। ইয়াং পাইওনিয়ার ট্যুরসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোয়ান বিয়ার্ড বলেন, “পিয়ংইয়ং, ডিমিলিটারাইজড জোন (DMZ), এবং উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট স্থাপত্যের স্থানগুলোই এখনো আন্তর্জাতিক পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।”

সফট পাওয়ারের কৌশল হিসেবেও বিবেচিত

উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে তার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে। এর মধ্যে দেশটি সামরিক বাহিনী, কিম পরিবারের ব্যক্তিপূজামূলক স্থাপত্য এবং পর্যটন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। নতুন এই রিসোর্টও সেই কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উরি ট্যুরসের পরিচালক এলিয়ট ডেভিসের মতে, উত্তর কোরিয়ার মতো ভিন্নধর্মী গন্তব্যের প্রতি এক শ্রেণির পর্যটকের আগ্রহ আছে। “একটি পরিচিত জিনিস—যেমন সৈকত রিসোর্ট—যখন এমন একটি অনন্য সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়, তখন তা বিশেষ অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে,” তিনি বলেন।

রিসোর্টের উদ্বোধনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে পাঁচ বছর বন্ধ থাকা সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলও আবার শুরু হয়েছে। এই যৌথ উদ্যোগগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।